বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ: মেধাক্রম লঙ্ঘনের অভিযোগ

  •    
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ১৮:৩৩

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক নিয়োগে মেধাক্রম লঙ্ঘনের অভিযোগের কিছু কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে। প্রার্থীরা বলছেন, মেধাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ না করেই ফল প্রকাশ করেছে এনটিআরসিএ।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফলাফলে মেধাক্রম লঙ্ঘনের অভিযোগে উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশবঞ্চিত নিয়োগপ্রত্যাশীরা মেধাক্রম লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে লিখিত আবেদন জমা দিচ্ছেন।

এখন পর্যন্ত অভিযোগকারীর সংখ্যা দুই শতাধিক। চলমান লকডাউনের পর পুরোদমে অফিস চালু হলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সুপারিশবঞ্চিত নিয়োগপ্রত্যাশীরা।

মেধাক্রম লঙ্ঘনের অভিযোগের কিছু কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতেও। প্রার্থীরা বলছেন, মেধাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ না করেই ফল প্রকাশ করেছে এনটিআরসিএ।

১৪তম ব্যাচের কৃষি শিক্ষায় নিবন্ধনধারী যশোরের তহমিনা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সম্মিলিত মেধা তালিকায় আমার মেধাক্রম ৩৪০ এবং সিরিয়াল ৪০৪। আমি সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য আবেদন করে একটিতেও সুপারিশপ্রাপ্ত হইনি। কিন্তু আমার ৩ নং পছন্দের প্রতিষ্ঠান (যশোর) কেকেআর হাই স্কুলে যিনি সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তার মেধাক্রম ৪৩৯ এবং সিরিয়াল ৫১৭।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া খলসি আদর্শ গার্লস হাইস্কুলে যিনি সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তার মেধাক্রম ৪৩৯ এবং সিরিয়াল ৫৭০। যেখানে নিয়ম অনুযায়ী দুটি প্রতিষ্ঠানে আমার সুপারিশ পাওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি।’

একই অভিযোগ ১২তম ব্যাচে ইংরেজি বিষয়ে নিবন্ধনধারী নিখিল চন্দ্র গোলদারেরও। তিনি বলেন, ‘সম্মিলিত মেধাতালিকায় আমার মেধাক্রম ৩০৮৩ এবং সিরিয়াল ৩৩৯৫। আমি মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার শশীকর উচ্চ বিদ্যালয়ে আবেদন করে নিয়োগ পাইনি। কিন্তু যে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তার মেধাক্রম ৪৬৬৫ এবং সিরিয়াল ৬০৪৪।’

বাগেরহাটের মোসা. আজমিরা খাতুনেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘আমি ১৫তম ব্যাচের ব্যবসায় শিক্ষায় একজন নিবন্ধনধারী। মোট আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছি। এই আটটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনোটিতে মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি।’

শিক্ষক নিয়োগে মেধাক্রম লঙ্ঘনের একটি অভিযোগ

আজমিরা বলেন, ‘আমার মেধাক্রম ৩৭১। আমার প্রথম চয়েস (বাগেরহাটের) বরনি সাইরাবাদ এমএল হাই স্কুলে যিনি নিয়োগ পেয়েছেন তার মেধাক্রম ২৩৪০। এ ছাড়া আমার আবেদন করা অন্য সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মেধাক্রম যথাক্রমে ২৩৪০, ৯৫৫, ২৩৪০, ১৫১৪, ৭০১, ২৩৪০ ও ১৫১৪।’

১৪তম ব্যাচের ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের নিবন্ধনধারী টাঙ্গাইলের সাইফুল ইসলাম জানান তিনিও মোট আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন। তার অভিযোগ, আটটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনোটিতেই মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেধাক্রম ৩৫৩৩ ও সিরিয়াল ৩৮১৬। কিন্তু আমার আবেদন করা প্রথম পছন্দ (টাঙ্গাইলের) লতিফপুর একতা উচ্চ বিদ্যালয়ে যিনি নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন, তার মেধাক্রম ৪৯৭৬। আর বাকি সাতটিতেও যারা নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন, তাদের মেধাক্রম যথাক্রমে ৪৩১৮, ৪৭২৯, ৪৭২৯, ৪৭২৯, ৪০০৯, ৪২৯৯ ও ৪৩১৮।’

নিউজবাংলার হাতে মেধাক্রম লঙ্ঘনের এমন অর্ধশতাধিক অভিযোগ এসেছে। সুপারিশবঞ্চিত এসব নিয়োগপ্রত্যাশীরা ফলাফল পুনর্বিবেচনা করে আবার নির্ভুলভাবে প্রকাশের আবেদন করেছেন।

তবে এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

তারা বলছে, এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ফল প্রকাশের যথাযথ প্রক্রিয়া না বুঝেই প্রার্থীরা এ রকম অভিযোগ করছেন। তারপরও যদি মেধাক্রম লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে তা তদন্ত করে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এনটিআরসিএর তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশের পর বেশ কিছু অভিযোগ প্রার্থীরা করছেন। সেই অভিযোগগুলোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিব মহোদয়কে লিখিত আকারে তথ্যপ্রমাণসহ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে অভিযোগগুলো সত্য নয়। প্রার্থীরা ফল প্রকাশের সঠিক প্রক্রিয়া না জেনেই অভিযোগ করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি এনটিআরসিএর নিয়োগ-প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছ। এরপরেও যারা অভিযোগ করছেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ লকডাউন শেষে অভিযোগগুলো এনটিআরসিএতে জমা দিন অথবা ই-মেইল করুন। আমরা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে করব এবং সত্যতা পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কেন তারা নিয়োগের সুপারিশ পাননি, সে বিষয়টিও তাকে জানিয়ে দেবো।’

এ বিভাগের আরো খবর