গ্রামটি মেতে থাকত মানুষের কোলাহলে। ছিল হিন্দু-মুসলমানের সহাবস্থান। উৎসব পালা-পার্বণ মাতিয়ে রাখত সারা বছর।
জমজমাট সেই গ্রাম এখন জনমানবশূন্য।
সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটানো সেই গ্রামে উৎসব তো দূরের কথা, এখন কোনো ঘরবাড়ির বালাই নেই। খাঁখাঁ করছে চারদিক। একসময়ের সমৃদ্ধ জনপদের চিহ্ন হিসেবে টিকে আছে পুরোনো আমলের ঘরবাড়ির ইটের টুকরা, উচুঁ ভিটা আর তিনটি পুকুর।
এটি বাংলাদেশেরই একটি গ্রাম। ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটারের দেশ যখন জনসংখ্যার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন পুরো একটি গ্রাম যুগের পর যুগ পড়ে আছে জনশূন্য।
মানুষের কোলাহলহীন সেই গ্রামের নাম মঙ্গলপুর। অবস্থান ঝিনাইদহের কোঁটচাদপুর উপজেলায়।
মঙ্গলপুরে কী এমন অমঙ্গল নেমে এসেছিল? কেন দলে দলে গ্রামবাসী ছেড়ে গেলেন তাদের প্রিয় বসতভিটা?
গ্রাম ছেড়ে পরিবারগুলো গেল কোথায়? পরিত্যক্ত ভিটেমাটি-জমিজিরাত এখন কারা ভোগ করছেন?
এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। গ্রামটিকে যুগের পর যুগ ঘিরে থাকা রহস্যের জাল ভেদ করার চেষ্টা করেছেন প্রতিবেদক।রাজধানী ঢাকা থেকে সড়কপথে ২০০ কিলোমিটার দূরত্বের জেলা ঝিনাইদহ। ঝিনাইদহ সদর থেকে কোটচাঁদপুর উপজেলাটির দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। এই উপজেলারই একটি গ্রাম মঙ্গলপুর।
গরুর গাড়িতে চেপে গ্রামে আসছেন কৃষক। ছবি: নিউজবাংলাকোটচাঁদপুর উপজেলা থেকে এলাঙ্গী ইউনিয়নে যাওয়ার বাহন ব্যাটারিচালিত ভ্যান-রিকশা।
এলাঙ্গী ইউনিয়নের নয়টি গ্রামের একটি মঙ্গলপুর। আশপাশের লোকজনের কাছে মঙ্গলপুর নিয়ে জানার জন্য নামতে হলো বলাবাড়িয়া গ্রামের বাজারে। বলাবাড়িয়া গ্রামটি ঠিক মঙ্গলপুর ঘেঁষেই।
এক চায়ের দোকানে বসে আছেন বেশ কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ। কেউ চা খাচ্ছেন, কেউবা মেতেছেন গল্পে।
মঙ্গলপুর সম্পর্কে জানতে চাইলেই সবার উত্তর... ওটা তো মানুষ ছাড়া গ্রাম। জনশূন্য। আকবর আলী নামে একজন বলেন, বাপদাদার আমলে সেখানে মানুষ ছিল, এখন কেউ নেই।
আকবর আলীর কথা কেড়ে নিয়ে ইছহাক মণ্ডল নামে আরেক বৃদ্ধ বলেন, ‘মঙ্গলপুরে একসময়ে অনেক মানুষ বাস করত। তবে আমরা যখন ছোট তখন মাত্র একজন টিকে ছিল পুরো গ্রামে। সে মুক্তিযুদ্ধের আগের কথা।’
মঙ্গলপুরে সবশেষ যে মানুষটির থাকার কথা জানা যায়, তার নাম বেদে ঠাকুর। সেই বেদে ঠাকুর খুন হন। তার মরদেহ গরুর গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখেছেন ইছহাক মণ্ডল।
৮০ বছরের বৃদ্ধ আকবর আলী ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করেন। তিনি মঙ্গলপুরে বড় বড় আমগাছ, নারকেলগাছ, লিচুগাছ দেখেছেন। এসব গাছের ফলও তিনি খেয়েছেন। বেদে ঠাকুর খুন হওয়ার পর একে একে কাটা পড়ে সেসব গাছ।
৮২ বছরের সবুর মোল্লা জানালেন, মঙ্গলপুর বিরাট বড় গ্রাম ছিল। বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষের বসত ছিল সেখানে। একবার গ্রামে কলেরা ছড়িয়ে পড়ায় প্রচুর মানুষ মারা যান।
গ্রামটির মানবশূন্য হওয়ার পেছনে আরও বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে নিউজবাংলা।
বলাবাড়িয়া বাজার থেকে কয়েক শ মিটার সামনে সাইনবোর্ড বাজার। সেখানে চা খেতে খেতে কথা হয় কাজী আব্দুর রহমানের সঙ্গে। ৮০ বছর বয়সী কাজী আব্দুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয়ভাবে কবিরাজি পেশায় জড়িত।
আব্দুর রহমান জানালেন, মঙ্গলপুরে ঠাকুর সম্প্রদায়ের বেশ প্রভাব ছিল গ্রামটিতে। হাওলা ঠাকুর, লেটো ঠাকুরের বংশধররা বসবাস করতেন। হঠাৎ গ্রামে অমঙ্গলের ঘটনা ঘটতে থাকে। এরপর একে একে সবাই গ্রাম ছেড়ে যান।
মঙ্গলপুর নিয়ে আরও কিছু তথ্য দিলেন আব্দুর রহমান। তার কথায়, মানুষ না থাকায় এখন মঙ্গলপুরজুড়ে জিন-পরিদের বসবাস!
মঙ্গলপুর থেকে মানুষজন উধাও হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত দুটি কারণ জানা গেছে। একটি কলেরা, আরেকটি অমঙ্গলের ছায়া।
মঙ্গলপুর গ্রামের একমাত্র ইটের সড়ক। ছবি: নিউজবাংলামঙ্গলপুরের পশ্চিম পাশের গ্রামের নাম বাগডাঙ্গা। সেখানে গিয়ে কথা হয় সবিতা রানীর সঙ্গে। মঙ্গলপুর সম্পর্কে নানান তথ্য জানেন মধ্যবয়সী সবিতা। গল্পে গল্পে তিনি বলেন, মঙ্গলপুরে নাকি মঙ্গল নামে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। সে কারণেই গ্রামের এমন নাম।
সাবিতা রানী জানান, ওই গ্রামের মঙ্গলরা ছিলেন খুব রক্ষণশীল। মঙ্গল নারীদের চেহারাও কেউ দেখতে পেতেন না। সব সময় তারা থাকতেন ঘরের ভেতর।
তবে একদিন ঘটে অঘটন। মুসলিম এক যুবক পুকুরে গোসলরত এক মঙ্গল নারীকে দেখে ফেলন।
সে ঘটনা মঙ্গল সমাজে ব্যাপক আলোচিত হয়। এরপর রাতারাতি এলাকা ছেড়ে অজানা গন্তব্যে চলে যায় মঙ্গল পরিবারগুলো।
সবিতা রানীর ভাষায়, এরপর একে একে অমঙ্গলের ঘটনা ঘটতে থাকে মঙ্গলপুর গ্রামে। কিছুকালের মধ্যেই গ্রামটি হয়ে পড়ে জনমানবশূন্য।
সবিতার সঙ্গে কথা বলতে বলতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। মঙ্গলপুরে এখনও ঢোকা হয়নি।
বলাবাড়িয়া গ্রামের কাজী আব্দুর রহমান কবিরাজের কথায়, মঙ্গলপুরে এখন জিন-পরির রাজত্ব। তাই রাতের বেলায় সেখানে যাওয়ার আগে দিনের আলোয় একবার ঘুরে দেখা উচিত। এরপর রাতেও অনুসন্ধান চালাবেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
পরদিন সকালেই কোটচাঁদপুর থেকে মঙ্গলপুরের উদ্দেশে শুরু হয় যাত্রা। কোটচাঁদপুর থেকে যশোরের চৌগাছা উপজেলার দিকে যাওয়া রাস্তা ধরে আট কিলোমিটার এগোলে হাতের বাঁয়ে মঙ্গলপুর গ্রাম। মূল রাস্তা থেকে একটি পার্শ্বসড়ক মঙ্গলপুরের ভেতর দিয়ে চলে গেছে অন্য পাশের তিলেচাঁনপুর গ্রামের দিকে।
ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বাহন থেকে নেমে সরাসরি মঙ্গলপুরের সেই পার্শ্বরাস্তা ধরেন নিউজবাংলার বনি আমিন।
এক হাজার মিটারের এই পার্শ্বরাস্তাটি ইটের তৈরি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫৯ লাখ টাকা। এর আগে কাঁচা সড়ক ছিল মঙ্গলপুরের ভেতর দিয়ে। এর দুই পাশজুড়ে একসময় ছিল মঙ্গলদের বসবাস।
পুরো গ্রাম এখন বিস্তৃত মাঠ। মসুর ডাল, মটরশুঁটি আর নানা সবজির চাষ হচ্ছে এখানে। আছে ভুট্টা, কলা ও আখের ক্ষেত।
আখ, মোটর, ডাল ও আমের বাগান। ছবি: নিউজবাংলাসড়কটিতে তেমন যানবাহন নেই। বেশ কিছুটা হাঁটার পর রাস্তার দুই পাশে দুটি পুকুর চোখে পড়ে।
পুকুরপাড়ে পুরোনো আমলের বাসনকোসনের ভাঙা টুকরা দেখা গেল। এগুলো দেখে আন্দাজ করা যায়, পুকুর দুটি বেশ পুরোনো।
মঙ্গলপুরে ঢোকার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণী চোখে পড়েনি। গ্রামের পুরোটা ঘুরে দেখেছেন বনি আমিন।
হঠাৎ মেঠোপথ ধরে একজনকে হেঁটে আসতে দেখা যায়।
পথচারীর নাম আক্কাস আলী। বাড়ি মঙ্গলপুরের পাশের গ্রাম দাঁতপুর। এখানকার মাঠে চাষাবাদের কাজ করেন। বর্গা নেয়া জমিতে সকাল থেকেই কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন আক্কাস।
আক্কাস জানান, আগে মঙ্গলপুরে মানুষ বাস করত। এখন মানুষ নেই, তবে চাষাবাদ চলছে।
তিনি বলেন, এখন যেমন করোনা মহামারিতে সারা দেশে মানুষ মারা যাচ্ছেন, ২০০ বছর আগে এই মঙ্গলপুরেও তেমন এক মহামারি হয়েছিল। এতে বহু মানুষ মারা যান।
আক্কাস আলীর সঙ্গে কথা শেষ হতেই একটি গরুর গাড়ি চোখে পড়ে।
এদিকেই আসছে গরুর গাড়িটি। এতে বসা এক কৃষক ও তার ১০ বছরের নাতি।
অনুমতি নিয়ে গরুর গাড়িতে চড়ে কথা হয় কৃষক সবুর বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি গরুর গাড়িতে আখ পরিবহনের কাজ করেন।
সবুর বলেন, বহুদিন আগে মানুষের বসতি ছিল মঙ্গলপুর গ্রামে। বাপ-দাদার কাছে শুনেছেন তাদের গল্প।
মঙ্গলদের প্রধান মঙ্গল পাঠানের বাড়িটি ছিল একটি পুকুরের পাশে। তার অধীনে বহু মানুষ গ্রামে বসবাস করতেন। তবে তারা কেন চলে গেছেন সেটা কেউ জানেন না।
সবুর বিশ্বাস বলেন, ‘মঙ্গলপুরের ইতিহাস আমরা সবাই গল্পে শুনেছি। আমি আমার বাপ-দাদার মুখে শুনেছি। আমার কাছ থেকে আমার ছেলে-নাতি শুনছে। ওই আমলের একটা দরগাহও এ গ্রামে আছে।’
সবুর বিশ্বাসের কথায় দরগাহটি দেখার সিদ্ধান্ত নেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক।
সড়কটি ধরে আধা কিলোমিটার হেঁটে রাস্তা থেকে কয়েকটি আবাদি জমি পেরিয়ে চোখে পড়ে একটি পুকুর। এই পুকুরটি মঙ্গলপুরের তিনটি পুকুরের একটি। এর পাশেই দরগাহর অবস্থান।
মঙ্গলপুর গ্রামের পুকুর। ছবি: নিউজবাংলাদরগাহ বলতে শুধু ইট-বালু আর সিমেন্টর মিনার। তাতে লেখা ইয়া আল্লাহ দরবার শরীফ মিনার। পাশে চাঁদের আকৃতি আঁকা। নির্মাণের সময়কাল উল্লেখ রয়েছে ১৯৭৬ সাল।
বোঝা যায়, দরগাহর মিনারটি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের। তার আগেই গ্রামটি জনমানবশূন্য হয়েছে।
দরগাহর আশপাশে নিস্তব্ধ পরিবেশ। চারদিক গাছপালায় ঢাকা।
স্থানীয়দের দাবি, এখানে বিভিন্ন মানুষ এসে মানত করেন। যারা যে আশায় মানত করেন, তা পূরণ হয়।
মঙ্গলদের সময়ে এ দরগাহ না থাকার বিষয়টি এর নির্মাণের তারিখ থেকেই স্পষ্ট। তবে স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, দরগা আছে অনেক পুরোনো আমল থেকে।
অনেকেই এখন মানতের জন্য দরগায় আসেন। বিভিন্ন নমুনা দেখেই তা বোঝা যায়। আশপাশে খাবারের প্যাকেট, আগরবাতি, সাবানের মোড়ক, ডাবের খোসাসহ অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে। দরগাহর মিনারের নিচে পড়ে আছে সরিষার তেলের দুটি বোতল। হয়তো কেউ মানত করে মাত্রই রেখে গেছেন।
মঙ্গলপুর গ্রামের দরগাহ ও এতে রাখা মানতের তেলের শিশি। ছবি: নিউজবাংলাআচমকা একটি শিশু ছুটে এসে বোতল দুটি কুড়িয়ে নেয়। তাকে থামাতেই সরল উত্তর, আমানতের জিনিস নেয়া যায়। যে মানত করে সে শুধু নিতে পারে না। বোঝা গেল বাবার সঙ্গে গ্রামের মাঠে এসেছে শিশুটি।
পুকুরের পাশে আবাদি জমিতে তাকাতেই তুলনামূলক একটি উঁচু জমিতে নজর আটকায়।
জমিটির মাটি স্বাভাবিক নয়। সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পুরোনো ইটের টুকরা। চাষাবাদের কারণে মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে এসেছে সেগুলো।
জমির ওপরে কয়েকটি আস্ত ইটও দেখা যায়। সেগুলোর আকার এখনকার ইটের চেয়ে অনেক বড়। বলা যায়, প্রায় দ্বিগুণ।
পড়ে থাকা ইট ও ইটের টুকরা দেখে বলা যায়, এখানে মানুষের বসতি ছিল। জায়গাটি আসলে একটি পুরোনো ভিটা।
সেই ভিটা ছেড়ে ফিরে আসার সময় দরগাহের পাশে আবার দেখা যায় শিশুটিকে।
মানতের তেলের বোতল দুটি ফিরিয়ে দিতে এসেছে সে। তার বাবার সন্দেহ, এই মানতের তেল নিলে ক্ষতি হতে পারে।
গ্রামের মাঠে এখন কৃষকের আনাগোনা নেই। তবে এরপরেও একজনকে পাওয়া যায়। ক্ষেতে পানি দিচ্ছিলেন মতিয়ার রহমান। বয়স ৭০ বছরের কিছু বেশি।
মতিয়ার মঙ্গলপুরের বাসিন্দাদের ব্যাপারে দিলেন নতুন তথ্য। তিনি জানান, এই গ্রামে মঙ্গলরা খুব সুখেই ছিলেন। তাদের ছিল অনেক জমি। মুক্তিযুদ্ধের সময়েও এখানে আম-লিচুর বড় বাগান ছিল। বেত বাগান ছিল অনেক।
দেশভাগ আর মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশির ভাগ মঙ্গল ভারতে চলে যান। তাদের জমি এখন চাষাবাদ করছেন আশপাশের গ্রামের মানুষ। যে যেভাবে পেরেছেন ভুয়া দলিল বানিয়ে দখল করে নিয়েছেন।
মতিয়ার রহমানের কথায়, এ এলাকার জমির ম্যাপ ও পুরোনো রেকর্ড দেখলেই বোঝা যাবে কার জমি কে দখল করে নিয়েছেন।
তার সঙ্গে কথা শেষে আশপাশ ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা নেমে আসে। মতিয়ারও বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনি জমি দখলের যে প্রশ্ন রেখে গেছেন মনের মধ্যে সেটাই শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে।
ধীরে ধীরে চারপাশে অন্ধকার জাঁকিয়ে বসে। গ্রামের কোথাও কেউ নেই। আখের ক্ষেতে গা ছমছম করা বাতাস। আব্দুর রহমান কবিরাজের সেই জিন-পরিরা কি নেমে আসছে?
সময় যত গড়ায় রাতের নিস্তব্ধতা আরও গভীর হয়ে ঘিরে ধরে। ঝিঁঝি আর গুবরে পোকার ডাকে যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশ। তবে রাত গভীর হলেও দেখা মেলেনি কথিত সেই জিন-পরির।
মঙ্গলপুর নিয়ে বহু গল্প ছড়িয়ে আছে আশপাশের এলাকায়। এর কোনটা সত্যি বা কোনটি মিথ্যা- বলা কঠিন। তবে গ্রামটি বিরান হওয়ার আরেকটি কারণ বলছে স্থানীয় প্রশাসন।
মঙ্গলপুরে জমি চাষের সঙ্গে বের হয়ে আসছে ইটের টুকরা। ছবি: নিউজবাংলাকোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলছেন, ওই এলাকায় একটা সময়ে ছিল সর্বহারাদের আস্তানা।
ইউএনও হোসেন আশ্বস্ত করেছেন, গ্রামটির জমি আশপাশের মানুষ ভোগদখল করছেন কি না খতিয়ে দেখা হবে।
মঙ্গলপুর গ্রামে একসময়ে ছড়িয়ে থাকা প্রাণের স্পন্দন এখনও টের পাওয়া যায়। প্রাণবন্ত এক গ্রাম কী করে জনমানবশূন্য খাঁখাঁ প্রান্তরে রূপ নিল, সেটি হতে পারে ঐতিহাসিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক গবেষণার বিষয়।
বিভিন্ন গল্প বা মিথের প্রচলন কোনো স্বার্থ হাসিলের অসৎ উদ্দেশ্য থেকে কি না, সেটিও জানা সম্ভব নিবিড় গবেষণায়।