ইরানে চলতি বছর রেকর্ড পাঁচ শতাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
সোমবার আইএইচআর এ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
সংবাদমাধ্যমটির বরাত দিয়ে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছর ইরানে কমপক্ষে ৫০৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি। এ বছর আরও কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য দেশটি কাজ করছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, গত বছর ইরানে ৩৩৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ২৬৭।
সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে।
বিক্ষোভ থামাতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইরান সরকার ধরপাকড় চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ সংখ্যা উদ্বেগ তৈরি করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিক্ষোভে জড়িতদের ব্যাপকভাবে মৃত্যুদণ্ড দেবে তেহরান।
ইরানে এ পর্যন্ত ছয় বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আইএইচআর জানায়, আইনজীবী ও যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
- আরও পড়ুন: বিক্ষোভ নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত চায় না ইরান
আরও ২৬ জনের বিচারপ্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে। এদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে। ইরান সরকার এসব অভিযুক্তকে দাঙ্গাকারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে সহায়তার অভিযোগে সম্প্রতি ইরানের চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
আইএইচআর জানায়, গ্রেপ্তারের সাত মাসের মধ্যে ওই সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এ প্রসঙ্গে আইএইচআর পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোঘাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এসব ব্যক্তির সুষ্ঠু বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে সামাজিক ভীতি তৈরি করতে চায় ইরান সরকার।’
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ইরানে।
ধারণা করা হয়, ইরানের চেয়েও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় চীনে, তবে দেশটির মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায় না।