ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে সহায়তার অভিযোগে ইরানে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানি বার্তা সংস্থা মেহর বুধবার জানায়, ইসরায়েল সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাকে সহায়তার অপরাধে ওই চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ ও অপহরণে সহায়তা এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে আরও তিনজনকে পাঁচ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ইরানের আরেক বার্তা সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তদের গত জুনে গ্রেপ্তার করা হয়। ইরানজুড়ে চলা পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভের আগেই তারা গ্রেপ্তার হন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হাজার ৭৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে ৯৬ হাজার ৭৯৪ জন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ৯৯ জন নিহত ও ১৬৯ জন আহত হয়।
জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বৃহস্পতিবার বলেন, গত দুই দিনে গাজায় তিনটি ইউএনআরডব্লিউএ স্কুল আক্রান্ত হয়েছে এবং কমপক্ষে ২১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুলগুলোতে ২০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কিছু স্কুলে একাধিকবার হামলা হয়েছে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ১৪০টিরও বেশি ইউএনআরডব্লিউএ স্কুল হামলার শিকার হয়েছে বলে জানান তিনি।
লাজারিনি আরও বলেন, আগে স্কুলগুলো ছিল শিক্ষার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এখন তা অনেকের জন্য নরকে পরিণত হয়েছে।
স্কুলকে কেউ সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারবে না। স্কুলগুলো কোনো টার্গেট নয়। এ বিষয়টি যুদ্ধের মৌলিক নিয়ম যা স্পষ্টভাবে এখানে উপেক্ষা করা হয়েছে।
দক্ষিণ ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা চালায় হামাস। ওই সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। জিম্মি করে নেয়া হয় ২৫০ জনের মতো ইসরায়েলি।
ওই হামলার জবাবে গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে বড় আকারের অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:লেবাননের রাজধানী বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে বছর ধরে চলা সংঘাতে ইসরায়েলি সেনারা সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হওয়ার পর ওই হামলা চালায় তেল আবিব।
ইসরায়েলের ভাষ্য, বৈরুতে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানান, তারা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
অন্যদিকে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানায়, মধ্যাঞ্চলীয় বাশুরা এলাকায় লেবাননের পার্লামেন্টের কাছে একটি ভবনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। লেবাননের প্রাণকেন্দ্রের এত গভীরে গত এক বছরে এটিই দেশটির প্রথম হামলা।
দক্ষিণ ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের হামলার পর একই দিন ফিলিস্তিনের উপত্যকাটিতে পাল্টা হামলা শুরু করে তেল আবিব।
প্রায় এক বছর ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় সাড়ে ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। হামাসের ওই হামলায় নিহত হয় এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদের কথা জানিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অবস্থান লক্ষ্য করে প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এতে নতুন মাত্রা যোগ করে মঙ্গলবার তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।
লেবাননের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি সাতজন আহত হয়।
দেশটির বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ভবনটির দ্বিতীয় তলায় জ্বলছে আগুন।
ছবিটির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহর দাহিয়েহতেও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া যায়, যে এলাকায় গত সপ্তাহে হামলায় প্রাণ হারান হিজবুল্লাহর প্রধান নাসরাল্লাহ। এলাকাটিতে বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ পাওয়া যায়।
এর আগে বুধবার দিনভর দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহরে ডজনের বেশি হামলা চালায় ইসরায়েল।
দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ ঘরবাড়ি ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে যাওয়া লেবাননের গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের পরবর্তী নোটিশের আগ পর্যন্ত না ফেরার অনুরোধ করেছে।
আরও পড়ুন:লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামগুলোর ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে’ স্থল অভিযান শুরু করার কথা জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধরত ইসরায়েল।
দেশটির সেনাবাহিনী মঙ্গলবার এ কথা জানায়।
হিজবুল্লাহ দেশটির সীমান্তে শত্রু সেনাদের লক্ষ্যবস্ত করার ঘোষণার পর ইসরায়েল এ স্থল অভিযান শুরু করে।
লেবাননের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েল অন্তত ছয় দফা হামলা চালায়।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী দামেস্কের আশপাশেও ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।
সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেই ইসরায়েল এ হামলা চালায় এবং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, দক্ষিণ লেবাননের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোয় হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও শুরু হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এ অভিযানের অনুমতি দেয়।
সামরিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, এর মধ্য দিয়ে লেবাননে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের লড়াই নতুন মাত্রা পেয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার ইসরায়েলের স্থল অভিযানের বিরোধিতা করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরায়েলের স্থল হামলা মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
এদিকে সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা বলেছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাজধানী দামেস্ক এলাকায় তিন দফা হামলা প্রতিহত করেছে, তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত সপ্তাহে রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে জোরালো হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণে ইসরায়েল বোমা হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করে।
ইসরায়েলি হামলার কারণে লেবাননে এরই মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে তেল আবিরের পুরোনো বিরোধ তীব্র রূপ নেয়।
হিজবুল্লাহ হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছিল। ইসরায়েলও এসব হামলার পাল্টা জবাব দিয়ে আসছিল।
এমন বাস্তবতায় লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলি হামলা থেকে ফিলিস্তিনের জনগণকে রক্ষায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়বদ্ধ করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে শুক্রবার ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববাসীর উদ্বেগ এবং নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা থামছে না।
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের বিদ্যমান বাস্তবতা কেবল আরব কিংবা মুসলমানদের জন্যই উদ্বেগজনক নয়, বরং তা সমগ্র মানবজাতির জন্যই উদ্বেগের। একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেক ফিলিস্তিনির জীবন অমূল্য।
‘ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়বদ্ধ করতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর চলমান নৃশংসতা, বিশেষত নারী এবং শিশুদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যে নিষ্ঠুরতা বিশ্ব দেখছে, তা থেকে নিস্তারের জন্য বাংলাদেশ অনতিবিলম্বে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি আনতে পারবে। তাই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।
শান্তিতে নোবেলজয়ী বলেন, গত আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই যুদ্ধের প্রভাব সর্বব্যাপী। এমনকি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাই উভয় পক্ষকেই সংলাপে বসে বিরোধ নিরসনের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের একের পর এক হামলায় বিধ্বস্ত লেবাননে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জনে। আহত হয়েছে ১৫৩ জন।
দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০ জনে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এ খবর জানায়।
এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নেতারা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও তা মানছেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু; বরং আরও হামলার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
বৈরুত থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি শুক্রবার এসব তথ্য জানায়।
এক সপ্তাহ ধরে বিরতিহীন হামলা চলছে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে। প্রথমে নিয়ম করে দুই-একবার হামলা হলেও গত কয়েক দিনে বেড়েছে হামলার ভয়াবহতা।
নেতানিয়াহু প্রশাসন ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দমনের কথা বললেও প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক বেসামরিক নাগরিক।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযাযী, গত ২৪ ঘণ্টায় অনেক মানুষের প্রাণ গেছে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায়।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে হামলা। এতে প্রাণহানির সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:লেবাননজুড়ে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
স্থানীয় সময় সোমবারের এসব হামলায় ৩৫ শিশুসহ কমপক্ষে ৪৯২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
হামলায় আহত হয়েছে ১ হাজার ৬৪৫ জন। কয়েক হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছিল, হামলায় প্রায় ২৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তসীমান্ত সহিংসতার মধ্যে এটিই সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।
এমন বাস্তবতায় আরব রাষ্ট্রগুলো হিজবুল্লাহর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা জোরদারের জন্য ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রায় এক বছরের মধ্যে যুদ্ধ অতিমাত্রায় তীব্রতর হয়েছে।
ফিলিস্তিনের হামাস যোদ্ধারা গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর অতর্কিত নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০৫ জনকে হত্যা করে।
ইসরায়েল বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর ‘বিপুলসংখ্যক’ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে বৈরুতে একটি ‘লক্ষবস্তুকে’ লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ হামলাকে ‘অপারেশন নর্দার্ন অ্যারোস’ নামে উল্লেখ করেছে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, রাজধানীতে তাদের তৃতীয় কমান্ড আলী কারাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান, তবে তিনি অক্ষত আছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পূর্ব লেবাননে নতুন করে ইসরায়েলি অভিযানের খবর দেয়ার পর হিজবুল্লাহ মঙ্গলবার ভোরে বলেছে, তারা ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনাগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে সোমবার ইসরায়েলের উপকূলীয় শহর হাইফাতে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠলে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়াতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন:লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শুক্রবার হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি হামলায় আটজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।
বৈরুত থেকে হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, সংগঠনটির এক শীর্ষ সামরিক নেতা নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, তারা একটি ‘টার্গেটকৃত হামলা’ পরিচালনা করেছে।
অন্যদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, হামলায় আটজন নিহত ও ৫৯ জন আহত হন।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সূত্রটি বলেছে, দক্ষিণ বৈরুতে তাদের ঘাঁটিতে হামলায় অভিজাত রাদওয়ান ইউনিটের প্রধান ইব্রাহিম আকিল নিহত হন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে এ বিমান হামলা তৃতীয়। এ সপ্তাহে সহিংসতা নাটকীয়ভাবে গাজা থেকে লেবাননে স্থানান্তরিত হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইসরায়েলকে দায়ী করা হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকর এবং তার সহযোগী ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাসের নেতা সালেহ আল-আরুরি নিহত হন।
হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সূত্র আরও জানায়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রাদওয়ান ফোর্সের কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল নিহত হন। ফুয়াদ শুকরের পর তিনি ফের্সের সশস্ত্র বাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।
হিজবুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে কমান্ডারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, তবে হামলার পর তারা বলেছে, ইসরায়েলের গোয়েন্দা ঘাঁটিতে আঘাত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য