একে একে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে শনাক্ত হচ্ছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন। ইউরোপের পর সুদূর অস্ট্রেলিয়াতেও রোববার ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্যবিদরা।
মাত্র এক দিন আগেই যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও ইসরায়েলে শনাক্ত হয় ভাইরাসটি। গত সপ্তাহে প্রথম এর অস্তিত্ব শনাক্ত হয় সাউথ আফ্রিকায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ায় দুজনের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ভ্রমণ করে সিডনিতে পৌঁছান তারা। তাদের দেহে ওমিক্রন সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে শনিবার।
নিউ সাউথ ওয়েলসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, দুই ব্যক্তির কারোর মধ্যেই করোনার উপসর্গ ছিল না। তারা করোনা প্রতিরোধী টিকার ডোজ সম্পন্ন করেছেন আগেই, বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ভ্রমণ করে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরা আরও ১২ বিমানযাত্রীকে ১৪ দিনের জন্য হোটেলে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যাত্রী ও ক্রুসহ বিমানের বাকি প্রায় ২৬০ জন আরোহীকে সেলফ আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ওমিক্রন শনাক্ত দুই ব্যক্তিরই করোনা প্রতিরোধী টিকা নেয়া ছিল বলে বিদ্যমান টিকায় করোনার নতুন প্রজাতিটির বিস্তার ঠেকানো সম্ভব নয়- এমন ধারণা আরও জোরালো হলো।
একই সঙ্গে ওমিক্রনের বিস্তার নিয়ন্ত্রণও কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ সাউথ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্তের সপ্তাহ না পেরোতেই এটি আফ্রিকার দক্ষিণের দেশ বতসোয়ানা, ইউরোপে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, বেলজিয়াম, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইসরায়েল এবং এশিয়ায় হংকংয়ে শনাক্ত হয়েছে। অস্ট্রিয়াতেও ওমিক্রন পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি এখনও।
বিজ্ঞানীদের মতে, উহানে প্রথম শনাক্ত কোভিড নাইনটিনের চেয়ে একেবারেই আলাদা করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। এটি করোনার অন্য ধরনগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে কোভিডসহ করোনার বিভিন্ন ধরনের তুলনায় এটি বেশি প্রাণঘাতী কি না বা গুরুতর অসুস্থতা তৈরি করে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।
বিদ্যমান টিকায় প্রতিরোধ সম্ভব না হলে দুই বছর শেষ করে তৃতীয় বছরে পা রাখতে যাওয়া বৈশ্বিক মহামারি ওমিক্রনের কারণে আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় প্রাথমিকভাবে ওমিক্রনকে উদ্বেগের কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এটির বিস্তার রোধে এরই মধ্যে ভ্রমণ বিধিমালা কঠোর করেছে বিভিন্ন দেশ। উৎপত্তিস্থল সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে অনেক দেশ।
পুঁজিবাজারে এরই মধ্যে ওমিক্রনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিমানসহ পর্যটনের বিভিন্ন খাতে নতুন করে ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মহামারির প্রথম বছরে ধসের পর বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে, তখন ওমিক্রনের কারণে অর্থনীতির গতি থমকে যেতে পারে বলে শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও ব্যারেলপ্রতি ১০ ডলার কমেছে।