ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলনেত্রী জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘অযথা আতঙ্কিত হবেন না। জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি নয়। ঝড়ে টিন উড়ে আসতে পারে। কেন্দ্রীয় বাহিনী বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত। আমরা তৈরি আছি। জনগণের জন্য যতটা তৈরি থাকা প্রয়োজন আমরা তৈরি।’
‘কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। সতর্ক থাকুন। তবে মাস্ক পরে থাকুন। ঝড় থেমে যাবে। তারপর ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১০ লাখ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। একদিকে কোভিড, এই সময় আবার জ্বর বা ডায়রিয়ার মতো রোগ হয়। তাই ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝড় কেটে গেলেও তাণ্ডব থেকে যাবে। সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাব, সরকারি, বেসরকারি সংস্থাকে বলব, আমাদের সহযোগিতা করুন। আগেরবার সামলে দিয়েছিলাম। এবারও যেন পারি।’
তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘ত্রাণশিবিরগুলোতে করোনাবিধি মানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪ হাজার ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে মালদা, দুই দিনাজপুর, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের ওপর উপান্ন ও নবান্নের কন্ট্রোলরুম থেকে ৪৮ ঘণ্টার নজরদারি শুরু হবে।’
‘উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য দল তৈরি করা হয়েছে। ১৫ দিন আগে থেকে বারবার বৈঠক করেছি। আগেরবার ১০ লাখ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাই প্রাণহানি তেমন হয়নি। এবারও কাজ শুরু করেছি। মানুষকে বলব, ঝুঁকি নেবেন না। আগে প্রাণে বাঁচতে হবে।’
মমতা বলেন, ‘অমিত শাহ বলেছেন, কেন্দ্র সহযোগিতা করবে। ৬০০ কোটি রুপি পাচ্ছে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশও ৬০০ কোটি পাচ্ছে। সেখানে বাংলার জন্য ৪০০ কোটি রুপি বরাদ্দ হয়েছে। আমি প্রশ্ন তুলেছি, আয়তন ও জনসংখ্যার নিরিখে ওড়িশা থেকে বড় হলেও আমাদের কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে। বুলবুল, আম্ফান কোভিডে আগেও কিছু পাইনি। আবার ইয়াস আসছে।’
‘৫১টি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা মনিটরিং করবে। ত্রাণ প্রস্তুত রেখেছি। এক হাজার রেস্টোরেশন টিম প্রস্তুত।’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নজরদারি করবেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস গতি বাড়িয়ে বুধবার সকালেই পশ্চিমবঙ্গ ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।