ঈদের সকাল থেকে মজার মজার খাওয়াদাওয়া শেষে বেলা গড়ালে অনেকেই চান কোথাও একটু ঘুরতে যেতে। প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে।
কিন্তু সবসময় তো আর দূরে যাওয়া হয় না। তাই জেনে নিতে হবে কাছেই কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়।
ফেনীতে শহরের কাছাকাছি এমন বেশ কিছু জায়গা রয়েছে যেগুলোতে চাইলেই বিকেল বেলা ঘুরে আসতে পারবেন। চলুন এই জায়গাগুলো সম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া যাক।
বিজয় সিংহ দিঘী
সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের সময় এই বিজয় সিংহ দীঘি তৈরি। ফেনী শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিমে এই দীঘির অবস্থান। এর আয়তন ৩৭ দশমিক ৫৭ একর।
দীঘির চারপাশজুড়ে আছে গাছ। ১৯৯৫ সালে এই গাছগুলো লাগিয়েছিলেন জেলার তৎকালীন প্রশাসক এ. এইচ. এম নূরুল ইসলাম।
ট্রাংক রোড জিরো পয়েন্ট কিংবা রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এখানে যাওয়া যায়।
এই দীঘি পর্যন্ত এসে পৌঁছালেই হবে। এরপর এর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য গুনতে হবে না কোনো টাকা।
রাজাঝির দিঘী ও শিশু পার্ক
এই দিঘীর অবস্থান ফেনী শহরের ঠিক জিরো পয়েন্টে। এর আয়তন ১০ দশমিক ৩২ একর।
জনশ্রুতি আছে ত্রিপুরা মহারাজের প্রভাবশালী একজন রাজার কন্যার অন্ধত্ব দূর করার জন্য প্রায় পাঁচ থেকে সাতশ বছর আগে এই দিঘী খনন করা হয়। সেখান থেকেই এর নাম রাজাঝির দিঘী।
১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে রাজাঝির দীঘির পারেই এর সদর দপ্তর করা হয়। দীঘির পারে এখন একটি শিশুপার্ক করা হয়েছে যা পরিচালনা করে জেলা পরিষদ।
মুহুরী সেচ প্রকল্প
১৯৮৫-৮৬ অর্থবছরে সোনাগাজী উপজেলায় এই সেচ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হয়। এটি ঘিরে গত ২৫ বছরে গড়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্র ও পিকনিক স্পট।
বিশেষ করে শীত মৌসুমে অনেকেই এখানে বেড়াতে আসে। সেচের পানিতে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস ও প্রায় ৫০ প্রজাতির পাখি।
টলটলে পানি, পাখির কিচিরমিচির সব মিলিয়ে বিকেল কাটানোর চমৎকার এক জায়গা। এখানেও আপনাকে দিতে হবে না কোনো ফি।
নিহালপল্লী
ফেনীর বিনোদনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম নিহালপল্লী। এর অবস্থান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কসকা বাজারে। প্রকৃতির আদলে গড়ে তোলা হয়েছে এটি।
নিহালপল্লীতে ঢুকতেই সবুজ ঘাসের ওপর করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র। হাতের ডানেই গাছ-গাছালির মাঝে একটি বাঘ যার থাবায় আটকে আছে মায়া হরিণ। কাছেই ঘাস ও পানির মাঝে মাছ শিকারের অপেক্ষায় আছে বক।
শিলুয়ার শিল পাথর
ছাগলনাইয়া উপজেলার শিলুয়া গ্রামে আছে প্রাচীন ঐতিহাসিক শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ। শিলামূর্তির গায়ের ব্রাহ্মি হরফের লিপি থেকে এখানে আর্য সভ্যতা বিকাশের প্রমাণ পাওয়া যায়। ব্রিটিশ আমল থেকে এই ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নটি প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত আছে।
প্রতি ঈদেই এখানে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। নেই কোনো দর্শনার্থী ফি।
তৃপ্তি এগ্রো পাক
ফেনী শহরের অদূরে নতুন রানীর হাটে তৈরি তৃপ্তি এগ্রো পার্কে আছে প্রশস্ত দিঘী, লেক, গাছের সারি। সেই সঙ্গে বাচ্চাদের জন্য আছে বিভিন্ন রকম রাইড।
নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে।
গোল্ডেন শিশু পার্ক
বিজয় সিংহ দিঘীর কোল ঘেষে আছে ছোট্ট একটি শিশু পার্ক। বছর খানেক আগে এটি চালু করা হয়েছে। এখানে আছে বিভিন্ন রাইড। ২০ টাকার বিনিময়ে চড়তে পারবেন এগুলোতে। তার আগে ঢোকার সময় দিতে হবে ১০ টাকা।