জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি মানুষের জীবনে যে মধুর শব্দটি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে, সেটি হলো মা। সন্তানের জন্য মায়েদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের দিনক্ষণের হয়তো প্রয়োজন হয় না। তবু শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশ করতে প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় ‘বিশ্ব মা দিবস’।
অন্য সব দিনের চেয়ে এ দিনটিতে সন্তানরা মায়েদের প্রতি একটু অন্যভাবে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
কেউ কেউ মাকে ফুল, কার্ড ও বিভিন্ন রকমের উপহার দেন। কেউ আবার কেক কেটেও মায়ের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করেন।
কেউ বা এত আয়োজনে না করে শুধুই বলেন, ‘তোমাকে ভালোবাসি মা।’
আবার অনেকে এ দিনে বেশি করে বলে থাকেন, মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের কোনো নির্দিষ্ট দিনে আবদ্ধ থাকতে পারে না। মাকে ভালোবাসা জানাতে আনুষ্ঠানিকতারও প্রয়োজন হয় না।
মা দিবস কীভাবে এলো, কে বা কারা তা প্রচলন করেন, এ নিয়ে জিজ্ঞাসা রয়েছে অনেকের মনে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য সে জিজ্ঞাসার সংক্ষিপ্ত জবাব তুলে ধরা হলো।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাচীন গ্রিসে মাতৃ আরাধনার প্রথা থেকেই মা দিবসের সূচনা।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মাকে ঘিরে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হতো। তবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো দিবস ছিল না। এ ধরনের অনুষ্ঠান আফ্রিকার সমাজেও ছিল।
আধুনিককালে মা দিবসের প্রবক্তা যুক্তরাষ্ট্রের আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস। তার মা অ্যান মারিয়া জার্ভিস ছিলেন একজন সমাজকর্মী।
অ্যান সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করতেন। তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাদারস ডে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন (আন্তর্জাতিক মা দিবস সমিতি)।
১৯০৫ সালে মৃত্যু হয় অ্যানের। তার মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবসের প্রচলন করেন।
১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া, জার্মানিসহ শতাধিক দেশে ‘মা দিবস’ পালন করা হয়।