দেশের ৯৭ শতাংশ তরুণ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন। সচেতন হলেও ৫০ শতাংশ তরুণ জলবায়ু পরিবর্তনকে সমস্যা মনে করে।
বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার- বিওয়াইএলসি ও সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ- সিইউএস পরিচালিত একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে বিওয়াইএলসি ‘যুব ও জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশ প্রসঙ্গ’ শিরোনামে একটি জরিপ করে। জরিপে বাংলাদেশের আটটি বিভাগের ১৮-৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার তরুণ-তরুণী অংশ নেয়।
গ্লোবাল ইয়ুথ ক্লাইমেট সামিটের দ্বিতীয় দিনে প্যানেলে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়। যেখানে আলোচকদের মধ্যে ডাচ রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওই, এফসিডিও উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও বিসিএএস পরিচালক আতিক রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জরিপে আরও দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ তরুণ পরিবেশ সুরক্ষার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছেন।
তরুণরা কী কী উদ্যোগ নিতে পারেন এমন মতামত চাওয়া হলে তাদের বেশির ভাগই জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পে অংশ নেয়া, সচেতনতা প্রচার চালানো এবং পরিবেশ সংগঠনে যোগ দিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।
অংশ নেয়া তরুণদের মধ্যে কেউই মনে করেন না যে, পায়ে হেঁটে চলাচল করা বা বাইসাইকেল চালানো জলবায়ু পরিবর্তন কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের আরও জিজ্ঞাসা করা হয়, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস করতে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।
তাদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ তরুণের মতে, তারা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্রকল্পে অংশ নিয়ে কীভাবে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা যায় তা শিখতে পারে। ৭৩ শতাংশ মনে করে, তারা বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং প্রতিবেশীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে পারে।
৪৭ শতাংশ বলেছেন তারা যথাযথ পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে তাদের পরিবারের সদস্যসংখ্যা সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন এবং ১৪ শতাংশ মতামত ব্যক্ত করেছেন মাংস খাওয়া কমিয়ে আনার ব্যাপারে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি উপস্থিত তরুণদের একটি বৈশ্বিক যুব জলবায়ু অঙ্গীকারে সম্মত করানো হয়। যা যুবকদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিতে আরও উৎসাহিত করে। দুই দিনের এই ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে ৮০টির বেশি দেশের ৬০০ তরুণ-তরুণী অংশ নেয়।
বাংলাদেশ, গিনি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, লেবানন, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে এবং সোমালিয়া থেকে ১২ জন ইয়ুথ ক্লাইমেট চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত করা হয়। সামিটে অংশ নেয়া প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলন শেষে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তাদের পরিকল্পিত প্রজেক্টকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রত্যেক বিজয়ীকে পুরষ্কার হিসেবে সম্পূর্ণ স্কলারশিপে বিওয়াইএলসি’র লিডারশিপ কোর্স করার সুযোগ ও তাদের জলবায়ু পুনরুদ্ধার প্রকল্পের জন্য ১০০০ ডলার দেয়া হয়।
সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের পাশাপাশি শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানান। তাদের নেতৃত্বে পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে বলে মনে করেন তিনি।
বলেন, ‘তরুণদের সঙ্গে নিয়ে এই অগ্রণী বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি বিওয়াইএলসির প্রশংসা করি। নিঃসন্দেহে জলবায়ু সংকট নিয়ে তরুণদের আওয়াজ তুলে ধরতে উন্নয়নশীল এবং উন্নত উভয় ধরনের দেশকেই এক কাতারে নিয়ে আসতে হবে।’