বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চবি, আহত ৭

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০৯:২০

চবির সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ বলেন, ‘আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ মিলে ছাত্রদের হলে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।’

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুইটি গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাস।

এ ঘটনায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এবার সংঘর্ষে জড়ানো দুইটি গ্রুপ হলো সিএফসি ও সিক্সটি নাইন। সিএফসি পক্ষের কর্মীরা নিজেদের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও সিক্সটি নাইন পক্ষের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই সময় দুই গ্রুপের কর্মীদের দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কয়েক দফায় চকলেট বোমা ফাটাতে দেখা যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ দুই পক্ষকে হলে ঢুকিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে বিজয় গ্রুপের এককর্মীকে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা মারধর করলে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে দুপুর একটার দিকে তা শাহজালাল ও সোহরাওয়ার্দী হলে ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর আগে বুধবার রাতে এক কর্মীর পক্ষ ত্যাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দুই গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন চত্বরে সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীর সঙ্গে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। এই ঘটনা জানাজানি হলে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা শাহ আমানত হল ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হলে অবস্থান নিয়ে একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

এদিকে সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সংঘর্ষে আহত হয়ে এখন পর্যন্ত সাতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চবির মেডিক্যাল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু তৈয়ব।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাতজন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের আমরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আরও কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কল দিয়েছে। আমরা অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএফসি পক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, ‘সিক্সটি নাইনে কোনো নেতা নেই। তাদের কেউ কাউকে মানে না। বিজয় পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা না মিটতেই তারা স্টেশনে আমাদের এককর্মীকে মারধর করেছে। আমরা সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

তবে এই ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন সিক্সটি নাইন পক্ষের নেতা ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাঈদুল ইসলাম সাঈদ। তিনি বলেন, ‘সিএফসি ইচ্ছাকৃতভাবে গায়ে পড়ে এই ঝামেলা বাধিয়েছে। আমরা বিজয় পক্ষের সঙ্গে ঝামেলা মেটাচ্ছিলাম। এর মধ্যেই তারা এটা ঘটিয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবির সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ বলেন, ‘আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ মিলে ছাত্রদের হলে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।’

এর আগে এককর্মীর পক্ষ ত্যাগকে কেন্দ্র করে বিজয় ও সিক্সটি নাইন পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। গত রোববার গ্রুপ ত্যাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রুপত্যাগী কর্মী কামরুলকে মারধর করেন সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। এই মারধরের জেরে বুধবার রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের দিকে সিক্সটি নাইন পক্ষের এক কর্মী রাতের খাবার খেতে এলে কামরুলের সঙ্গে তার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে আর সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। ওই সময় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরাই একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে বৃহস্পতিবার বিজয় পক্ষের এককর্মীকে মারধরের ঘটনায় সংঘর্ষ পুনরায় শুরু হয়। ওই ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এ বিভাগের আরো খবর