বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা

  • আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম   
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৩৮

আর একদিন পর বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন হল থেকে হল, কটেজ ও বিভিন্ন ক্যাম্পাসে। এ সময় লিফলেট, ইশতেহার ও ব্যালট নম্বর নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরছেন তারা। শিক্ষার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের ভোট দিতে অনুরোধ করছেন তারা। ক্যাম্পাসজুড়ে একরকম উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

প্রার্থীদের দাবি, তারা শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা বাস্তবায়নে অগ্রধিকার দিতে চান। কেউ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আবাসন ও যাতায়াত সংকট নিরসনে। আবার কেউ প্রতিশ্রতি দিচ্ছেন, খাবার ও স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে। তবে সকল প্রর্থীদেও একটাই আশা, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে।

এদিকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও সুন্দর উপহার দিত্যে প্রস্তুত প্রশাসন ও কমিশন। নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তা দেয়ায় কমিশন ও প্রশাসনের লক্ষ্য। চাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, সব অভিযোগই নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখবে।

আসন্ন চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে এবার একজন ভোটার ভোট দেবেন ৪০টি পদে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি ও হল সংসদের ১৪টি পদে ভোট দিতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে প্রতি ২০ সেকেন্ডে একটি করে ভোট দিতে হবে। পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র থাকবে ১৫টি ও বুথ থাকবে ৭০০টি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। তবে পদ বেশি হওয়ায় ভোট দিতে সময় লাগতে পারে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটকেন্দ্রের ভিড় ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সূত্রে জানা গেছে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঁচটি ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। এর মধ্যে চারটিতে থাকবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। অন্য একটিতে থাকবে হল সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। এতে ভোটাররা দ্রুত বুঝতে পারবেন কোন ব্যালটে কোনো পদ রয়েছে। ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার বা ওএমআর পদ্ধতিতে।

চাকসু নির্বাচনে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক ভোট কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভোটের দিন চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণ করা হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা সোমবার আমাদের কাছে আলাদা ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে ভোট দেওয়ার দাবি নিয়ে এসেছিল। আমরা তাদের দাবিটি গ্রহণ করেছি।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও ফুটেজ সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি কেন্দ্রে দুটি করে মেডিকেল টিম থাকবে। ১৪ অক্টোবর (আজ) থেকে পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটের দিনও কেবল পরিচয়পত্র নিয়েই ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে।

নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করেছি। এটি আমাদের মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শাটল ট্রেনের সূচি বাড়ানো হয়েছে, পাশাপাশি অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব আশা করছি বলেন তিনি।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে, যারা প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি প্রবেশপথে প্রতিদিন টহল দিচ্ছে দুইটি করে টহল টিম। বহিরাগতদের প্রবেশেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। ৫টি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবে না।

আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হবে চাকসু নির্বাচনের ভোট। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে নয় শতাধিক প্রার্থী। আর মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫২১ জন। যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। নির্বাচনে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে নির্বাচন করবেন ৪১৫ জন। আর ১৪টি হল ও একটি হোস্টেল সংসদের বিভিন্ন পদে ৪৯৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবার ভোট হতে যাচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর