প্রশাসনের সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ তুলে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের পর এবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণমাধ্যম উপদেষ্টা পদ থেকে সরে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া।
বুধবার সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল প্রেরিত ও রেজিস্ট্রার দপ্তরের সিল সম্বলিত এক চিঠিতে এ পদত্যাগের বিষয়টি জানা যায়।
পদত্যাগপত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনিয়মে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের নিম্নোক্ত অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে গণমাধ্যম উপদেষ্টা পদত্যাগ করছি।
‘বিষয়গুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন অনিয়ম, উপাচার্যের একক কর্তৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অবৈধ অনলাইন পিএইচডি ডিগ্রির অনুমোদন, পদোন্নতির শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও কতিপয় শিক্ষককে পদোন্নতি প্রদান, পদোন্নতির সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও শিক্ষকদের একটি অংশকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা, পদোন্নতি নীতিমালায় না থাকলেও শিক্ষকদের পদোন্নতির সময় অবৈধ শর্ত প্রদান করা এবং পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনা করে এসব শর্ত দেয়া, বিভিন্ন বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিভাগীয় দায়িত্ব হস্তান্তর না করা এবং উপাচার্যের পছন্দের লোকদের আইন লংঘন করে এসব দায়িত্ব দেয়া, উপাচার্য কর্তৃক শিক্ষকদের ক্যাডার বাহিনী তৈরি করা এবং এই ক্যাডারদের দ্বারা শিক্ষকদের পেটানো এবং গালিগালাজ করার ঘটনা ঘটা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অর্থ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করা।
‘অতএব, বিষয়টি বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।’
পদত্যাগের বিষয়ে মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার সহকর্মীরা গত দুই বছর ধরে যে ধরনের অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন আর কখনও হয়নি। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক পদে থাকা নৈতিক মনে করি না বলে আমি পদত্যাগ করেছি।’
এর আগে, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. তোফায়েল হোসেন মজুমদার।