বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নেকাব না খোলায় ভাইভায় বসতে পারেননি ইবি শিক্ষার্থী

  • প্রতিনিধি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৭:৩৮

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এই কাজটি উচিৎ হয়নি। আমাদের সামনেও অনেক সময় এরকম শিক্ষার্থীরা থাকে আমরা সবসময়ই নারী শিক্ষকের মাধমে তাদের আইডেনটিফাই করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হতে পারে।

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নেকাব না খোলায় সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় বসতে পারেননি এক নারী শিক্ষার্থী।

হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর নাম মোবাশশিরা তুবা। তিনি বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

তুবার অভিযোগ, শিক্ষকদের নেকাব খুলে মুখমণ্ডল না দেখানোয় পরীক্ষা নেননি শিক্ষকরা। আর কর্তৃপক্ষ বলেছে, কাজটি ঠিক হয়নি। বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

বিভাগটি সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ভাইভায় নেকাব পরে অংশ নিতে যান ওই ছাত্রী। এ সময় ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নেকাব খুলতে বলেন।

তবে তিনি নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু বোর্ডে থাকা শিক্ষকরা নেকাব পরা অবস্থায় ভাইভা নিতে অস্বীকৃতি জানান।

তুবা বলেন, বোর্ডে উপস্থিত হওয়ার পরই স্যাররা বললেন, আমার নেকাব না খুললে ভাইভা নেবেন না। কিন্তু আমি নেকাব খুলতে অসম্মতি জানাই। আইডিন্টিফিকেশনের জন্য নারী শিক্ষক দিয়ে চ্যাকিংয়ের ব্যাপারে বলেছিলাম। একজন ম্যাম উপস্থিত থাকার পরেও আমাকে আলাদাভাবে নারী শিক্ষক দিয়ে আইডিন্টিফাই করতে অসম্মতি জানায় বোর্ড।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা এমনও বলছেন যে, নেকাব না খুলে ভাইভা দিতে দেবে না এবং পরীক্ষায় ফেইলও করতে পারো সেজন্য। আমি বারবার রিকুয়েস্ট করার পরও স্যাররা এ বিষয়ে সম্মত হননি। স্যারদের মূলত উদ্দেশ্য ছিল যেনো আমি নেকাব খুলে ভাইভা দেই। তাদের আইডিন্টিফিকেশনের কোনো ইনটেনশনও ছিল না।

এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভাইভা বোর্ডে তাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান থেকে একাধিকবার বোঝানো হয়েছে। প্রথম দফায় প্রায় ২৫ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় এসেও সে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানায়৷ পরবর্তীতে আমরা তার বাবাকেও ইনফর্ম করি, তিনি তার সন্তানকে আরেকটি সুযোগ দিতে বলেন। সে অনুযায়ী ক্যাম্পাস খোলার পর ১৭ জানুয়ারি সে ৩ জন বান্ধবী নিয়ে ভাইভা দিতে এলেও পরিচয় শনাক্তে অস্বীকৃতি জানায়। সেদিনও সে চাইলে ভাইভা দিতে পারতো, কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় তার পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।

বিভাগের সভাপতি শিমুল রায় বলেন, রেজাল্ট দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার ভাইভা দেয়ার সুযোগ থাকবে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেছি কিন্তু তাকে রাজি করাতে পারিনি। আমরা তাকে বলেছিলাম যে, ভবিষ্যতে যদি নারী শিক্ষিকা কেও না থাকে, তখন তাকে সেভাবেই ভাইভা দিতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই তার নেকাব খোলানো ছিল না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল তাকে স্টুডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা।

বিভাগের শিক্ষিকা উম্মে সালমা লুনা বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা তো এডমিশন টেস্টে মুখ, কান খুলেই এক্সাম দিয়েছেন। আমাদের ক্লাসরুমেও অনেক শিক্ষার্থী নেকাব পরেন, আমরা কখনোই তাদের বিরূপ কিছু বলি না। এখন, ভাইভার দিন ওই শিক্ষার্থীকে দুই দফায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বোঝানো হয়েছে। কিন্তু সে রাজি হয়নি।

নারী শিক্ষক দিয়ে আইডিন্টিফাই করার প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে এমন লিখিত কোন নির্দেশনা পায়নি। প্রশাসন যদি এব্যাপারে কোন নির্দেশনা দেয় তবে আমরা অবশ্যই তা পালন করব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন বলেন, মানুষ ধর্ম কর্ম করবে আমরা সেখানে বাধা দেব না। তবে যে-কোনো ফ্যাকাল্টি ই হোক না কেনো তাকে ভাইভায় আইডিন্টিফাই করার ব্যবস্থায় আসতে হবে। যেভাবেই হোক না কেনো। অনেকে আছে যারা ফিমেল টিচার ছাড়া করতে চায় না, সেক্ষেত্রে ফিমেল টিচারকে দিয়ে করানো হবে।

যদি বোর্ডে নারী শিক্ষক না থাকে সেক্ষেত্রে জানতে চাইলে বলেন, সেজন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তার বান্ধবীরা থাকবে বা কোনো ম্যামকে এনে তা করা যাবে। এইজন্য যে আমরা পরীক্ষা নেব না বা পরীক্ষা নেয়া যাবে না এমন না বিষয়টা।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এই কাজটি উচিৎ হয়নি। আমাদের সামনেও অনেক সময় এরকম শিক্ষার্থীরা থাকে আমরা সবসময়ই নারী শিক্ষকের মাধমে তাদের আইডেনটিফাই করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর