ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশ নিতে এসে মারামারিতে জড়িয়েছে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগ এবং চকবাজার থানা ছাত্রলীগ। এতে চকবাজার থানা ছাত্রলীগের তিনজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহতদের মধ্যে একজন ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হামলায় ছুরিকাঘাতের শিকার চকাবাজার থানা ছাত্রলীগের কর্মী আবির হোসেন শামীমের অভিযোগ, সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তওসীফ আহমেদ ফাহাদের নেতৃত্বে তাদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী এই ছাত্রলীগকর্মী বলেন, ‘চকাবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ রিয়াদ ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আসি। আমাদের মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাচ চত্বরে আসার পরপরই আমাদের মিছিলের মাঝখানে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আসা মিছিলটি ঢুকে যায়। পরে এটি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানালে আমাদের সভাপতি রিয়াদ ভাই দুই পক্ষকে শান্ত করে সেখানেই ঘটনার মীমাংসা করে দেন। এরপর আমাদের মিছিলটি মিলন চত্বরের সামনে গেলে পেছন থেকে তারা অতর্কিত আমাদের ইটের টুকরো মারতে শুরু করে।
‘এরপর আমাদের ছেলেরা ঘটনার প্রতিবাদে ট্রাক থেকে নেমে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ালে তারা আমাদের ওপর বাঁশের লাঠি নিয়ে হামলা করে। এর মধ্যে একজন তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র (ছুরি) দিয়ে আমাকে আঘাত করে। পরে আমাদের সভাপতি সূত্রাপুর থানার সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ঘটনার কৈফিয়ত জানতে চাইলে তারা সটকে পড়ে।’
ভুক্তভোগী এই কর্মী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমিসহ আমাদের আরও দুইজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের বাঁশের লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে গেছে। আরেকজন হাতে জখমপ্রাপ্ত হয়েছেন।’
সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তওসীফ আহমেদ ফাহাদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুর অনুসারী। আর চকাবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ রিয়াদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পির অনুসারী।
চকাবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তওসীফ আহমেদ ফাহাদের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ভাইকে জানিয়েছি। তিনি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে এটির বিচার করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাই এই বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’
তবে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তওসীফ আহমেদ ফাহাদ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কারও কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। সুন্দরভাবে প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে আমরা চলে এসেছি। তবে আমাদের মিছিলের সামনে কামরাঙ্গিচর থানার সঙ্গে শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের মধ্যে বড় ধরনের গ্যাঞ্জাম হতে দেখেছি।’
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। আমরা এটা তদন্ত করব।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত কেউই এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত করেননি। যদি কেউ অভিযোগ দেয় তখন আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’