ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের মোড়ানো কালো কাপড় খুলে ফেলেছে ছাত্র ইউনিয়ন। একইসঙ্গে সংগঠনটি বলেছে, ছাত্র ইউনিয়নের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও লড়াইকে ভয় পায় বলেই ক্যাম্পাস থেকে ছাত্র ইউনিয়নের নাম মুছে দিতে চায় ছাত্রলীগ।
শনিবার বিকেলে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দীপক শীল ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মাহির শাহরিয়ার রেজার নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী রাজু ভাস্কর্যে মোড়ানো কালো কাপড় খুলে ফেলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির মেট্রো স্টেশন উদ্বোধনকে সামনে রেখে এর আগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার ছবি সংবলিত একটি ব্যাকড্রপ বসায় ছাত্রলীগ। সেটির কারণে রাজু ভাস্কর্য প্রায় পুরোপুরি ডেকে যায়। ১২ ডিসেম্বর সেই ব্যাকড্রপের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন বামপন্থী কয়েকজন শিক্ষার্থী।
ওই ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। হামলায় সেদিন ৮ থেকে ১০ জন নেতা–কর্মী আহত হন। এরপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা টিএসসিতে বিক্ষোভ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙার এ ঘটনাকে ছাত্র ইউনিয়নের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়ে ছাত্রলীগ পুরো রাজু ভাস্কর্যই কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়।
এদিকে শনিবার রাজু ভাস্কর্যের কালো কাপড় খোলার পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক শাওন বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বুধবার সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যকে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়। মূলত আগের দিন পাহাড়ে চার ছাত্রনেতা হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিলে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করে।
‘এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা ছাত্র ইউনিয়নের ওপর সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে রাজু ভাস্কর্যকে কাল কাপড়ে ঢেকে দেয় এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের দেখে নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয়ের দিনে রাজু ভাস্কর্যকে মুড়িয়ে দেয়া কালো কাপড় খুলে আমরা ঘোষণা করছি- শত শহীদের রক্তে গড়া ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিটি সদস্য বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত সন্ত্রাস-মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।’
বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা আরও বলেন, ‘এর আগেও হাকিম চত্বরে শহীদ রাজুর স্মরণে আঁকা প্রতিকৃতি মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগ। আমরা দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আবারও ওই দেয়ালে শহীদ রাজুর প্রতিকৃতি এঁকে ছাত্রলীগের দখলদারত্বের জবাব দেব।’