বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাংবাদিক হেনস্তাকারী ২ ছাত্রলীগ নেতার বহিষ্কারাদেশ ‘গোপনে’ প্রত্যাহার

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:০১

বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের মা-বাবা এসে মুচলেকা দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করে নির্ধারিত সময়ের আগেই তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত ৪ অক্টোবর মানবিক কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিপ্লিনারি কমিটির সভায় ওই দুই নেতার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়।

এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি(চবিসাস)।

গত ১৯ জুন রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে চায়ের দোকানে চেয়ারে বসা নিয়ে চবিসাস সদস্য ও ঢাকা স্টেটের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাতিনিধি দোস্ত মোহাম্মদকে মারধর করেন চবি শাখা ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, উপদপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জুন অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কার হওয়ার পরও দুই ছাত্রলীগ নেতা থাকতেন হলে, দাপিয়ে বেড়াতে ক্যাম্পাসে। এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার সংবাদ প্রকাশ হলেও দায় এড়িয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের মা-বাবা এসে মুচলেকা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এ ছাড়া এর আগেও তাদের ইয়ার ড্রপ ছিল। তবে ১৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষাতে যদি তাদের অংশগ্রহণ করতে দেয়া না হত তাহলে তাদের ছাত্রত্ব থাকত না। এসব দিক বিবেচনায় বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ বলেন, আমার ওপরে বিনা কারণে সুস্পষ্ট হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় যেটুকু বিচার করা উচিত ছিল তাও করা হয়নাই। কিন্তু তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য অপরাধীদেরকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে। এখন দেখলাম, এই সামান্যতম শাস্তিটুকুও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এটি আমার সাথে রীতিমতো প্রতারণা ও অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই আদেশ প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদেরকে উৎসাহিত ও পুরস্কৃত করল। আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং কাদের স্বার্থে, কেন বহিষ্কার আদেশ তড়িঘড়ি করে গোপনে প্রত্যাহার করা হলো, প্রশাসনের কাছে এর সঠিক ব্যাখ্যা চাই।

ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য ও আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম বলেন, তাদের অভিভাবকরা এসে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্যের সামনে মুচলেকা দিয়ে গেছে। পরে ডিসিপ্লিনারি কমিটি তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, এই প্রশাসনের নির্লিপ্ততা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অপরাধীদের কাছে জিম্মি চবি প্রশাসন। বার বার অপরাধীদের ক্ষমা করে সেটিই প্রমাণ করেছে তারা। এই প্রশাসনের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করাও যেন পাপ৷ এই প্রশাসনের জন্য শুধুই নিন্দা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক নির্যাতন ও মারধরের ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময় প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মোশাররফ শাহের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। মারধরের সময় ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। পরে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গঠিত তদন্ত কমিটি গত ৪ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু প্রতিবেদন সন্তোষজনক হয়নি বলে জানিয়েছেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিবেদন জমা দিলেও এটি সন্তোষজনক মনে হয়নি। মারধরে কারা জড়িত, কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট হয়নি। এ কারণে কমিটির সঙ্গে তিনি আবার বসবেন।

এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে ক্যাম্পাসে কর্মরত দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি মারজান আক্তারকে হেনস্থা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনারও কোনো সুরাহা করেনি প্রশাসন।

এ বিভাগের আরো খবর