চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় বহিষ্কৃত দুই ছাত্রলীগ নেতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই সাংবাদিক। এ বিষয়ে নিরাপত্তা ও আইনি সহযোগিতা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত চিঠি দেন মারধরের শিকার সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চবি স্টেশনের একটি চায়ের দোকানের সামনে চেয়ারে বসা নিয়ে আমাকে অন্যায়ভাবে বেধড়ক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ, উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত হোসেন রায়হানসহ তাদের সঙ্গে থাকা আরও ৮ থেকে ১০ জন জড়িত ছিল।
এ বিষয়ে উপাচার্য আশ্বাস দেন, দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করবে এবং তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে। পরবর্তীতে দোষীদের ছয় মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখনো কোনো মামলা করা হয়নি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দোষীরা বহিষ্কার হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে অংশগ্রহণ ও হলে অবস্থানসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারা আমাকে দেখলেই উপহাসমূলক আলাপচারিতাসহ আমার দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করেন। তাদের এমন আচরণে আমি খুবই শঙ্কিত। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি অনিরাপদবোধ করছি।
এ বিষয়ে দোস্ত মোহাম্মদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের বহিষ্কারাদেশ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় হলে না থাকা ও ক্যাম্পাসে অবস্থান না করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমাকে যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাহায্য করে।’
চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিষ্কার করলেও অপরাধীরা হলে অবস্থান এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে। এতে তাদের পুনরায় অপরাধ করতে উস্কে দেয়া হচ্ছে। অপরাধীরা বহিষ্কার হওয়ার পরও তাদের কোনো ধরনের অপরাধবোধ দেখা যায়নি৷’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ঘটনায় বহিষ্কৃতদের মানবিক দিক বিবেচনায় কিছুদিন পর ক্ষমা করে দেয়া হচ্ছে। বহিষ্কার হবে, আবার ক্ষমা পেয়ে যাবে- এটা যেন চবির রীতি হয়ে গেছে। এরকমটা হতে থাকলে অপরাধ কমবে না বরং তা আরও বাড়বে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদারকে একধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে প্রক্টর কার্যালয় সূত্র জানায়, দোস্ত মোহাম্মদের আবেদন গ্রহণ করে তদন্ত কমিটিকে আবেদন ফরোয়ার্ড করা হয়েছে।