দেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সময় মতো পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সদস্যরা। নির্ধারিত সময়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা নিয়েও অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার তারিখে নিয়ে সংশয় মিলেছে পরীক্ষা সমন্বয় কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক উপাচার্যের কন্ঠেও। মিলেছে পরীক্ষার তারিখ পেছানোর আভাসও।
গত ১ এপ্রিল থেকে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি আবেদন শুরু হয়। প্রথমে আবেদনের সময়সীমা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হলেও সেটি লকডাউন শেষ হওয়ার পরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৯ জুন ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা রয়েছে।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। চলমান লকডাউন আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আবেদনের সময় ঈদ শেষ হওয়ার পর ১০ দিন পর্যন্ত থাকবে।
আবেদনের সময় বাড়ানোর ফলে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সামগ্রিক কাজও পিছিয়ে যাবে। ফলে পরীক্ষা পেছানো ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকবে না।
প্রাথমিক আবেদন শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। এটি করতে জুন মাস লেগে যাবে। এরপর প্রশ্ন প্রণয়ন, প্রশ্ন ছাপা, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রশ্ন নিয়ে যাওয়াসহ আরও অনেক কাজ থেকে যায়। চলাচলে বিধিনিষেধ চলমান থাকায় এ কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছে না।
সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক কামালউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু পরীক্ষা জুন মাসে ছিল, স্বাভাবিক হলে জুলাইতে নেয়া যাবে। এটা একা আমার সিদ্ধান্ত নয়, গুচ্ছ কমিটির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিবেন। আবেদনের সময় লকডাউনের ১০ দিন পর পর্যন্ত থাকবে। পরীক্ষার তারিখের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখনও আমরা মিটিংয়ে বসিনি। তবে তারিখ পেছাবে, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। আগামী ৫ বা ৬ তারিখের মিটিংয়ে এসব ব্যাপারে আলোচনা হবে।’
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটির সচিব ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘করোনার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়েছে। আমাদেরও হয়তো তেমনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।