বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাচার অর্থ বিনা প্রশ্নে দেশে আনার প্রস্তাবে বিজিএমইএর সমর্থন

  •    
  • ১৩ জুন, ২০২২ ১৬:৩১

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আমাদের অনেক সময় অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। বর্তমান বাস্তবতায় সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাকে আমরা মেনে নেবো।’

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কোনো প্রশ্ন ছাড়া নামমাত্র কর দিয়ে পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার যে সুযোগ দিয়েছেন তাকে সমর্থন জানিয়েছে পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘দেশের এই সংকটকালে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক রাখা খুবই প্রয়োজন। সেজন্য প্রচুর ডলার প্রয়োজন। এ অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে যারা দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন, তারা যদি সরকারের দেয়া সুযোগে সাড়া দিয়ে সেই অর্থ কর দিয়ে দেশে ফেরত আনতে চায়-সেটাকে আমরা সমর্থন করি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক সময় অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। বর্তমান বাস্তবতায় সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাকে আমরা মেনে নেবো।’

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন তাতে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, বিদেশে অবস্থিত কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ সরকারের কেউ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবে না।

বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি দেশে না আনলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ কর বসানোর সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেট ঘোষণার পর থেকেই ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এই সুবিধার বিরোধিতা করছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি, সানেমসহ অনেক অর্থনীতিবিদও অর্থমন্ত্রী এই প্রস্তাবের সমালোচনা করে এটাকে ‘অনৈতিক’ বলছেন। এর ফলে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন এবং দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি সরকারি দলের অনেক এমপিও কোনো প্রশ্ন ছাড়া নামমাত্র কর দিয়ে পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার সুযোগ দেয়ার সমালোচনা করছেন।

এ অবস্থায় দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ বিষয়টিতে সমর্থন দিল।

আমদানি-রপ্তানির আড়ালে ওভার ইনভয়েসিং-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়। দেশের আমদানি-রপ্তানির সিংহভাগই করে থাকেন পোশাক শিল্পমালিকরা। এই পাচার বন্ধে বিজিএমইএ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘অর্থ পাচার শুধু ওভার ইনভয়েসিং-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে হয় না। নানা প্রক্রিয়ায় হয়। অর্থ পাচার বন্ধে সরকার যে ব্যবস্থা নেবে বিজিএমইএ তাকে সমর্থন করবে।’

উৎসে কর ০.৫০ শতাংশ বহাল রাখার দাবি

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান পোশাক রপ্তানির উপর উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ বহাল রাখার দাবি জানান।

নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী পোশাক রপ্তানির উপর উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘পোশাক রপ্তানির উপর উৎসে কর ১ শতাংশ করা হলে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শিল্পের জন্য অত্যন্ত দুরুহ হবে; যখন কিনা শিল্প মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমরা মনে করি কর বাড়ানোর জন্য এটি সঠিক সময় নয়। বর্তমানে অস্থিরতাময় বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি আমাদের পোশাক শিল্পের জন্যও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

‘আমরা মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই উৎসে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব পোশাক শিল্পের টিকে থাকার সংগ্রামটি আরও কঠিন করে তুলবে।

‘তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাক শিল্পে উৎসে কর বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থায় রাখার বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী সুবিবেচনায় রাখবেন। আমাদের একান্ত অনুরোধ, রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য দশমিক ৫০ শতাংশ উৎসে কর আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখলে শিল্পটি বর্তমান সংকটকালে স্বস্তিতে থাকবে।’

সেইসঙ্গে নন-কটন খাতে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে নন-কটন পোশাক রপ্তানির উপর ১০ শতাংশ হারে বিশেষ প্রনোদনা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান তিনি।

রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সহাসভাপতি শহীদউল্লাহ আজিমসহ সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর