বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লালমনিরহাটে খড়ের দামে কৃষকের মুখে হাসি, খামারিরা বিপাকে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:৩৮

লালমনিরহাটে সম্প্রতি ধানের খড়ের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটলেও গবাদিপশু খামারিরা পড়েছেন বিপাকে। মৌসুম শেষে ধান ও খড় ঘরে তোলার পর অবশিষ্ট খড় সংরক্ষণ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে ভালো লাভ করছেন কৃষকরা।তবে খামারিদের অভিযোগ, খড়ের এই অস্বাভাবিক দামের কারণে গবাদিপশুর খাবার জোগাড়ে এখন অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।জানা গেছে, বর্তমানে ১০০ আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, আর ১ হাজার আঁটির দাম দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। কিছুদিন আগেও প্রতি আঁটির দাম ছিল মাত্র ৩ থেকে ৪ টাকা। খামারিদের আশঙ্কা, কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতি আঁটির দাম ৯–১০ টাকায় পৌঁছাতে পারে। শুধু খড় নয়, ভুসি, চালের গুঁড়া ও অন্যান্য পশুখাদ্যের দামও বেড়ে গেছে, ফলে গবাদিপশু পালন ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ধানের খড় গরুর অন্যতম প্রধান খাদ্য উপাদান। সাধারণত খড় কেটে ভুসি ও চালের গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়, যা তাদের পুষ্টি ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। তাই খামারিরা সারা বছর খড় সংরক্ষণ করে রাখেন। কিন্তু সাম্প্রতিক খড়ের সংকট ও দাম বৃদ্ধিতে খাদ্য জোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আবু সালাম আলী বলেন,“আমার গোয়ালে দুটি বাছুর ও একটি গরু আছে। আগে প্রতি আঁটি খড় ২–৩ টাকায় পেতাম, এখন বাজারে ৮ টাকায় কিনতে হচ্ছে। খড়ের এমন দামে গরু পালন করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে, বিক্রিও করতে পারছি না।”তিস্তা পাড়ের কৃষক আব্দুল ইসলাম বলেন,“গত দুই–তিন মৌসুমে খড়ের সংকট বেড়েছে। আগে হাতে ধান মাড়াই হতো, তাই খড় অক্ষত থাকত। এখন আধুনিক যন্ত্রে ধান মাড়াই ও আকস্মিক বন্যার কারণে অনেক খড় নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাংস ও দুধ উৎপাদনেও প্রভাব পড়বে।”পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিন বিঘা জমি থেকে তিনি ৩ হাজার ৬০০ আঁটি খড় সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করেছেন।“প্রতি আঁটি ৬ টাকায় বিক্রি করেছি, মোট পেয়েছি প্রায় ২১ হাজার ৬০০ টাকা। ধানের পাশাপাশি খড়ের ভালো দাম পেয়ে বেশ সন্তুষ্ট,” বলেন তিনি।বড়বাড়ী বাজারের খুচরা খড় বিক্রেতা ইব্রাহিম আলী জানান,“মৌসুমে গ্রামের কৃষকের কাছ থেকে প্রতি আঁটি খড় ২–৩ টাকায় কিনি। এখন বাজারে দাম বেড়ে বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে। এই ব্যবসায় এখন সন্তোষজনক আয় করছি।”জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,“খড়ের দাম বেড়ে কৃষকরা লাভবান হলেও খামারিরা সমস্যায় পড়েছেন। উন্নতমানের ঘাস চাষ ও খড় সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে খামারিরা খরচ কমাতে পারবেন। এতে গবাদিপশুর পুষ্টি নিশ্চিতের পাশাপাশি দুধ ও মাংস উৎপাদনও বাড়বে।”

এ বিভাগের আরো খবর