বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বেদনার অভিজ্ঞতার পরও নতুন শেয়ারে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ

  •    
  • ৩ মার্চ, ২০২১ ০৮:৫৮

ইজেনারেশনের আইপিওতে যারা ৫ হাজার টাকায় ৫০০ শেয়ার পেয়েছেন, তাদের সেই শেয়ারের দর এখন ১৬ হাজার ৩৫০ টাকা। টানা ছয় কার্যদিবস সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ার দর। এর আগেও বেশ কয়েকটি নতুন কোম্পানির ক্ষেত্রে এভাবে ক্রমাগত দর বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে। পরে অনেকগুলোর দাম অর্ধেকে নেমে আসায় বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

আবার নতুন শেয়ার নিয়ে হুলুস্থুল। তালিকাভুক্তির পর টানা ছয় কার্যদিবস সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে অভিহিত মূল্যের তিন গুণ হয়ে গেল ইজেনারেশনের শেয়ারের দর।

নতুন শেয়ার তালিকাভুক্ত হলে প্রথম দুই দিন ৫০ শতাংশ এবং এর পরে বাড়তে বা কমতে পারে ১০ শতাংশ করে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই কোম্পানিটির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে। প্রথম দিন ৫০ শতাংশ হিসেবে বেড়ে সেটি হয় ১৫ টাকা। দ্বিতীয় দিন আরও ৫০ শতাংশ বেড়ে দাম হয় ২২ টাকা ৫০ পয়সা।

তৃতীয় দিন থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়তে থাকে দাম। তৃতীয় কার্যদিবসে দাম হয় ২৪ টাকা ৭০ পয়সা। চতুর্থ কার্যদিবসে দাম দাঁড়ায় ২৭ টাকা ১০ পয়সা। আর পঞ্চম কার্যদিবসে দাম দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৮০ পয়সা। ষষ্ঠ কার্যদিবসে মঙ্গলবার আবার সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির প্রান্তসীমা ছুঁয়ে দর দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৭০ পয়সা।

আইপিওতে ৫ হাজার টাকায় যারা ৫০০ শেয়ার পেয়েছিলেন, এখন তাদের এই শেয়ারের দাম ১৬ হাজার ৩৫০ টাকা।

নতুন শেয়ারের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে এভাবে দিনের পর দিন সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি রবির ক্ষেত্রে। টানা ১৪ কার্যদিবস বেড়ে শেয়ারটির দাম ৭৭ টাকা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের ভুল বিবেচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই শেয়ারটির দাম কমতে কমতে একপর্যায়ে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। এখন কিছুটা বেড়ে দাম ৪৬ টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে।

রবির পর ক্রমাগত বাড়তে থাকা নতুন শেয়ার এনার্জিপ্যাকও বিনিয়োগকারীদের হতাশার আরেক নাম। ৩১ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার দরও টানা ছয় দিন সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ১০১ টাকা ৮০ পয়সায় উঠেছিল।

এরপর আবার টানা পতন হতে হতে শেয়ারদর নেমে আসে ৪৬ টাকা ১০ পয়সায়। এখন কিছু বেড়ে তা হয়েছে ৫১ টাকা ৭০ পয়সা।

তৃতীয় যে শেয়ারটি বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান করিয়েছে, সেটি হলো মীর আকতার হোসেন লিমিটেড।

৫৪ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর দ্বিতীয় কার্যদিবসে উঠে যায় ১১৭ টাকায়। এরপর কমতে কমতে তা নামে ৭৩ টাকা ৬০ পয়সায়। এরপর কিছুটা বেড়ে এখন দাম দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা ৩০ পয়সা।

আরেক নতুন শেয়ার তাওফিকা অ্যাগ্রোতেও লোকসান করিয়েছে বহু বিনিয়োগকারী। টানা চার কার্যদিবস বেড়ে ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত শেয়ারের দর একপর্যায়ে উঠে ২৭ টাকা ১০ পয়সা পর্যন্ত। পরে তা আবার নামতে থাকে।

২১ টাকা ৪০ পয়সায় নামার পর অবশ্য আবার ওঠে। মঙ্গলবার দাম দাঁড়ায় ২৪ টাকা ৪০ পয়সা।

১০ টাকায় তালিকাভুক্ত এক্সপ্রেস ইনস্যুরেন্সের শেয়ারদরও একপর্যায়ে বেড়ে হয় ৪৫ টাকা ৯০ পয়সা। সেটির দর কমে এখন ২৬ টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে।

ডমিনোজ স্টিলের দরও ১০ টাকা থেকে ৪৩ টাকা ৩০ পয়সায় উঠতে যেমন সময় লাগেনি, তেমনি ২৪ টাকা ১০ পয়সায় নেমেছেও কম সময়েই।

এভাবে একের পর এক টাকা হারানোর নির্মম বেদনার পরও নতুন শেয়ার পেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে আইপিও শেয়ার পেয়েছেন তারা শেয়ার বিক্রি করবে কি করবে না তাদের বিষয়। কিন্তু এখন কারা লাখ লাখ শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন সেটা যাচাই করে উচিত।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকে অল্প শেয়ার। তারা সেগুলো নিয়ে খুব বেশি কারসাজি করতে পারে না। বেশি শেয়ার থাকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। তাদের শেয়ার লক করে দিলেই এমন অবস্থার পরিবর্তন হবে।

তিনি বলেন, ‘আইপিও শেয়ার থেকে সবাই মুনাফা পেতে চায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন দেখে অনেকে শেয়ার কিনতে আগ্রহী তখন তারাও শেয়ার বিক্রি করে না। প্রাতিষ্ঠানিকদের শেয়ার লক থাকলে তারাও তখন আইপিও শেয়ার থেকে মুনাফা করার চেষ্টা করবে না।’

ইজেনারেশন লিমিটেডের আর্থিক অবস্থা

প্রতিষ্ঠানটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর ’২০-ডিসেম্বর ’২০) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ৮ পয়সা।

কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৫৩ পয়সা।

একই সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৯২ পয়সা। আর আইপিও-পরবর্তী শেয়ার হিসাবে কোম্পানির এনএভি হয়েছে ২০ টাকা ৩৪ পয়সা।

কোম্পানির বক্তব্য

টানা ছয় দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ইজেনারেশন লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকতা (সিএফও) মো. মাজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন কোনো অপ্রকাশিত তথ্য নেই, যা জানানো হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করছি আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে। করোনা মহামারি অনেকের কাছে ক্ষতির কারণ হলেও আমাদের ব্যবসা সফল হয়েছে।’

তিনি বলেন, আমাদের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় কিছুটা কমেছে, কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি সেটিকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে।’

এ বিভাগের আরো খবর