বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অস্থিতিশীলতা নয়, দরকার স্থিতিশীল পরিবর্তন

  • সম্পাদকীয়   
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:৪৬

বাংলাদেশ আজ এমন এক সময়ের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করছে, যাকে সহজভাবে বলা যায়- ‘ইতিহাসের মোড়।’ জুলাই আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অঙ্গন, রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে যে রূপান্তর ঘটেছে, তা আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। একইসাথে, সেই সম্ভাবনার ভেতরেই লুকিয়ে আছে নানা শঙ্কা। আমরা কেউই কোনো অস্থিতিশীলতা কামনা করি না। প্রশ্ন হলোÑআমরা কোন পথে হাঁটব? পরিবর্তনের পথে? নাকি অস্থিতিশীলতার পথে? গত এক সপ্তাহের সংবাদপত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, এই প্রশ্ন এখন কেবল রাজনীতিবিদদের নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের মনে।

জুলাই আন্দোলনকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় বাঁক বলা যায়। এটি কেবল একটি সরকারের পতন ঘটায়নি, বরং দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা অসন্তোষ ও ক্ষোভকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। মানুষ নেমেছিল রাজপথে, দাবি ছিল ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আন্দোলনের পরপরই প্রশ্ন উঠছে- এই অর্জন কি টেকসই হবে? ইতিহাসে আমরা দেখেছি, আন্দোলনের পর আস্থা না ফিরলে পরিবর্তন ভেঙে পড়ে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতার পরপর রাজনৈতিক বিভাজন এবং আস্থার সংকট দেশকে বিপর্যস্ত করে তোলে। একইভাবে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম কয়েক বছরে গণতন্ত্র নিয়ে আশাবাদ থাকলেও পরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ও বিরোধী দলের অনুপস্থিতি সেই আস্থাকে ক্ষয় করেছে।

আজকের আন্দোলনের ক্ষেত্রেও একই শঙ্কা সামনে এসেছে- যদি আস্থা ফিরিয়ে আনা না যায়, তবে পরিবর্তনের শক্তি আবারও দুর্বল হয়ে যাবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে আরেকটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছেÑ‘ষড়যন্ত্র’ নিয়ে নানা বক্তব্য। এক পক্ষ বলছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ মহল সক্রিয়। অন্য পক্ষ বলছে, সরকারের ভেতরের অদৃশ্য শক্তিই স্থিতিশীলতার পথে বাঁধা। এ ধরনের পারস্পরিক সন্দেহ সমাজকে বিভক্ত করছে।

এখানে আন্তর্জাতিক উদাহরণ টানা যায়। আরব বসন্তের সময় মিসর ও লিবিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছিল। কিন্তু আন্দোলনের পর বিভাজন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এতটাই বেড়ে যায় যে, কয়েক বছরের মধ্যে দেশগুলো আবারও অরাজকতার দিকে চলে যায়। মিসরে সেনাশাসন ফিরে আসে, লিবিয়া এখনো গৃহযুদ্ধ থেকে বের হতে পারেনি। বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা হলো- শুধু আন্দোলন যথেষ্ট নয়, আন্দোলনের পর স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করাই সবচেয়ে বড় কাজ।

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝেই এসেছে একটি সুখবরÑবাংলাদেশ জাতিসংঘের শর্ত পূরণ করে ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক অর্জন। স্বাধীনতার পর যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা হয়েছিল, সেই দেশ এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে উন্নয়নশীল হিসেবে।

কিন্তু একইসাথে, সাধারণ মানুষের জীবনে চাপ বাড়ছে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া, বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থানের সংকট তীব্র। তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ বেকার। গ্র্যাজুয়েট বেকারত্ব দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বলেÑঅর্থনৈতিক অর্জন তখনই স্থায়ী হয়, যখন তা মানুষের জীবনে প্রতিফলিত হয়। ভুটান উদাহরণ হতে পারে- সেখানে জিডিপি দিয়ে নয়, বরং ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’ দিয়ে উন্নয়ন পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ মানুষের জীবনযাত্রার মান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সম্প্রীতি- এসবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশ যদি শুধুমাত্র ‘LDC থেকে উত্তরণ’ কে গর্বের বিষয় বানায়, অথচ মানুষের দৈনন্দিন কষ্ট কমাতে না পারে, তবে সেই উত্তরণ অর্থহীন হয়ে পড়বে।

আজকের বাংলাদেশে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশাল প্রভাব ফেলছে। জনগণ দ্রুত খবর পাচ্ছে, কিন্তু একইসাথে গুজব ও বিভ্রান্তিও দ্রুত ছড়াচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি, অনেক ভুয়া খবর মুহূর্তের মধ্যে হাজারো মানুষকে প্রভাবিত করেছে। তাই গণমাধ্যমের দায়িত্ব এখন আগের চেয়ে বেশি। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন পোর্টালকে দায়িত্বশীল হতে হবে। সত্য সংবাদ প্রচার, গুজব প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশের মাধ্যমেই আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো সংলাপের অভাব। বিরোধী দল ও সরকার একসাথে বসে সমস্যার সমাধান করতে অনীহা প্রকাশ করে। ফলে দ্বন্দ্ব অস্থিরতায় পরিণত হয়। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়েছিল। এটি একটি ইতিবাচক নজির। কিন্তু ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনগুলোতে বিরোধী দল অনুপস্থিত থাকায় গণতন্ত্র দুর্বল হয়েছে, অস্থিরতা বেড়েছে। আজকের প্রেক্ষাপটে তাই সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে তোলা। সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমÑসবাইকে মিলেই একটি জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে।

এক্ষেত্রে বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। সেগুলো হলো-১. স্বচ্ছ নির্বাচন: স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া এবং সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; ২. ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা: অতীতের অপরাধ ও দুর্নীতির বিচার দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে করতে হবে; ৩. অর্থনৈতিক সমতা: উন্নয়ন যেন কেবল পরিসংখ্যানে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং মানুষের জীবনে প্রতিফলিত হয়।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীয়তে ‘অস্থিতিশীলতা কাম্য নয়’ শিরোনামের এই কথাটি আজ শুধু একটি সম্পাদকীয়র সতর্কবার্তা নয়, বরং পুরো জাতির আকাঙ্ক্ষা। মানুষ পরিবর্তন চায়, কিন্তু সেই পরিবর্তন যেন অরাজকতা, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় না গড়ায়। পরিবর্তন হোক ন্যায়নিষ্ঠ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক। বাংলাদেশের ইতিহাসে অস্থিরতা বারবার আমাদের উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে। এবার আমাদের সামনে সুযোগ আছে ভিন্ন ইতিহাস লেখার। যদি আমরা আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারি, এবং অর্থনীতিকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারি, তবে এই পরিবর্তন সত্যিই স্থিতিশীল হবে।

কারণ উন্নয়ন মানে শুধু অর্থনৈতিক সূচক নয়, উন্নয়ন মানে মানুষের আস্থা, ন্যায়বিচার ও শান্তি। আর সেখানেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আজকের বৈশ্বিক আলোচনায় একটি বড় প্রশ্ন সামনে এসেছে। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন, কোন দেশ গণতন্ত্রের মডেল হতে পারে? একসময় ইউরোপ এবং আমেরিকা ছিল বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি কিংবা সুইডেনকে দেখে অনেক দেশ ভেবেছিল- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা একসঙ্গে এগোতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হতো ‘গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা’। আর এখন কেনেথ ভোগেলের মতো বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডমোক্র্যাসি’কে বলেন ‘ডলারোক্র্যাসি’। রাতারাতি এখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কীভাবে হুমকির মুখে পড়তে পারে, সেটি বিশ্বেও বিভন্ন রাষ্ট্র দেখে অনুমান করা যায়। ইউরোপও আজ আর সেই শক্তি বা আত্মবিশ্বাস দেখাতে পারছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভ্যন্তরীণ বিভাজনে জর্জরিত, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডের মতো দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে, আর রাশিয়া ও চীনের কর্তৃত্ববাদী শাসন গর্বের সঙ্গে বিশ্বে বিকল্প বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তাহলে আজকের তরুণেরা গণতান্ত্রিক রোল মডেল খুঁজবে কোথায়? আশ্চর্যের বিষয়, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো রাষ্ট্র আমাদের শেখাচ্ছে যে কঠিন বাস্তবতার মাঝেও গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে। জ্যাকব জুমা বা জাইর বলসোনারোর মতো নেতাদের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা সত্ত্বেও জনগণের গণতান্ত্রিক চেতনা ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিরোধ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলকে আবারো সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছে। তাইওয়ান, উরুগুয়ে, মরিশাস কিংবা বতসোয়ানার মতো ছোট দেশও প্রমাণ করছে, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা বা ভৌগোলিক দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী রাখা সম্ভব।

এখন প্রশ্ন, বাংলাদেশ কোথায় দাঁড়িয়ে? স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আকাক্সক্ষা নিয়ে পথচলা শুরু করলেও বারবার হোঁচট খেয়েছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচন ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে আসে এবং মানুষ নতুন আশা নিয়ে ভোট দেয়। কিন্তু সমস্যা এখানেই শেষ হয়নি। পরবর্তী তিন দশকেও বাংলাদেশের গণতন্ত্র আস্থার জায়গায় পৌঁছায়নি। দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরকে শত্রু হিসেবে দেখে রাজনীতিকে শূন্য-যোগের খেলায় পরিণত করেছে। নির্বাচনী অনিয়ম, সহিংসতা, প্রশাসনিক পক্ষপাত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা গণতন্ত্রের মেরুদণ্ডকে দুর্বল করেছে। ২০০৭-০৮ সালের জরুরি অবস্থা দেখিয়েছে, রাজনৈতিক সংকট কতটা ভয়াবহ হতে পারে। সেই সময়ে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেয় এবং গণতন্ত্র সাময়িকভাবে স্থগিত হয়। যদিও ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও গণতন্ত্রে ফেরা হয়, কিন্তু এরপরের কয়েকটি নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থেকে গেছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন যেখানে অধিকাংশ দল অংশ নেয়নি, অথবা ২০১৮ সালের নির্বাচন যেখানে ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এসব ঘটনা গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়েছে।

তবুও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক দিকও আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এখনো মানুষের রক্তে প্রবাহিত। দেশের তরুণ প্রজন্ম গণতন্ত্র, অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি আগ্রহী। সিভিল সোসাইটি, সাংবাদিক, মানবাধিকার সংগঠন এবং শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখনো গণতন্ত্রের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া যেমন নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, তেমনি তরুণ প্রজন্মের জন্য গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরির স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে গণতন্ত্রকে টেকসই করতে বড় কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। প্রথমত, দুর্বল প্রতিষ্ঠান: নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থা ও গণমাধ্যম প্রভাবমুক্ত হতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, দলীয় সংস্কৃতির আধিপত্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থকে জনগণের চেয়ে অগ্রাধিকার দেয়। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক বৈষম্য একদিকে ধনী শ্রেণি ক্ষমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ, অন্যদিকে দরিদ্র জনগণ বঞ্চিত থাকে। চতুর্থত, রাজনৈতিক সহিংসতা ও প্রতিহিংসা যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ধ্বংস করা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণেই গণতন্ত্র কেবল আইন বা নির্বাচনের মাধ্যমে সীমিত থাকে, বাস্তব জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে না।

বিশ্ব যখন গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণে ভুগছে, তখন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদি বাংলাদেশ একটি সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে, তবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে এটি একটি নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে। পাকিস্তান যেখানে বারবার সামরিক হস্তক্ষেপে বিপর্যস্ত, আর শ্রীলঙ্কা যেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে, সেখানে বাংলাদেশ যদি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে পারে, তবে এটি শুধু দেশের ভেতরে নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্য একটি আলোকবর্তিকা হতে পারে।

লেখক: ড. সুলতান মাহমুদ রানা, অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিভাগের আরো খবর