বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশের পলির অবস্থা, উৎস, প্রভাব ও ফলাফল

  • সম্পাদকীয়   
  • ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:৫১

গ্যাবেন মালয়েশিয়ার পাহাং স্ট্যাটের একটি শহর। যেখানে বিভিন্ন প্রকারের শিল্প রয়েছে। আর তানগুক নদী ঐ শিল্পাঞ্চলের পাশ দিয়া বয়ে যাওয়া এক নদী। যেটি শিল্পের বর্জ্য ও বর্জ্যপানি ফেলে নদীর পানি ও পলি দূষিত করে থাকে। সাধারণত: পলিসমূহ (সেডিমেন্টস) দূষিত হয় শিল্প এবং শিল্পের বর্জ্য ও বর্জ্যপানির মাধ্যমে। পলি দূষণের বড় ক্ষতিকর দিক হলো জলজ প্রাণী কর্তৃক পলি ভঙ্গন এবং খাদ্যচক্রে দূষকের অনুপ্রবেশ। মানুষের অযাচিত কার্যক্রমের প্রভাব এবং শিলা ও খনিজ (প্যারেন্ট ম্যাটেরিয়াল) থেকে আসা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ এবং অবক্ষয় প্রক্রিয়া (ওয়েদারিং) এর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে পলিতে হেভিমেটাল অর্থাৎ (As, Cd, Pb, Cr... প্রভৃতি) সঞ্চিত হয়ে থাকে। হেভিমেটাল দীর্ঘদিন প্রকৃতিতে থাকে এবং তার ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে অনেক গুরুত্ব পেয়ে থাকে। হেভিমেটালসমূহ সহজে রাসায়নিক ও জৈব প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করা যায় না। বর্তমান সময়ে মালয়েশিয়ায় হেভিমেটালের দূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এখন আসা যাক বাংলাদেশের পলি তথা সেডিমেন্টের স্ট্যাটাস বা অবস্থার বিষয়ে। বাংলাদেশের পলিসমূহ ও পলিসমূহের দূষণ নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন মর্মে এক বিজ্ঞানী মতামত পোষণ করেন। উক্ত বিজ্ঞানী অবশ্য বলছিলেন সেডিমেন্ট স্যামপিলিং (Sampling) একটা সমস্যা। উচ্চতর গবেষণায় সেডিমেন্ট নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সেডিমেন্ট স্যামপিলিং খুবই সহজ এবং এতে খুবই কম খরচ হয়ে থাকে। এমনকি বলতে গেলে যাতায়াত খরচ ছাড়া কোন খরচই হয় না। তাছাড়া সেডিমেন্টের ইন-সিটু (In-Situ) কোনো প্যারামিটার নির্ণয় না করলেও চলে। আর কেবল PH ও EC নির্ণয়ের জন্য সহজে বহন যোগ্য এবং কম খরচের ইক্যুইপমেন্ট নেয়া যেতে পারে অথবা এক প্রকারের কলমের মত একটি ইক্যুইপমেন্ট আছে যার দ্বারা PH ও EC দুটিই নির্ণয় করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাংলাদেশের নদী বা অন্যান্য পলি নিয়ে তেমন কোন গবেষণা হয় নাই। কোনো বই বা প্রকাশিত জার্নাল পেপারও পাওয়া যায় না বা প্রকাশিত হয় নাই। এতদভিন্ন, এ বিষয়ে অনেক গবেষণা বা কাজ করার সুযোগ রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ঠদের এদিকে একটু দৃষ্টি দেয়া উচিত মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। এতদভিন্ন, পলি দূষণের উৎস্যসমূহ খুঁজে বের করতে হবে এবং প্রয়োজনে দূষণের সংগে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্য আমাদের দেশের শিল্প কারখানার পার্শ্বের নদী, জলাশয় এবং অন্যান্য জলাশয় এর পলি পরীক্ষা করা ও দূষণ নিয়ে কাজ করা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ।

তানগুক নদীর পলি দূষণ ও পলির অবস্থা:

তানগুক নদীর পলির আর্সেনিক, কোবাল্ট, ক্রোমিয়ায়, বেরিয়াম, নিকেল, জিংক, কপার, মারকারী ও লেড এর মাত্রা নির্ণয়ের লক্ষ্যে ৯টি স্থান থেকে পলির নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। বিশ্লেষিত ফলাফলে হেভিমেটালসমূহের কতকগুলো স্টেশন বা স্থানের নমুনার পরিমাণ অনুমোদিত মাত্রা থেকে বেশি এবং কয়েকটি অনুমোদিত মাত্রার কাছাকাছি পাওয়া যায়।

১) আর্সেনিক (As) দূষণ : বিশ্লেষিত নমুনায় আর্সেনিকের পরিমাণ পাওয়া যায় ২.৫৫ থেকে ২৪.৬৭ মিলিগ্রাম/গ্রাম এবং যাদের গড় মান ছিল ১০.২২ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। সর্বোচ্চ মাত্রায় আর্সেনিকের পরিমাণ ছিল ২৪.৬৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। যা অনুমোদিত মাত্রার থেকে তিনগুনেরও বেশি এবং গড় মানের আর্সেনিকের মানও ছিলো অনুমোদিত মাত্রা থেকে বেশি (সূত্র: ক্যানাডিয়াম সেডিমেন্টস গাইডলাইন)। অপরদিকে সব থেকে কম পরিমাণ অর্থাৎ ২.৫৫ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম আর্সেনিক পাওয়া যায় একটি স্টেশনের পলিতে। যা কম সতর্ক মাত্রা (Low Alert Level) এর থেকেও বেশি।

২) কোবাল্ট (Co) দূষণ: তানগুক নদীর পলির নমুনায় কোবাল্টের পরিমাপ পাওয়া যায় ০.১৩ থেকে ১৩৮৩.৮৫ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম এবং গড় মান পাওয়া যায় ৪৯২.৭৪ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। প্রাপ্ত ফলাফল থেকে দেখা যায়, যে তাংগুক নদীর পলির গড় মান অনুমোদিত মাত্রা থেকে বেশি এবং সর্বোচ্চ মানটি অনুমোদিত মাত্রা থেকে ৭০ গুন বেশি। যা খুবই মারাত্মক ও ঝুঁকিপূর্ণ।

৩) মারকারী (Hg) দূষণ: গবেষণা দ্বারা মারকারী দূষণের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। পলির নমুনায় মারকারীর মাত্রা পাওয়া যায় ০.২১৮ থেকে ৪.৭৯৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম এবং গড় মান ছিলো ০.৯১৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। ৯ (নয়) টি স্টেশনের নমুনার সকল বিশ্লেষিত ফলাফলের মারকারী মাত্রা অনুমোদিত মাত্রা থেকে অনেক বেশি পাওয়া যায়। উপরুন্ত, সর্বোচ্চ মারকারী দূষণের পরিমান পাওয়া যায় অনুমোদিত মাত্রা থেকে ৩১.৯ গুন বেশি। যা অত্যন্ত বেশি এবং ঝুঁকিপূর্ণ।

৪) লেড (Pb) দূষণ: গবেষণায় ব্যবহৃত পলির নমুনার বিশ্লেষিত ফলাফলে লেড বা সীসা পাওয়া যায় ১.৬৮ থেকে ১১৫.২৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। সকল পলির নমুনার লেডের মাত্রা ‘কম সতর্ক মাত্রা’ অর্থাৎ ‘Low Alert Level’ এর উপরে পাওয়া যায়। এছাড়া সর্বোচ্চ লেডের মাত্রাটি লেড দূষণের অনুমোদিত মাত্রা থেকে ১৬ গুন বেশি বলে বিবেচিত। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও মারাত্মক।

৫) ক্রোমিয়াম (Cr) দূষণ: গবেষণায় ব্যবহৃত পলির নমুনার বিশ্লেষিত ফল থেকে ক্রোমিয়ামের মাত্রা ৮.৪৭ থেকে ২৫.১৮ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম এবং গড় মান পাওয়া যায় ১৭.৭৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ মান পাওয়া যায় ২৫.১৮ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম অথচ প্রাপ্ত নিম্নমান ছিল ৮.৪৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। সেডিমেন্ট কোয়ালিটি গাইডলাইন মোতাবেক বিশ্লেষিত ফলাফলের গড় মান ‘কম সতর্ক মাত্রা’ অর্থাৎ ‘Low Alert Level’ থেকে বেশি।

৬) বেরিয়াম (Ba) দূষণ: গবেষণার পলির বিশ্লেষিত ফলাফলে বেরিয়ামের মাত্রা ৫.৯৩ থেকে ১২৫.৬৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম পাওয়া যায়। তাছাড়া বেরিয়ামের গড় মাত্রা পাওয়া যায় ৪৬.৬৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। বেরিয়ামের এই গড় মান ‘কম সতর্ক মাত্রা’ বা ‘Low Alert Level’ এর বেশি।

৭) নিকেল (Ni) দূষণ: তানগুক নদীর পলির নমুনায় নিকেলের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম অর্থাৎ ০.৫০ থেকে ১৪.১৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। যার গড় মান ছিল ৩.৫৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। উপরুন্ত, গবেষণার পলির নমুনার নিকেলের গড় মান ‘কম সতর্ক মাত্রা’ বা ‘Low Alert Level’ এর বেশি।

৮) ক্যাডমিয়াম (Cd) দূষণ: গবেষণায় ব্যবহৃত পলির বিশ্লেষিত নমুনায় ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম মাত্রায় পাওয়া যায়। পলিতে ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ ০.০১ থেকে ০.২৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম এবং ক্যাডমিয়ামের গড় মান ছিল ০.০৮ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। সেডিমেন্ট কোয়ালিটি গাইডলাইন অনুসারে ৬টি স্থানের পলির নমুনায় ক্যাডমিয়ামের মাত্রা ‘কম সতর্ক মাত্রা’ অর্থাৎ ‘Low Alert Level’ এর উপরে পাওয়া যায়।

৯) জিংক (Zn) দূষণ: গবেষণায় ব্যবহৃত পলির নমুনার বিশ্লেষিত ফলাফলে জিংকের মাত্রা ২.৭১ থেকে ৬৩.৬৩ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম পাওয়া যায়। উপরুন্ত, নমুনার পলিতে জিংকের গড় মান পাওয়া যায় ৩০.৭৯ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম। বিশ্লেষিত পলির জিংকের গড় মান ‘কম সতর্ক মাত্রা’ অর্থাৎ ‘Low Alert Level’ এর উপরে পাওয়া যায়।

১০) কপার দূষণ: তাংগুক নদীর বিশ্লেষিত পলির নমুনায় কপারের মাত্রা ০.৩৬ থেকে ১৭.২৪ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম এবং গড় মান ৬.৮৭ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম পাওয়া যায়। তিনটি স্টেশনের কপারের মাত্রা ‘কম সতর্ক মাত্রা’ বা ‘Low Alert Level’ এর উপরে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের পলির অবস্থা: একটি সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের শিতলক্ষ্যা ও তুরাগ নদীর পলিতে ক্রোমিয়ামের মাত্রা বেশি। আবার বুড়িগঙ্গা নদীর পলিতে লেড ও ক্যাডমিয়ামের মাত্রা অনুমোদিত মাত্রা থেকে বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া আর্সেনিক, জিংক ও কপারের পরিমাণও বেশি পাওয়া যায়। সেজন্য আমাদের দেশের পলিসমূহের নমুনা পরীক্ষা করে দূষণের মাত্রা জানা অতীব প্রয়োজন। কেননা জলজ প্রাণীর মাধ্যমে এ সকল হেভী মেটাল (আর্সেনিক, লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম... ইত্যাদি) ‘ফুড চেইনে’ চলে আসতে পারে।

বাংলাদেশের পলি (সেডিমেন্ট) এর হেভিমেটালের উৎসসমূহ:-

১) শিল্প নির্গত উৎস: বাংলাদেশের হাজারীবাগ ও সাভারের ট্যানারি শিল্প থেকে অপরিশোধিত (Unrefined) ক্রোমিয়াম, লেড এবং অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য সমৃদ্ধ বর্জ্য, ওয়েস্ট ওয়াটার (বর্জ্য পানি) ও এফলুয়েন্ট সরাসরি বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা প্রভৃতি নদীতে নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে মর্মে সূত্র থেকে জানা যায়।

২) কৃষিক্ষেত্র থেকে: এদেশে কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ রাসায়নিক সার, পেস্টিসাইড, ইনসেক্টিসাইড, হার্বিসাইড ব্যবহৃত হয়। বর্ষাকালে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার, পেস্টিসাইড, ইনসেক্টিসাইড ও হার্বিসাইডসমূহ বৃষ্টির পানিতে মিশে এবং ক্ষেত থেকে ঐগুলি ধূয়ে জলাশয়ে চলে যায় এবং সেগুলি পলির উপর পতিত হয়।

৩) শহর ও নগরীর বর্জ্য থেকে: ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, যশোর ও চট্টগ্রামের মতো বড় বড় নগরী থেকে প্রতিদিন ব্যাপক পরিমাণ কঠিন এবং তরল বর্জ ও বর্জপানি উৎপাদিত হয়। এদের অধিকাংশই অপরিশোধিত এবং সেগুলি বিভিন্ন জলাশয় ও নদীর পলিতে জমা হয়।

৪) জাহাজ ভাংগা কার্যাবলি: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জাহাজ ভাংগা শিল্প হলো বিশ্বের অন্যতম বড় জাহাজ ভাংগা শিল্প। এখান থেকে বিভিন্ন প্রকারের তৈল, রাসায়নিক দ্রব্য এবং হেভিমেটাল যেমন: লেড, মারকারী, অ্যাসবেসটাস ইত্যাদি সামুদ্রিক পলিতে মিশ্রিত হচ্ছে।

৫) প্রাকৃতিক জিওজেনিক উৎস: বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের একটা বড় অংশ হিমালয় ও উজান থেকে আসা শিলা, খনিজ, মৃত্তিকা ও পলি থেকে উৎপত্তি হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে হিমালয়ের শিলা ও খনিজে আর্সেনিক ও অন্যান্য ধাতু রয়েছে। উপরুন্ত, এগুলো বিভিন্ন কারণে ক্ষয় বা ভেংগে নদী দ্বারা প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

হেভিমেটালের প্রভাব এবং ফলাফল: দূষিত পলি এবং পলির হেভিমেটাল মানুষ, জলজউদ্ভিদ, জলজপ্রাণী, অন্যান্য উদ্ভিদ, অন্যান্য প্রাণী, খাদ্য ও অনুজীবে বিষক্রিয়া ঘটায়। তাছাড়া দূষিত পলি জলজ খাদ্য চক্র ব্যাহত করে এবং অনুজীবের আবাসস্থল ধ্বংস করে থাকে। তাছাড়া অতিমাত্রায় হেভিমেটাল সর্বক্ষেত্রে বিষাক্ততা ছড়ায় এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে।

১) মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি : হেভিমেটাল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ভাবেই মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে থাকে। প্রথমত: মানুষ সরাসরি ত্বকের মাধ্যমে হেভিমেটাল দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া পলি ও পলির পানি দ্বারা শিশুরা ও মৎস্যজীবীরা সহজেই হেভিমেটাল দূষণের প্রত্যক্ষ শিকার হয়ে থাকে। আর পরোক্ষভাবে: হেভিমেটাল সমূহ জলজপ্রাণী যেমন: মাছ, শামুক, ঝিনুক এবং ধান ও চালের মাধ্যমে মানুষের খাদ্যচক্রে চলে আসে। পূন: পূন: হেভিমেটালের সংস্পর্শ ও শরীরে অনুপ্রবেশের ফলে ক্যানসার, কিউনি ড্যামেজ, ত্বকের ক্ষত, শ্বাস-কষ্ঠ, স্নায়বিক ব্যাধি প্রভৃতি হতে পারে।

২) পানির গুনাগুনের অবনতি: পলি থেকে দূষকসমূহ পানিতে মিশে যায় এবং খাবার পানি, কৃষিতে ও অন্যান্য ব্যবহার্য পানি এবং পানি প্রবাহে চলে আসে ও পানির বিশুদ্ধকরণে বড় অন্তরায় সৃষ্টি করে।

৩) জীবন ও জীবিকার উপর প্রভাব: পলি দূষণ মাছ, খাদ্যদ্রব্য, জলজপ্রাণী ও কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে মানুষের জীবন ও জীবিকা অর্থাৎ খাদ্য, কর্মসংস্থান ও কাজের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। পলির দূষণ খাদ্যের উৎপাদনকে হ্রাস করে এবং কৃষি জমিকে অনুর্বর করে তোলে।

বর্তমান বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর পরিবেশের কমপোনেন্ট বা উৎপাদনসমূহ অর্থাৎ পানি, বাতাস, শব্দ, মৃত্তিকা, পলি ইত্যাদি ক্রমাগতভাবে দূষিত হচ্ছে। তাছাড়া মানুষের অযাচিত আচরণের কারনে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ হচ্ছে। ফলসরুপ বৈষিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বরফ গলন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি সৃষ্টি হচ্ছে এবং যার ফলে, মানুষ, প্রাণীকূল, উদ্ভিদ, জলজপ্রাণী, অনুজীব, ফোনা ও ফ্লোরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যা এ সুন্দর পৃথিবীকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

লেখক: কমান্ড্যান্ট (অ্যাডিশনাল ডিআইজি), পরিবেশ বিজ্ঞানী

পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল (পিএসটিএস), বেতবুনিয়া, রাঙ্গামাটি

এ বিভাগের আরো খবর