বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিরাপদ ও বাসযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশ

  • শাওন মাহমুদ   
  • ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ১৬:০১

একটি পদ্মা সেতু হবার আগে এবং আরেকটি হবার পর। পরিষ্কার বুঝলাম, পদ্মা সেতু শুধু সহজ যোগাযোগ নয়, সময়, শ্রম, আরাম এবং পকেটের নিরাপত্তা দিচ্ছে। আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষের পথের খরচ তিনভাগ থেকে এক ভাগে নিয়ে এসেছে।

বছর দশেক আগের কথা। আমার শ্বশুর বাড়ি খুলনা থেকে হঠাৎ এক মধ্য রাতে খবর আসলো আমাদের প্রিয় একমাত্র মুরব্বি মনসুর কাক্কু মারা গেছেন। আমরা জানালাম যে আমরা রওনা দিচ্ছি। সে সময়ে খুব সহজে দ্রুত খুলনায় পৌঁছানো যেতো না। সকাল হতে তখনও দেরি। বহু কষ্টে এক চেনা মানুষকে ধরে একটা ভাড়া গাড়ি নেয়া হলো। শেষ রাতেই আমরা রওনা দিলাম।

সময় মত মাওয়া ঘাটে পৌঁছাতে পারলেও, ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে করতে দুপুর প্রায়। ফেরি পার হয়ে খুলনা পৌঁছাতে আমাদের বিকেল হয়ে গিয়েছিল। কাক্কুর দাফন হলো আসরের নামাজের পর। গাড়ি রাতেই ফেরত দিতে হবে বিধায়, সন্ধ্যা নামার আগেই রওনা হতে হয়েছিল। ঢাকায় ফিরতে ফিরতে মধ্য রাত। আমরা বাসায় ঢুকেছিলাম রাত দুটো থেকে তিনটার মধ্যে।

এ বছরের এপ্রিলে আবারও শ্বশুর বাড়ি খুলনা যাওয়া হয়েছিল। অবসকিওরের শো যেদিন, ঠিক সেই দিনেই সকাল দশটায়, এবার গ্রীনলাইনের বিশাল বাসে মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায় খুলনায় পৌঁছেছিলাম। দুপরের খাবার শেষে, আরাম করে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হলো। রাতে শ্বশুর বাড়ি থেকে আবারও সকাল দশটার বাসে ঢাকা রওনা হয়ে দুপুরে ঢাকায় মায়ের সাথে ভাত খেলাম। দুটো সময়ের কথা বললাম।

একটি পদ্মা সেতু হবার আগে এবং আরেকটি হবার পর। পরিষ্কার বুঝলাম, পদ্মা সেতু শুধু সহজ যোগাযোগ নয়, সময়, শ্রম, আরাম এবং পকেটের নিরাপত্তা দিচ্ছে। আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষের পথের খরচ তিনভাগ থেকে এক ভাগে নিয়ে এসেছে।

গত কয়েক বছর ধরে চারদিকে শুনছি, এতো উন্নয়নের জোয়ার শুধু দুর্নীতি প্রশ্রয়ের পথ। পদ্মা সেতু বা যমুনা সেতু করবার কি দরকার ছিল? এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা মেট্রোরেল করবার প্রয়োজনই ছিল না, যেখানে ঢাকার যানজটের সমাধান নেই। হাজার কোটি টাকা খরচ করে নতুন এয়ারপোর্টের দরকার কতটা ছিল? কর্নফুলী টানেলের কাজ কী? এমন শত শত প্রশ্ন বাতাসে ঘুড়ে বেড়ায়। অথচ সকলেই এই যোগাযোগ বা সুবিধাজনক ব্যবস্থাগুলোর সুবিধা ভোগ করছে প্রতি মুহূর্তে।

আমি খুব সাধারণ মানুষ এবং সাধারণ ভাবনা থেকে এই ধরনের উত্তর খুঁজে নিয়েছি। হ্যাঁ গত কয়েক বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে বহু গুণে। হয়তো পদ্মাসেতুর বালু, রড বা সিমেন্ট বেশি দরে সরবরাহ করে সাত পুরুষ থেকেও বেশি অর্থ আয় করেছেন তারা। আপনাদের কি মনে হয় না একবারও যে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সকল কালো ক্ষতগুলো সম্পর্কে ওয়াকেবহাল নন? আসলে কোথায় কিসের জন্য কতটা দুর্নীতি বা অতি ব্যয় হয়েছে, তার সবই তিনি জানেন।

মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী সবচেয়ে আগে যেটা জানেন, সেটা হচ্ছে, বিশ্বে ভৌগলিক মানচিত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও অত্যন্ত জরুরি অবস্থানে আছে। তিনদিকে স্থল, একদিকে জল। প্রতিবেশী যে কোন দেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষার মত আদান প্রদানের বিষয়গুলো, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হলে কখনও সহজ ভাবে সম্পন্ন হবে না। তাই তিনি নিজে ক্ষমতার সাথে বাজি ধরে দেশ জুড়ে নানাবিধ উন্নয়নের কাজে হাত দিয়েছেন।

পৃথিবী জুড়ে যুদ্ধ, করোনা, মহামারি, অর্থ সংকট, তেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ সব বিষয়গুলোকে মাথায় নিয়েই এই বাজিতে নিজের পুরো ক্ষমতা ঢেলে দিয়েছেন। তিনি আরো বেশি ভালো করে জানেন, তিনি ক্ষমতায় থাকার সময় উন্নয়নমূলক কাজগুলো সম্পন্ন করবার জন্য জনগণের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হবে। আবার অন্যদিকে এও জানেন, যারা দুর্নীতি করবার তারা তা করবেই। তবে তিনি একটি বিষয়ে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী। তা হচ্ছে আগামীর বাংলাদেশে এসব দুর্নীতিবাজরা ধুলায় উড়ে যাবে। স্থায়ী হবে প্রতিটি স্থাপনা, যোগাযোগ, চুক্তি সমূহ। আগামী প্রজন্ম এই সবগুলো সুবিধা দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে নির্ভয়ে উপভোগ করবেন।

যে কোন উন্নয়নশীল দেশের প্রথম শর্ত সে দেশের সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক অবস্থান। তাই শেখ হাসিনা দেশের ভবিষ্যতের জন্য নিজের বুদ্ধিমত্তা, ব্যক্তিত্ব, দেশপ্রেম দিয়ে সেই সমৃদ্ধির পথ পাকা করে যাচ্ছেন। এতে আগামীর বাংলাদেশ হবে আত্মনির্ভরশীল, নিরাপদ এবং বাসযোগ্য।

লেখক: শাওন মাহমুদ ।। শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা

এ বিভাগের আরো খবর