বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ফারেনহাইট ৪৫১’, ‘১৯৮৪’ ও আমরা

  •    
  • ১১ মার্চ, ২০২২ ১৪:০৯

চিরন্তন সত্যবাক্য, বই ছাড়া পৃথিবী জ্ঞানশূন্য, তবে প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, এ দেশের তরুণরা ততই বইবিমুখ হয়ে পড়ছে। ব্যাপারটা ভয়ংকর। এর মধ্যে আরও ভীতিকর ঘটনা ঘটছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে বই পড়া সেকেলে বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। তারা আলোচনায় তা-ই জাহির করছে। তারা অজ্ঞাতে ফারেনহাইট ৪৫১ সিনেমার শঙ্কা বাস্তবায়নে বহুবিধ কৌশল নিচ্ছে।

‘ফারেনহাইট ৪৫১’ প্রথমত একটি গ্রন্থ। আলোচিত উপন্যাসটির লেখক রে ব্র্যাডবারি। পরে একই নামে সিনেমা বানিয়েছেন ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো। এ সিনেমায় ভবিষ্যৎ আমেরিকার ডিসটোপিয়ান সোসাইটির চিত্রায়ণ হয়েছে।

ডিসটোপিয়া (Dystopia) বলতে এমন এক কাল্পনিক জায়গা বোঝায়, যেখানে মানব অস্তিত্বের অবস্থা সংকটাপন্ন বা নিপীড়িত। এমন এক পৃথিবী যেখানে সবকিছু ত্রুটিপূর্ণ, সবকিছুই ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত। সে পৃথিবী বা সমাজে মানুষ অমানবিক, ভয়ংকর, হতভাগ্য জীবনযাপন করে।

১৯৫৩ সালের ফারেনহাইট ৪৫১ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের আমেরিকা। সময়টা ছিল কমিউনিস্টবিরোধীদের প্রতাপের। বাজার টেলিভিশন নামের নয়া জাদুর বাক্সে উদ্ভাসিত। চোখের সামনে রুপালি পর্দা আর কানে লাগানো বেতার যন্ত্র।

গত শতাব্দীর মধ্যভাগের কোনো উপন্যাস বা সিনেমা বলা কিংবা আলোচনা শোনার ন্যূনতম আগ্রহ আমার নেই; ফারেনহাইট ৪৫১-এর মতো তুমুল বিখ্যাত হলেও না, তবে কেমন যেন ধ্বংস এবং সমূহ ধ্বংসের মিশেল পোড়া গন্ধ পাচ্ছি।

ফারেনহাইট ৪৫১ ফিল্মে ভবিষ্যৎ সোসাইটির কাল্পনিক দৃশ্যায়ন দুনিয়ায় শঙ্কার কাঁপন ধরিয়েছিল। শতাব্দী না পেরোতেই সেই তরঙ্গ আঘাত হানতে শুরু করল কি না এখন সেই প্রশ্নটি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। হাজার বছরে গড়া মনোজগতে কার যেন আধিপত্য, কোথা থেকে কে যেন বিস্তার করছে উপনিবেশ।

ওই সিনেমায় বই ছুড়ে ফেলে দিল সবাই। জান্তা সরকারের নির্দেশে স্বাধীন বই প্রকাশ নিষিদ্ধ হয়ে গেল। ফায়ার সার্ভিসকে কড়া নির্দেশ: ঘর বা লাইব্রেরির সব পুড়িয়ে ফেল। আগুন নেভানোর বদলে তাদের দায়িত্ব বর্তাল আগুন জ্বালানোয়।

সিনেমাটিতে দেখানো হয়, বই একটি অশ্লীল ব্যাপার এবং নিষিদ্ধ কর্মের অন্যতম। বই সংরক্ষক আসামি।

পাঠক নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, কী বলার পাঁয়তারা করছি। আপনি যা ভাবছেন, মোটেও তা নয়।

ডিসটোপিয়ান সোসাইটির সংজ্ঞাটাই বদলে দিয়েছে আজকের জনতা। জনগণ এখন আর নির্যাতিত নয়, টেকনোলজির দুনিয়ায় কোনো সরকারের স্বৈরাচারী বা ডিসটোপিয়ান রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ নেই; বরং জনতা আজ আত্মঘাতী।

ইউটোপীয় ব্যবস্থায়ও তারা আত্মহননে মরিয়া। আমজনতা আজ এতটাই শক্তিমান যে, তারা নিজেরাই গড়ে তুলছে ডিসটোপিয়ান ব্যবস্থা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একটু বলি। যতদূর জানা যায়, বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা পৃথিবীর দীর্ঘতম সময়ের গ্রন্থ উৎসব। এতে বই প্রকাশে কোনো বাধা নেই, বিধি-নিষেধ নেই। ইচ্ছেমতো মতপ্রকাশের অবারিত সুযোগ। ব্যাঙের ছাতার মতো সারি সারি স্টলে বইও প্রকাশ হয় ভুরি ভুরি।

যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে চেঁচামেচি করেন, বুঝতে হবে তারা আসলে কারা? তারা কী ধরনের মতপ্রকাশ করতে চান? রাজনৈতিক ভিন্নমত আজকাল শুধু সরকার পতনের আবদারে গিয়ে ঠেকেছে।

বাজেট নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করে পরামর্শ দিতে দেখি না; জ্বালানি ও ভোজ্যতেলের লাগামহীন মূল্য বাড়ার সিদ্ধান্তে ভিন্নমতের আওয়াজ শুনি না। কাঁটায় ভরা পুঁটি মাছও অনেকে কিনতে পারছে কি না, তা নিয়ে গলাবাজি নেই। মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে মিরপুর গোলচত্বর যেতে চার ঘণ্টার অভূতপূর্ব ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভিন্নমত দেখি না। শুধু সরকার পরিচালনায় ভিন্নমতের গোঙানি আজকাল বিরক্তিকরই ঠেকছে।

এ ছাড়া প্রগতি বা সভ্যতাবিরোধীদের মতপ্রকাশের আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, তাও আলোচনার বিষয়। আপাতত সেই তর্কে যাচ্ছি না।

এবারের মেলার মাঝামাঝি একদিন তথ্যকেন্দ্রের ঘোষণায় শুনলাম, আজ ৮৫০টি বই মেলায় এসেছে। শুনে অবাক হলেও উচ্ছ্বসিত হওয়ার যুক্তি খুঁজে পেলাম না। কারণ, মান নিয়ে বিরাট প্রশ্ন রয়ে গেছে। হন্যে হয়ে বই খুঁজেছি, এ দিন অবশেষে জীবনানন্দের কবিতার কথা নিয়ে ফিরেছি।

এর মধ্যে বৃহৎ পপুলেশনের মেলায় শর্ট স্যাম্পলিংয়ে একটি সার্ভে করেছি। স্যাম্পলিং ছিল ক্লাসিফায়েড র‌্যানডম। অনেকের মন খারাপ হবে বলে ফলটা পরে বলছি।

জরিপের ফল দেখে মনে প্রশ্ন জেগেছে, দেশের মানুষ করেটা কী! সবাই কি দুই ইঞ্চি বাই চার ইঞ্চির স্ক্রিনে বন্দি? মানুষ বই ছুড়ে ফেলে সারাক্ষণ কি তবে ইন্টারনেটের স্ক্রিনে?

এ পর্যায়ে চলে আসে জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের প্রসঙ্গ। ১৯৪৯ সালে লেখা এই উপন্যাসে অরওয়েল ১৯৮৪ সালের পৃথিবীর কথা কল্পনা করেছেন, যেখানে বাকস্বাধীনতার কোনো স্থান নেই এবং মানুষের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সরকার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

উপন্যাসে অরওয়েল বলেছেন, যুদ্ধই শান্তি। আর ব্র্যাডবেরির উপন্যাসে বলা হয়, বই মানুষের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এর ফলে মানুষের মনে দেখা দেয় নানা মত। অতএব, পোড়াও বই।

১৯৮৪তে এ-ও দেখা গেছে, সরকারের নির্দেশে পোড়ানো হচ্ছে বই। শুধু তিনটি বইয়ের অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। এগুলো হলো বাইবেল, ভার্জিনিয়া উলফের টু দ্য লাইট হাউস এবং মেলভিলের মবিডিক।

১৯৮৪-এর বিগ ব্রাদারের মনোবাসনা এ দেশের অধিকাংশ মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে। নানা মত, ভিন্নমত বা নয়া দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির দরকার কী? জনগণই বই ছুড়ে স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়েছে। সরকারের আর কী করার আছে!

দুনিয়ার তাবৎ বিদ্বান মনে করেন, সুখের পৃথিবী গড়তে বইয়ের বিকল্প কিছু নেই। অবিদ্বানও ব্যাপারটা অনুভব করেন, তবে সমস্যা কোথায়?

বাংলা একাডেমির বইমেলা প্রসঙ্গে খানিক বলে মূল কথায় ফিরছি। ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণে বটতলায় চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপত্তন করেন।

বইগুলো ছিল চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ (বর্তমান মুক্তধারা প্রকাশনী) থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশি শরণার্থী লেখকদের লেখা। ওই সময় বর্ণমিছিলসহ আরও সাত থেকে আটজন প্রকাশক একাডেমির ভেতরে পুবদিকের দেয়াল ঘেঁষে বই সাজিয়ে বসেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এভাবেই বইমেলা চলতে থাকে।

চিত্তরঞ্জন সাহার ওই ছোট উদ্যোগ এখনকার বড় পরিসর লাভের নেপথ্যে একটি গল্প প্রচলিত আছে।

১৯৭২ সালের দিককার কথা। কয়েকজন চালাক বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণে একটি গরু বেঁধে রেখেছিলেন। সেই গরুর গায়ে লেখা ছিল- ‘আমি বই পড়ি না।’

গরু যতই উপকারী প্রাণী হোক, একে বুদ্ধি-শুদ্ধিহীন ধরে নেয়া হয়। মোদ্দাকথা এই যে, বই পড়া থেকে বিরত থাকলে মানুষও কাণ্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়বে। একপর্যায়ে নিরীহ গরুটি বাংলা একাডেমির নজরে এলে বোধোদয় ঘটে। সেই চালাকির ফল আজকের ভুবনমাতানো বইমেলা।

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০১৪ সাল থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাংলা একাডেমির দেয়াল টপকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারণ করা হয়।

মূল প্রসঙ্গে ফিরি। চিরন্তন সত্যবাক্য, বই ছাড়া পৃথিবী জ্ঞানশূন্য, তবে প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, এ দেশের তরুণরা ততই বইবিমুখ হয়ে পড়ছে। ব্যাপারটা ভয়ংকর। এর মধ্যে আরও ভীতিকর ঘটনা ঘটছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে বই পড়া সেকেলে বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। তারা আলোচনায় তা-ই জাহির করছে। তারা অজ্ঞাতে ফারেনহাইট ৪৫১ সিনেমার শঙ্কা বাস্তবায়নে বহুবিধ কৌশল নিচ্ছে। আগাম বলে রাখি, পরিস্থিতি কিন্তু ভয়ংকর।

লক্ষ করেছি, এখনকার অধিকাংশ ছেলেমেয়ে গুছিয়ে বলা দূরের কথা, প্রমিত বাক্যে কথা বলতে পারছে না। অনেকে কথা বলছে অসম্পূর্ণ বাক্যে। লেখালেখির অবস্থা তো আরও করুণ।

আমি বিশ্বাস করতে অনুরোধ করছি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকদের একই অবস্থা। প্রশাসন, সংবাদমাধ্যমের পরিস্থিতিও করুণ। শিক্ষকরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হলেও এ কথা বলতে বাধ্য হলাম।

আমার কথা কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, আমি তা গ্রহণ করব। জনপ্রশাসন বা সংস্কৃতি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় অথবা যে কারো উদ্যোগে এসব সেক্টর থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে নেয়া ১০০ পেশাজীবীর ৩০০ শব্দের রচনা লেখা প্রদর্শনী হতে পারে (প্রতিযোগিতা শব্দটি ইচ্ছা করে এড়িয়েছি)। বিষয় হতে পারে গরু বা শিক্ষক অথবা নির্বাচন কিংবা গণতন্ত্র ধরনের।

ধরা যাক, প্রদর্শনীর তত্ত্বাবধায়ক থাকবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও মুহম্মদ জাফর ইকবাল (এই মুহূর্তে দেশের আর কোনো সৎ বিদ্বানের নাম মনে পড়ছে না)। প্রদর্শনী শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হোক গণশুনানি। বাঙালি জাতি দেখুক, তাদের রক্তে লেখা প্রাণের বাংলাভাষা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে।

ওই চমকপ্রদ ধ্বংসের নেপথ্যে রয়েছে বই না পড়া।

‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’; ফারেনহাইট ৪৫১ সিনেমার প্লটে। ওই সিনেমায় দেখানো সোসাইটিতে বই বাসায় লুকিয়ে রাখা মানুষ আসামি। ফায়ারম্যানদের প্রশিক্ষিত কর্মীরা দক্ষতার সঙ্গে মানুষের ঘরের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থাকা বই উদ্ধার করে।

লুকানো বই বের করার আমুদে কৌশল দেখানো হয়। টোস্টার থেকে, টেলিভিশনের ভেতরে বই লুকিয়ে রাখতে দেখা যায়। সরকারের কাছে বইপাগল মানুষের অসহায়ত্বের নিখুঁত চিত্রায়ণ। সিনেমায় বই বাসায় রাখার অপরাধে অনেক আসামিকে পালাতে দেখা গেছে।

এ দেশের চিত্র ঠিক উলটো। সরকার জনগণের হাতে-পায়ে ধরেও পড়াতে পারছে না। বইমেলা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, গণশিক্ষা, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ইত্যাদি ইত্যাদি খুলেও প্রকৃত শিক্ষাটা দেয়া যাচ্ছে না।

ফারেনহাইট ৪৫১ সিনেমায় বুক পিপল ছাড়া অন্য সবাইকে সারা দিন ঘুমিয়ে বা টেলিভিশন দেখে সময় কাটাতে হয়। এখনও একই ঘটনা ঘটছে, তবে টেলিভিশনে ভারতীয় সিরিয়ালের পাশাপাশি এসেছে মোবাইল স্ক্রিন। হারিয়ে গেছে শুধু বুক পিপল।

বইমেলা ঘিরে আমার স্বপ্রণোদিত জরিপের ফল ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘশ্বাসটি শেষ করছি।

লেখক, পাঠক, ক্রেতা, দর্শক, ভবঘুরে এমন শ্রেণিভাগ করে ১০০টি নমুনায় সার্ভে চালাই। খুবই সতর্ক, কৌশল এবং যত্নে আলাপের প্রশ্ন সাজাতে হয়েছে। কারণ, বই পড়ি না কথাটা বলানো বেশ কঠিন, মানসম্মানের বিরাট প্রশ্ন জড়িত। যাহোক, মোটা দাগে জরিপের ফল হলো সিকিভাগ মানুষ গত এক বছরে একটি বই পড়েছেন। নব্বই শতাংশ মানুষ ছয় মাসে কোনো বই পড়েননি।

জরিপ থেকে বয়সভিত্তিক আরও বীভৎস এবং করুণ তথ্য উঠে এসেছে। যেমন: ছিয়ানব্বই ভাগ মানুষ সরাসরি বলেছেন, বই পড়ার সময় নেই। আশি শতাংশ বলেছেন, পড়ার মতো বই নেই। চল্লিশ শতাংশ বলেছেন, বইয়ের দাম বেশি, পড়তে ইচ্ছে হলে নেটে পড়ি, তবে প্রায় সবাই নেটে পুরো একটি বই পড়েছেন, তা বলতে পারেননি।

নব্বই শতাংশ টিনএজার বই পড়া প্রসঙ্গে আলাপের শুরুতেই হাসতে শুরু করে, যেন টম অ্যান্ড জেরি দেখছে অথবা মিস্টার বিন। তারা অবশ্য চার্লি চ্যাপলিনকে ঠিকমতো চেনে না। বাকি ১০ ভাগ নির্ভার ছিল।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহজাহান সরদারের ‌‌‌‘চেরি ফুলের দেশে’ নামের ভ্রমণকাহিনিতে পড়েছিলাম, জাপানে সব বয়সের মানুষ রেলস্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েও বই পড়ে। থাইল্যান্ড, এমনকি আমাদের পাশের ব্যাঙ্গালুরুতে এই দৃশ্য নিজে দেখেছি। সবার ব্যাকপ্যাকে দুই-একটি বই থাকেই।

জরিপটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বড় পরিসরে পরিচালনার প্রয়োজন বোধ করি। সঠিক সার্ভে ছাড়া সরকারসহ সংকটে উদ্বিগ্ন মহল সমাধানের পথ পাবে না।

‘আমরা কোথায় যাব/কত দূর যেতে পারি আর/সামনে নদী পেছনে পাহাড়...।’ তবে কি আমরা জনতা নিজ দায়িত্বে ধীরে ধীরে ডিসটোপিয়ার মতো অন্ধকার এক পৃথিবীর দিকে এগোচ্ছি? সেখানে মানুষ দুর্দশাগ্রস্ত, যেমন ভীতিকর সমাজব্যবস্থা, অশ্লীলতা, নিপীড়ন, রোগ, উপচে পড়া ভিড় ইত্যাদিতে আপন্ন।

লেখক: কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক।

এ বিভাগের আরো খবর