বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকাদূষণ আর নয়

  • রাজন ভট্টাচার্য   
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:২৮

রাজধানী শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। দিন-মাস ছাপিয়ে বছর গেলেও সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। বাতাসে বিভিন্ন গ্যাস ও ধূলিকণার পাশাপাশি ভেসে বেড়ায় অতি ক্ষুদ্র বিভিন্ন ক্ষতিকারক বস্তুকণা, যা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা সম্ভব নয়। পিএম ২ দশমিক ৫ নামের এসব বস্তুকণা নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে আটকে থাকে এবং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বায়ুদূষণজনিত ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি সামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা মাত্রই পুনরায় বন্ধের খবরটি উদ্বেগজনক। চলতি মাসের ১৭ তারিখ এক সরকারি ঘোষণায় নির্দেশনাটি দেয়া হয়। অনুমান করা যায়, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হলে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়!

খবরটি দিল্লির হলেও, একই কারণে বাংলাদেশের রাজধানী নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিশ্বের যে কটি শহর ভয়াবহ দূষণের তালিকায় রয়েছে, এরমধ্যে মেগাসিটি ঢাকা অন্যতম।

দিল্লিতে মোট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ১১টি। সরকারের নতুন নির্দেশনায় বায়ুদূষণ রোধে এগুলোর মধ্যে মাত্র ৫টি চালু রাখতে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো- ১৭ লাখ নিবন্ধিত যানবাহন আর প্রায় দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরে এখন কতগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলছে? এর সঠিক পরিসংখ্যান দেয়া সম্ভব নয়। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, রেল লাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প, ফুটপাত নির্মাণ, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সয়েল টেস্টসহ বিআরটিএ প্রকল্পের সরাসরি দূষণের প্রভাব নগরীতে পড়ছে। এর বাইরে সিটি করপোরেশন, বিটিসিএল, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবাসংস্থার মাটি খোঁড়াখুঁড়ি, ড্রেনেজ ও ফুটপাত নির্মাণ-প্রকল্পের কাজ চলমান।

ইটভাটা, ধূলিকণা, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, ইট-বালুবাহিত ট্রাকের অবাধ চলাচল, ময়লা-আবর্জনার পোড়া গন্ধসহ বায়ুদূষণের জন্য অন্য যেসব কারণ রয়েছে সেগুলোও ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। অথচ শীত মৌসুমে দূষণরোধে নগরীতে চলমান কোনো উন্নয়ন-প্রকল্পের কাজই বন্ধ নেই।

ঢাকার আকাশ রাতদিন ধুলায় কুয়াশাচ্ছন্ন! ফলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, সামনের দিনগুলোতে এই শহরের পরিণতি দিল্লির মতো হবে না তো?

এই রাজধানী শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। দিন-মাস ছাপিয়ে বছর গেলেও সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। বাতাসে বিভিন্ন গ্যাস ও ধূলিকণার পাশাপাশি ভেসে বেড়ায় অতি ক্ষুদ্র বিভিন্ন ক্ষতিকারক বস্তুকণা, যা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা সম্ভব নয়।

পিএম ২ দশমিক ৫ নামের এসব বস্তুকণা নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে আটকে থাকে এবং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। কোনো এলাকার বাতাসের পিএম ২ দশমিক ৫-এর পরিমাণ পরিমাপের একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত মান হলো এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) বা একিউ সূচক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বায়ুর গুণাগুণ-বিষয়ক নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো এলাকার বাতাসের একিউআই যদি ০ থেকে ৫০ থাকে, সেক্ষেত্রে সেখানকার বাতাস ভালো।

সূচক যদি ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে, তাহলে বাতাসের মান সন্তোষজনক। আর যদি ১০১ থেকে ২০০ থাকে তাহলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ এবং ২০০ এর উপরে থাকলে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডব্লিউএইচওর নির্দেশনায়।

দিল্লিতে একিউ সূচক অনুযায়ী বেশিরভাগ এলাকার বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫-এর পরিমাণ ৪০০-এর উপরে। এ থেকেই বোঝা যায়, কোন প্রেক্ষাপটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নিঃসৃত ধোঁয়া, ধুলো ও আবহাওয়াগত কারণে নয়াদিল্লি ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর রাজধানীর স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিশেষ করে শীতকালে দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা থাকে সবচেয়ে বেশি। কারণ, সেসময় প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে কৃষকদের খড়-বিচালি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া কুয়াশাচ্ছন্ন রাজধানীর বাতাসকে ভারী করে তোলে।

প্রশ্ন হলো- বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকায় প্রথমদিকে থাকা রাজধানী ঢাকার প্রকৃত অবস্থা আসলে কী? শীত মৌসুমে অন্যান্য শহরের মতো ঢাকাতেও দূষণ বাড়ে, এটি খালি চোখে দেখলেও সহজে বোঝা যায়। কিন্তু এই দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ভয়াবহ?

১৮ নভেম্বর সকালের দিকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল চতুর্থ। বিশ্বের বায়ু-মান প্রতিবেদনে (একিউআই) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে ১৮৯ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশকে খুব অস্বাস্থ্যকর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

তখন পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও চীনের উহান যথাক্রমে ৪২৫, ৩১০ এবং ১৯১ স্কোর নিয়ে প্রথম তিনটি স্থান দখল করে ছিল। যদিও তিন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ভালো। তবে অনেক সময় দৈনিক দূষণের তালিকায় ঢাকা প্রথম স্থানে চলে যায়।

একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে, স্বাস্থ্য-সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে নগরবাসী। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এই বিবেচনায় ঢাকার দূষণের মাত্রা কিন্তু সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর ঠিক কাছাকাছি অবস্থান করছে। তাই আগেভাগে সতর্ক হওয়া দরকার।

এমনিতেই বায়ুদূষণের কারণে নগরে থাকা মানুষ নানারকম স্বাস্থ্য-ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। হচ্ছে জটিল রোগ। তাই সরকারের দূষণরোধে দ্রুত মনোযোগ দেয়া দরকার। একে শুধু ঢাকার সমস্যা হিসেবে দেখলে হবে না।

সত্যিকার অর্থেই দেখতে হবে জাতীয় সমস্যা হিসেবে। কারণ এই নগরে থাকা প্রায় দুই কোটি মানুষ সারা দেশ থেকে এসেছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠী যদি দূষণের ছোবলের মধ্যে পড়ে, তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব কতগুলো পরিবারে ছড়াবে তা অনুভব করা উচিত।

বেকারত্ব বাড়ার পাশাপাশি শিশুদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিয়তার দিকে যাবে। থমকে দাঁড়াবে বিশাল অঙ্কের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো। ঢাকা যদি বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়? তাহলে পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যাবে তা সহজে অনুমান করা যায়।

গত বছর ঢাকা মহানগরীর বায়ুদূষণ ঠেকাতে রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ছিটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

পাশাপাশি রাস্তার পাশে ছোটখাটো গাছে জমে থাকা ধুলা-ময়লা যাতে পরিষ্কার হয় সেজন্য রাস্তার ওপর থেকে পানি ছিটাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেয়া হয়। আর ছিটানোর ক্ষেত্রে পানির ঘাটতি দেখা দিলে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও নির্দেশ দেয়া হয়। গত বছরের ১৩ জানুয়ারি রাজধানী ও আশপাশের বায়ুদূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-

১. ঢাকা শহরে মাটি-বালি, বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা

২. নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি-বালি, সিমেন্ট-পাথর, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা

৩. সিটি করপোরেশন রাস্তায় পানি ছিটাবে

৪. রাস্তা-কালভার্ট, কার্পেটিং-খোঁড়াখুঁড়িকাজে টেন্ডারের শর্ত পালন নিশ্চিত করা

৫. কালো ধোঁয়া নিঃসরণ করা গাড়ি জব্দ করা

৬. সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ি চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ সময়সীমার পরে গাড়ি চলাচল বন্ধ করা

৭. অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করা

৮. পরিবেশ লাইসেন্স ব্যতীত চলমান সব টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা

৯. মার্কেট, দোকানে প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং অপসারণ নিশ্চিত করা।

এই নির্দেশনাগুলো কতটুকু মানা হচ্ছে? তা দেখভালের কি কেউ নেই? বড় বিষয় হলো- গত বছরের তুলনায় এবার নগরীর দূষণের মাত্রা কমেছে কি না? যদি কমে থাকে তবে আরও কমাতে হবে। যদি না কমে তাহলে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া কি জরুরি নয়? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকার অবস্থা যে পর্যায়ে আছে এ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। কারণ যাদের এ নিয়ে ভাববার কথা তারা দিব্যি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে!

চোখের সামনে এই শহরে অপরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার ভবন উঠে গেল! দুই কোটি মানুষের স্রোতে ভেসে গেল নগরী, ইচ্ছেমতো গাড়ি রেজিস্ট্রেশন দেয়া হলো, ফুটপাতও দখলে চলে গেল। শহরে পর্যাপ্ত রাস্তা ও জলাশয় নেই। বসবাসের মানদণ্ডে সবদিক থেকে পিছিয়ে।

অথচ কারো কোনো চিন্তা নেই। প্রতিকারের ব্যবস্থা নেই। সবকিছু বিবেচনায় বায়ুদূষণ রোধে কারো ভাবনা না থাকাই যেন স্বাভাবিক। বড় বিষয় হলো- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বায়ুদূষণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন থাকা উচিত ছিল। অথচ আদালত এ বিষয়ে এগিয়ে এলেও দূষণ ঠেকাতে কাজ করানো সম্ভব হচ্ছে না!

আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে দূষিত শত শহরেরর মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ চারটি শহরের নাম। রাজধানীতে শীত মৌসুমে ময়লা পোড়ার কারণে দূষণের মাত্রা আরও বাড়ে। কিন্তু সেটিও কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নতুন নিয়ম অনুযায়ী সন্ধ্যার পর পরই রাস্তাঘাট ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করায় নিঃসন্দেহে দূষণের মাত্রা বাড়ছে। অথচ এই সিদ্ধান্তটি অন্তত রাত ১১টার পর যদি কার্যকর করা যেত।

গবেষণায় ঢাকার রাস্তার ধুলায় সর্বোচ্চ মাত্রায় সিসা, ক্যাডমিয়াম, দস্তা, ক্রোমিয়াম, নিকেল, আর্সেনিক, ম্যাঙ্গানিজ ও কপারের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাটিতে যে মাত্রায় ক্যাডমিয়াম থাকার কথা, ধুলায় তার চেয়ে প্রায় ২০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। আর নিকেল ও সিসার মাত্রা দ্বিগুণের বেশি।

ঢাকার রাস্তার ধুলার মধ্যেও নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক পাওয়া গেছে। এসব ভারী ধাতুকণার আকার এতটাই সূক্ষ্ম যে তা মানুষের চুলের চেয়ে ২৫ থেকে ১০০ গুণের বেশি ছোট। ফলে খুব সহজেই এসব সূক্ষ্ম ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ত্বকের সংস্পর্শে আসছে; শ্বাসপ্রশ্বাস, খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে শরীরের ভেতর প্রবেশ করছে।

যেসব কারণে দিল্লি ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে এর প্রায় সবকটিই কমবেশি রাজধানী ঢাকায় রয়েছে। তাই মহাবিপর্যয় আসার আগেই সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। দিল্লি যে আগাম বার্তাটি দিল, তা সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে। ইট-পাথরের এই নগরীতে সবুজ বিপ্লব ছড়িয়ে দেয়াই সবচেয়ে জরুরি।

যত বেশি সম্ভব জলাশয় সৃষ্টির দিকে নজর দেয়াও সময়ের দাবি। বাড়াতে হবে সড়কের পরিধি। এরসঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে নগরের উপর বাড়তি মানুষ ও যানবাহনের চাপ কমানো জরুরি।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে বায়ুদূষণরোধে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে। দূষণের বিষয়টি মাথায় নিয়ে সব সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। সামনের খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা যদি কার্যকর করা যায়, তবেই মেগাসিটিকে যেমন বাঁচানো সম্ভব; তেমনি নগরবাসীকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দেয়া যাবে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

এ বিভাগের আরো খবর