দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্তের পর থেকেই নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বিরোধিতা আসছিল। আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তের প্রতি তেমন কাউকে সমর্থন দিতে দেখা যায়নি। না মানার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে প্রায় সব পক্ষের মানুষ। মূলত স্থানীয়পর্যায়ে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, হানাহানি থামানোসহ সর্বোপরি তৃণমূলে শান্তি বজায় রাখার চিন্তা থেকেই সবাই এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। হতাশার বিষয় এই যে, এতে খুব একটা সুফল আসেনি।
সরকার, নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা দেয়নি। হয়ত রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের কাছে ইতিবাচক ছিল বলে মনে করে!
যার ধারাবাহিকতায় এবারও দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন চলমান। প্রথমপর্ব শেষে গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। সামনে আরও তিন ধাপের নির্বাচন বাকি রয়েছে। এবারও কিন্তু বেশ কিছু মহল থেকে সরকারকে দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন করার পরামর্শ দেয়া হয়।
কেউ সুপরামর্শ কানে তোলেনি। বরং নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যারা কথা বলার চেষ্টা করেন তাদের নামে বদনাম করেন রাজনৈতিক নেতারা।শেষপর্যন্ত দেখা গেল চরম বিশৃঙ্খলা, হামলা-পাল্টাহামলা, অস্ত্রের মহড়া-কেন্দ্র দখল, লুটপাট-অগ্নিসংযোগ ও হানাহানির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন। আর এ পর্বে সহিংসতায় প্রাণ যায় অন্তত ২০ জনের, আহত অনেক। এখন সামনের দিনগুলোতে কী ঘটবে তা নিয়ে শঙ্কা জাগে।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের আগে এ ধরনের ভয়াবহ অশান্তি গ্রামে গ্রামে কখনই ছিল না। দলীয় প্রতীকের কারণে এখন ভালো মানুষগুলো গ্রামপর্যায়েও নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। তারা এখন আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসে না।
এবারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আগে থেকেই বিএনপি অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেয়। তাই আওয়ামী লীগের সুযোগ ছিল উন্মুক্ত নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়ার। এরপরও আওয়ামী লীগ দলগত নির্বাচন না করার সাহস দেখাতে পারেনি। প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মানার নজির স্থাপনের সুযোগ ছিল দলটির সামনে। তেমনি ভালো-মন্দের বিচার-বিশ্লেষণও নিজেরা করতে পারত।
অনুষ্ঠিত দুই পর্বের নির্বাচনে দেখা গেছে, অনেক আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী, আবার কোথাও একাধিক বিদ্রোহী। দেশজুড়ে নিজের ঘরের আগুনেই পুড়েছে ক্ষমতাসীন দল।
কেন এত বিদ্রোহী প্রার্থী এ প্রশ্নেরও জবাব আছে। এবারে যারা মনোনয়ন পেয়েছে তাদের অনেকেকে নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। কিছু ভালোমানুষের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসী-ধর্ষক, জুয়াড়ি-শ্মশান দখলকারী এমনকি মাদক মামলার আসামিসহ নানা অপকর্মকারীদের হাতে তুলে দেয়া হয় নৌকার টিকেট। গণমাধ্যমে কিছু বিষয় ওঠে আসার পর নামমাত্র আসনে প্রার্থী বদল করা হয়েছে।
অথচ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে যারা অভিযোগ দাখিল করে এর বেশিরভাগই নাকি ফেলে দেয়া হয়েছে, জায়গামতো পৌঁছানো হয়নি। দুঃখজনক বটে।
অভিযোগগুলো যাচাইবাছাইয়ের জন্য হলেও আলাদা একটি কমিটি কাজ করতে পারত। মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আরেকটু বিচার বিশ্লেষণ করে দেখলে হয়ত এত বিদ্রোহী হতো না। এবারে যারা মনোনয়ন পেয়েছে তাদের বেশিরভাগই দুই থেকে পাঁচবার পর্যন্ত টানা নির্বাচিত। প্রশ্ন হলো, তাহলে কি একজন ব্যক্তিই সারাজীবন মনোনয়ন পেয়ে যাবে? অন্য যারা রাজনীতি করছে তাদের কি কোনো স্বপ্ন থাকতে পারে না?
যদিও আমাদের দেশে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে কতবার দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে এরকম কোনো বিধান নেই। কিংবা নির্বাচন কমিশনের আইনেও এরকম বিধান যুক্ত করা হয়নি। সকল নির্বাচনে একজন ব্যক্তিকে পর পর দুবারের বেশি মনোনয়ন দেয়া উচিত হবে না। তাহলে অন্তত অন্যরা নির্বাচন করার সুযোগ পাবে। আর এই দৃষ্টান্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশ অনুসরণ করতে পারবে।
এই নিয়ম চালু করা গেলে নিজেদের মধ্যে অনেকটাই বিদ্রোহ দমন সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- নিজেদের মধ্যে কেউ বিদ্রোহী হলে তাকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তি দিয়ে ঘায়েল করতে হবে! এটা মোটেই উচিত নয়। তার উপর কিংবা তার সমর্থকদের হামলা-মামলায় জড়ানো, জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নেয়া গ্রহণযোগ্য তো নয়ই বরং অপরাধ। সংবিধান সবার নির্বাচন করার স্বাধীনতা দিয়েছে। তাহলে এই অপসংস্কৃতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনের ফলাফলের আগেই মাঠের অবস্থা দেখে আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় তৃতীয় দফা নির্বাচনে ৮৮টি ইউনিয়ন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এসব আসনে দলীয় প্রতীক থাকছে না। শরীয়তপুর-মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ- এই তিন জেলায় সাত এমপির অনুরোধে ৮৮টি ইউনিয়ন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য আসনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেখানেও দলের বিদ্রোহীরা নিজেদের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রশ্ন হলো, ৮৮টি আসন উন্মুক্ত রাখা গেলে বাকিগুলো রাখতে কি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল? যে কারণে ৮৮ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী দেয়া হয়নি একই কারণ সবকটি ইউনিয়নে বিরাজমান। তবে সেগুলোকে কেন গুরুত্ব দেয়া হয়নি? যদি অন্য আসনগুলোতে সহিংসতা হয় তবে এর দায় কে নেবে?
আগামী ২৩ ডিসেম্বর চতুর্থধাপে ৮৪০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক করা হয়েছে। এর আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কজন এমপি উন্মুক্ত প্রার্থিতার দাবি জানিয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত আবেদন করেছে।
তাদের দাবি চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের নির্বাচন যেন উন্মুক্ত করা হয়। বিভিন্ন আসনের আরও বেশ কজন সংসদ সদস্যের উন্মুক্ত নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়ার কথা রয়েছে। অনেক পরে হলেও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের বোধোদয় ঘটেছে বটে। এটি একটি শুভ লক্ষণ।
সবচেয়ে বড় কথা হলো- দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের কারণে প্রায় প্রতিটি আসনেই বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছে। যারা বিদ্রোহী তারা সবাই দলের লোক। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করার অপরাধে তাদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এমনকি বিদ্রোহী প্রার্থীদের পরিবারের লোকদেরও দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্যরা এ নিয়ে বিব্রত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কজনকে বহিষ্কার করা হবে? যাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে তারাও তো দলের মানুষ, এলাকায় কমবেশি তাদেরও প্রভাব এমনকি জনমতও রয়েছে। দলের জন্য তাদের কি কোনো ত্যাগ নেই? অবশ্যই আছে।
একটা কথা মনে রাখা দরকার, ভোটের প্রকৃত আবহ তৃণমূলে। সেখানে যদি একের পর এক বহিষ্কারের পর্ব চলে তাহলে এর ধাক্কা কিন্তু অবশ্যই দলকে সামলাতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যদি দলের মনোনীত এমপি প্রার্থীদের সহযোগিতা না করেন তাহলে তো ফলাফলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
তখন এর দায় কে নেবে? আবার অনেক এলাকায় অত্যুৎসাহী হয়ে জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ইউপি বিদ্রোহী নেতাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইউপি নেতাদের বহিষ্কারের কথা। এক্ষেত্রে যারা সাংগঠনিক নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা করছেন না, তাদের জন্য কি কোনো বিচার নেই?
আর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া গণতন্ত্রের জন্য সুখকর কোনো সংবাদ নয়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বেশিরভাগ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার খবরটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হওয়ার কোনো কারণ নেই। সর্বোপরি কথা হলো নিজেরা নিজেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ক্ষতি কোথায়? বিএনপি ছাড়া নির্বাচন আগে থেকেই উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়ার প্রয়োজন ছিল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। তাহলে কি আওয়ামী লীগও চায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে আসুক।
যখন বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে সারা দেশে সমস্যা শুরু হয়েছে তখনও দলের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে কঠোরভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়নি। বা বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দলকে কঠোর না হতে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এর বাইরে যদি চিন্তা করা যায় তা হলো- নতুন নেতৃত্ব তৈরির তো কোনো বিকল্প নেই। যদি বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে কিছু ভালো পরচ্ছিন্ন ইমেজের কর্মী নির্বাচিত হয়ে আসে তাহলে দিন শেষে লাভ কার হতো। সে চিন্তাটি করার মতো কি কেউ নেই? থাকলেও হয়ত ভাববেন না।
এটা সত্যি যে বিএনপি ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত একেবারেই ঠিক ছিল না। এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের একেবারে শেষস্তরে একটা বিষবৃক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এ অবস্থায় মনোনয়ন-বাণিজ্য যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি মারামারি ও হানাহানিতে রক্ত ঝরেছে, প্রাণহানি হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি বিরোধ বেড়েছে।
দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল নিরপেক্ষ নির্বাচন করার। ভেতরে ভেতরে শেষ মুহূর্তে হলেও আওয়ামী লীগ চেয়েছে নির্বাচন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে তা থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসতে। যদিও এই চিন্তাটি আগে করলে ভালো হতো। কথা হলো সরকারের এই নির্দেশনা কি কার্যকর হয়েছে? মোটেও না। স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতারা প্রশাসনকে নানাভাবে চাপসৃষ্টি করেছে, এ অভিযোগ অনেকটা পুরোনো।
নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগের মনোনীত ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যেই সহিংসতা বেশি হয়েছে।
যারা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে নৌকার পক্ষে বিদ্রোহীদের অত্যাচার নির্যাতন-অস্ত্রের সরবরাহ, প্রশাসনকে নগ্নভাবে কাজে লাগানো-ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট দেয়া এমনকি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দিয়ে হামলাসহ ভোটকেন্দ্র দখল করিয়েছে; তাদের কি বিচার হবে না? তারাও তো সরকারের নির্দেশ অমান্য করেছে।
একদিকে সরকারপ্রধান অন্যদিকে দলপ্রধানের নির্দেশ অমান্য করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়েছে। অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যারা নিজেদের ঘরে বিজয় আনতে অঘটন ঘটিয়ে এমন পক্ষপাতমূলক কাজটি করেছেন তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। যদি দলের নির্দেশ অমান্য করার কারণে বিদ্রোহীদের বহিষ্কার এমনকি তাদের পরিবার বা আত্মীয়স্বজনদেরও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করতে পারেন তবে এক্ষেত্রে কেন অপরাধ শাস্তিযোগ্য হবে না। অবশ্যই হতে হবে।
সেইসঙ্গে প্রশাসনকে রাজনৈতিক চাপ দিয়ে অন্যায় কাজ করতে বাধ্য করিয়েছে। এখন প্রশাসন যদি সরকারকে অসহযোগিতা করে তাহলে এর দায় কে নেবে? তাই অপরাধ সবার জন্য সমান হলে বিচার নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।
বিশৃঙ্খলার মধ্যেও দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭৩ শতাংশ ভোট সত্যিই আশার কথা। এই পরিসংখ্যান বলছে, মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে চায়, নির্বাচন যদি আরও স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করা যায় তাহলে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ৯০ ভাগ পেরিয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় দফায় ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগপ্রার্থী ৪৮৬ এবং স্বতন্ত্র ৩৩০ জন জয়ী হন। এরমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৮১ জন। দুই ধাপ মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইউপির মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী ৭৫৩ এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪১১ জন। ফলাফল বলছে প্রার্থী নির্বাচন সঠিক হয়নি। এছাড়া বিদ্রোহের কারণও যথেষ্ট ছিল। এক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার দাবিও যৌক্তিক হতে পারত।
ইউনিয়নে সাধারণ মানুষের শান্তির জন্য দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অবশ্যই সরে আসা উচিত। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনও ইতিবাচক দৃষ্টিতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে পারে। এছাড়া তিন ধাপের ইউপি নির্বাচন এখনও বাকি। নিজেদের মধ্যে সহিংসতা-কোন্দল, হামলা-অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু এড়াতে অবশ্যই আওয়ামী লীগের উন্মুক্ত প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিকল্প নেই। এটা জোড় দিয়ে বলা যায়, নির্বাচন উন্মুক্ত হলে এত সহিংসতা হতো না। দলগত ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে মানুষ নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এতে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক