আবারও বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরসামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি উঠেছে। ২ অক্টোবর ১৯৭৭ সালে খুনি জিয়ার গুম-ষড়যন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গ এবং শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সম্প্রতি এক সভায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য এবং বিশিষ্টজনেরা জিয়ার মরণোত্তর বিচারসহ ’৭৭-এর ওই ঘটনাবলির তদন্ত ও বিচারে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের দাবি জানান। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ১৯৭৭-এর ২ অক্টোবর জিয়াউর রহমান সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা, লাশ গুম, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুতির ঘটনার করুণ চিত্র তুলে ধরেন। স্বজনেরা ৪৪ বছর আগের সেই দুর্বিষহ সময় এবং পরবর্তী ঘটনাবলির বিবরণ দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অডিটোরিয়ামের মঞ্চে তাদের কেউ জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার মর্মান্তিক গল্প শোনান। সভায় সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, ‘প্রহসনের বিচারের নামে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। চার দশকের বেশি সময় বহু অপবাদ লাঞ্ছনা-গঞ্জনা নিয়ে বেঁচে আছি। তবুও স্বামী হত্যার বিচার পাওয়ার আশায় ৪৪টি বছর ধরে নানান জায়গায় ঘুরেছি। আজও জানি না, আমার স্বামী কী অপরাধ করেছিলেন? কবে কোথায় কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুদিবস কবে, কবর কোথায়?’ ওই সময় একমাত্র ছেলের বয়স ছিল এক বছর। অন্যের বাড়িতে কাজ করে, কাপড় সেলাই করে ওই সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন এই সাহসী নারী।
আলোচনা সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম, শিক্ষাবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক প্রমুখ। আসলে জাতির পিতা হত্যা-ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে ১৯৮১ সালের ৩০ মে বিদ্রোহী সেনাসদস্যদের দ্বারা নিহত হওয়া পর্যন্ত এদেশে যত বর্বর হত্যাকাণ্ড, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হয়েছে এর সব কটির সঙ্গেই জিয়া কমবেশি জড়িত ছিলেন। দেশের ইতিহাসে জিয়ার মতো এমন নির্মম, ঠাণ্ডা মাথার খুনি হয়তো দ্বিতীয়জন খুঁজে পাওয়া যাবে না। জাতির পিতা হত্যা-ষড়যন্ত্রে জিয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা-ষড়যন্ত্র নিয়ে গবেষণাকারী মার্কিন সাংবাদিক লিফশুলজ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘জিয়াই ছিলেন খুনি মেজর চক্রের প্রধান মদতদাতা। তার সুস্পষ্ট সমর্থন ছাড়া মুজিব হত্যা কোনোভাবেই সম্ভব হতো না।’ যে কর্নেল তাহের কথিত গৃহবন্দি থেকে জিয়াকে উদ্ধার করেছিলেন, সেই কর্নেল তাহেরকে বিশ্বাসঘাতক জিয়া গোপন বিচারে ফাঁসিতে হত্যা করেন। অনেকেই লিখেছেন, আমি নিজেও বহুবার লিখেছি- ‘জিয়া মুক্তিযুদ্ধে দৈহিকভাবে অংশ নিলেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাস করতেন না। পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মেজর জিয়া মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন অনুপ্রবেশকারী। খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই হত্যা করেছিল। জিয়া পাকিস্তানের চর হিসেবেই জাতির পিতা হত্যা ষড়যন্ত্রে মদত দিয়েছেন। খুনি ফারুক-রশীদ তাদের ‘মুক্তির পথ’ গ্রন্থে লিখেছে, জেলে চার জাতীয় নেতা হত্যা ষড়যন্ত্রেও জড়িত ছিলেন জিয়া। ৭ নভেম্বর সকালে খালেদ, হায়দার, হুদা হত্যার সময় জিয়া ছিলেন স্বঘোষিত প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক।
কর্নেল তাহের হত্যা পুনঃবিচারকালে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি বলেছেন, ‘জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিল না।’ আর জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করলে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও উপদেষ্টা বানাতেন না। জিয়াতো তার সাড়ে ৫ বছরের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পুরোপুরিভাবে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যান। জিয়ার বানানো বাংলাদেশ আর পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না। বলা হয় জিয়াকে উৎখাতের জন্য উনিশটি ছোট বড় সামরিক অভ্যুত্থান হয়।
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সশস্ত্র বাহিনীতে সংঘটিত হয়েছিল এমন একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান। এর দুদিন আগে ৩০ সেপ্টেম্বর বগুড়া সেনানিবাসে ২২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট থেকে সংঘটিত হয়েছিল আরেকটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান। ২ অক্টোবর ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার কুর্মিটোলা এয়ারপোর্টে জাপানি রেড আর্মির হিদাকা কমান্ডো ইউনিটের ৫ সদস্য ১৫৬ যাত্রীসহ জাপান এয়ার লাইন্সের একটি ডিসি-৮ বিমান ব্যাংককের পথে ঢাকা ত্যাগ করার পরই আবার ঢাকায় অবতরণে বাধ্য করে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা এবং সম্পূর্ণ ঘটনাটি ওই সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। এ অবস্থায় ঢাকা বিমানবন্দরে সেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানটি শুরু হয়। আর এ অভ্যুত্থানের জের ধরে পরবর্তী দুমাসে সশস্ত্র বাহিনীতে যা ঘটেছিল, এক কথায় আমরা বলতে পারি সারা বিশ্বে তা নজিরবিহীন।
বিশ্বের আর কোথাও যুদ্ধকালীন অবস্থা ব্যতীত এমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ সময় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় বগুড়ার ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আলোচিত সাংবাদিক মাসকারেনহাস তার ‘এ লিগেসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে লিখেছেন, ওই সময় দুমাসে বাংলাদেশের সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী ১১৪৩ জন সৈনিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইতিহাস’ শীর্ষক একটি পুস্তিকায় এদিনের ঘটনাকে সারা দেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বিমানবাহিনীর জন্য ‘কালোদিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পুস্তিকাটিতে বলা হয়, ওই সময় ৫৬১ জন বিমানসেনা প্রাণ হারিয়েছেন।
বাংলাদেশে সে সময় প্রায় সব কারাগারেই গণফাঁসি দেয়ার ঘটনা ঘটেছিল। ফায়ারিং স্কোয়াডে অথবা ফাঁসিতে মৃত্যুবরণকারী সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকদের অনেকের ন্যূনতম মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়নি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশের প্রায় সব প্রগতিশীল সংগঠনই তখন এমন কলঙ্কিত ঘটনার প্রতিবাদ করে। অভিযোগ উঠেছিল- প্রহসন ও কোনো আইনকানুনের পরোয়া না করেই নামকাওয়াস্তে বিচার ও ফাঁসির ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছিল। দুনিয়াজুড়েই বর্বর-অসভ্য দেশেও সরকারিভাবে ফাঁসি দেয়ার আগে দণ্ডিত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের শেষ সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু সবচেয়ে কলঙ্কিত বিষয় হচ্ছে খুনি জিয়ার শাসনামলে ফাঁসি দেয়া ওই পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের বিচারের ঘটনা জানা তো দূরের কথা, ফাঁসি এবং পরে লাশেরও কোনো হদিস পাননি।
তরুণ সাংবাদিক ও গবেষক আনোয়ার কবির ২০১০ সালে ‘সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা (১৯৭৫-১৯৮১) প্রামাণ্য চিত্রের গ্রন্থরূপ’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। বইটি ওই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলায় সাহিত্য প্রকাশ থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে হত্যা, চট্টগ্রামে সেনা বিদ্রোহ ও জিয়া হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের ফাঁসিতে হত্যা এবং ১৯৭৭ সালে ফাঁসিতে শত শত সেনাসদস্য হত্যা এবং ওই সময় নিখোঁজ সৈনিকদের শেষ পরিণতির করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ওই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে কর্পোরাল খায়রুল আনোয়ারের ৮ বছর কারাদণ্ড হয়। জেলে থাকার সময় তিনি দেখেছেন নির্দোষ লোকদের ফাঁসিতে হত্যার দৃশ্য। তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের সময় কর্পোরাল আরজু বিমান বাহিনীর তৎকালীন চিফ অব এয়ার স্টাফ এয়ার ভাইস মার্শাল এজি মাহমুদের বডিগার্ড বা সেফটি অফিসার হিসেবে ডিউটিতে ছিলেন।
অবস্থা বেসামাল হয়ে উঠলে কর্পোরাল আরজু নিজে বিমান বাহিনী প্রধান এজি মাহমুদকে পুরাতন বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ওয়াল পার করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেন। এই কর্পোরাল আরজুকেও পরে ফাঁসিতে হত্যা করা হয়। ফাঁসির আগে আরজু ঘাতকদের বলেন, আপনারা অন্তত এজি মাহমুদকে জিজ্ঞেস করুন, আমি ওই রাতে উনাকে এয়ারপোর্টের সীমানা পার করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলাম কি না। ঘাতকরা জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেনি।
টর্চারের করুণ ঘটনাও তিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদিন কর্পোরাল আসাদকে ধরে নিয়ে আসে। আমার চোখ বাঁধা অবস্থায় শুনছি ওদের কথাবার্তা। প্রথম খুব হাস্যকরভাবে তাকে ওয়েলকাম জানায়। পিটাতে শুরু করে। বাবারে-বাবারে বলে চিৎকার করতে থাকে আসাদ। একপর্যায়ে তার আওয়াজ থেমে যায়। একজন বলছে- শালা বোধ হয় মরেই গেছে। আরেকজন বলছে, সে মরার ভান করছে। এরপর আবার পেটাতে থাকে। যখন দেখল আর কোনো আওয়াজ নেই, তখন তারা নিশ্চিত হলো আসাদ মারা গেছে। আরেকদিন কণ্ঠ শুনে বুঝলাম কর্পোরাল লতিফকে নিয়ে এসেছে। পেটাতে শুরু করে। পেটাতে পেটাতে একপর্যায়ে আমগাছের একটি ডাল (যেটি দিয়ে আগে অন্য কাউকে পেটানো হয়েছে সেটা ওর পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ঢুকিয়ে মোচড় দিতেই বাবাগো বলে চিৎকার দেয়ার পর আর কোনো আওয়াজ পাওয়া যায়নি। (আনোয়ার কবিরের গ্রন্থ, পৃ. ৭৫-৭৬)
ওই সময় রইসউদ্দিন আরিফ নামে একজন বন্দি ঢাকা জেলে গণফাঁসির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তিনি বলেছেন, তাদের ওয়ার্ড ছিল ফাঁসির মঞ্চের খুব কাছে। প্রতিরাতেই দলে দলে ওখানে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাদের আহাজারি ও ভয়ার্ত করুণ চিৎকারের কারণে আশপাশের বন্দিরা ঘুমাতে পারত না। তিনি বলেছেন, কাছেই ট্রাইব্যুনালে বিচার করত। ৩০ জনকে বিচার করতে মিনিট ১৫ সময় লাগত। পাঁচ, সাত, আট, নয়জনকে একত্রে বেঁধে ফাঁসি মঞ্চে নিয়ে একজন করে ফাঁসি দেয়া হতো। রইসউদ্দিন বলেছেন, একসঙ্গে এভাবে অবিরাম ৫ দিন, ৬ দিন, ৭ দিন- ৫ জন, ১০ জন, ১১ জন করে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনা ঢাকা সেন্ট্রাল জেলের দুশো বছরের ইতিহাসে শুধু নয়, কোনো সময়ই এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেনি। (পৃ. ৮২)। এই গ্রন্থে ফাঁসিতে হত্যা ও টর্চারের এমনসব ঘটনা রয়েছে, যা পাঠককে শুধু কাঁদায় আর কাঁদায়।
এখানে উল্লেখ্য, ওই সময় রশীদ ও ফারুক ঢাকায় এসে জিয়াকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়। ৩০ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় উপস্থিত থেকে সেনাবিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয় ফারুক। ডালিমও ওই সময় দেশে চলে এসেছিল। জেনারেল জিয়া বিদ্রোহীদের শাস্তিদানের ব্যাপারেও যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব করেন। ফারুক-রশীদ-ডালিমকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে দূতাবাসের চাকরির অফার দেয়া হয়। ফারুক-রশীদ চাকরি করেনি। ডালিমসহ অন্যরা দূতাবাসের চাকরি করে।
ফারুক-রশীদের কিছু না হলেও বিদ্রোহে জড়িত বিপুলসংখ্যক সেনা সদস্যকে ফাঁসিতে হত্যা ও কারাদণ্ড দেয়া হয়। মাসকারেনহাস ‘এ লিগেসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে লিখেছেন, সরকারি হিসাব মতে, ১৯৭৭-এর ২ অক্টোবরের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে মাত্র ২ মাসের মধ্যে এগারো শ তেতাল্লিশ সেনাসদস্যকে ফাঁসিতে হত্যা এবং অসংখ্যকে ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় পৈশাচিক সাজার কোনো নজির নেই। কয়েকজনকে একবারে বিচারের জন্য ডেকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেয়া হতো। জেনারেল জিয়া বসে বসে সেগুলো অনুমোদন করতেন এবং এর পরই তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হতো।
প্রেসক্লাসের আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডসহ দেশে পরবর্তী কলঙ্কজনক প্রতিটি ঘটনায় কুশীলব ছিলেন জিয়াউর রহমান।
জিয়াকে খুনি অভিহিত করে তারা বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা ও বিমান বাহিনীর শত শত সদস্যের রক্তে রঞ্জিত জিয়ার হাত। বক্তারা খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি করে ’৭৭-এর ওই ঘটনাবলির তদন্ত ও বিচারে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের দাবি জানান। এটা অবশ্যই যৌক্তিক ও সময়ের দাবি, তাতে সন্দেহ নেই।
লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক-গবেষক; সিনিয়র সাংবাদিক।