বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফগানিস্তানে আধিপত্য ও বাণিজ্যের লড়াই

  • এরশাদুল আলম প্রিন্স   
  • ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৩:৪৫

বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করেছে, কারণ খরচ টানা সম্ভব হচ্ছে না। যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করলেও যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। সৈন্য প্রত্যাহার করে খরচ কমানো হয়েছে মাত্র। গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে যদি একজনকে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেয়া যায়, তবে আর পয়সা খরচ করে সম্মুখসমর কেন? উল্টো সেখানে অস্ত্রের দোকান খুলে ব্যবসাও করা যায়। বাইডেন সে পথেই হাঁটছেন। মনে রাখতে হবে, ট্রাম্পকে অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতে দেননি।

আফগানিস্তানে তালেবানরা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে। সরকার গঠন করলেও তালেবান সরকার নানামুখী সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বহু গোষ্ঠী ও উপজাতি নিয়ে গড়ে উঠেছে আফগানিস্তান। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সরকারে তাদের অংশীদারের প্রশ্ন। আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র সে দ্বন্দ্বে একজনকে অপরের বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছে না এমনটি নয়।

পাঞ্জশির উপত্যকায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে তালেবানদের তীব্র লড়াইয়ে প্রমাণ করে আফগানিস্তানে তালেবানের একচেটিয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করতে গেলে মুশকিল।আফগানিস্তানের লড়াইটা ছিল আসলে আধিপত্যবাদের (রাজনীতি) ও অস্ত্রের (বাণিজ্য)। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার জন্য কোনো না কোনো ভুখণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের কোনো না কোনো দেশে সৈন্য সমাবেশ করেছে।

ইরাক, ইরান, সিরিয়া, আফগানিস্তান এসবই তাদের আধিপত্য বজার রাখার হিসাব নিকাশ। এছাড়া অস্ত্রবাণিজ্য তো আছেই। এসব কারণে তারা বিভিন্ন দেশে তাদের তাঁবেদার সরকারকে ক্ষমতায় বসায়। সদ্য বিদায়ী তাঁবেদার সরকারও সেরকমই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এ আফগান সরকার নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া দীর্ঘদিন আফগানিস্তানে অবস্থানের ফলে আমেরিকান সৈন্যরাও স্থানীয় জনগণ তথা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, তারা নানা মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে।

আমেরিকার বর্তমান অর্থনীতি, অন্য দেশে সৈন্য পাঠিয়ে সেই খরচ বহন করার মতো অবস্থায় নেই। কাজেই আফগানিস্তান থেকে বাইডেনের নির্দেশে মার্কিন সৈন্য চলে যাওয়া হঠাৎ ঘটা কোনো ঘটনা নয়। এটি একটি পরিকল্পিত প্রত্যাবর্তন। বাইডেন প্রশাসন অতীত সরকারের আফগান অভিযান আর দীর্ঘ করতে চাননি। তার প্রয়োজনও নেই।

আমেরিকার আফগান অভিযানের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ার একটি কারণ, সেখানে আজ হোক কাল হোক ইসরায়েলি আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা। কারণ, এরই মধ্যে সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়েছে। কাজেই আফগানিস্তানও এ প্রভাব বলয়ের মধ্যেই থাকবে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের সেখানে সামরিক বিনিয়োগের আর প্রয়োজন নেই।

যুক্তরাষ্ট্র যে সন্ত্রাসের জুজুর কথা বলে আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়েছে, সে ভয় এখন আর তাদের নেই। ৯/১১-এর কারণে তারা আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়েছে- এ কথা বললেও ৯/১১-এর পেছনে আফগানিস্তানের দায় নিয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ দুই-ই আছে। যেমন আছে তাদের ইরাক অভিযান নিয়ে। এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি তালেবানরা সন্ত্রাস ছড়াতে চায়, তবে তাদের প্রথম টার্গেট হবে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ।

আমেরিকা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ায় সেখানে আধিপত্য বিস্তারে তৎপর রয়েছে চীন, পাকিস্তান ও ভারত। পাকিস্তান তো এরই মধ্যেই তালেবানদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছেন, আফগানিস্তানে তারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে তালেবানকে সহায়তা করবে। আগেই বলা হয়েছে, তালেবানরা আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে হিমশিম খাচ্ছে।

এ অবস্থায় পাকিস্তান সেনাপ্রধানের এ মন্তব্য আফগানিস্তানে পাকিস্তানপন্থি একটি তালেবান সরকার গঠনের ইঙ্গিতবহন করে। পাকিস্তান সেনাপ্রধান এ কথা স্বয়ং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবকে জানিয়েছেন। এ মুহূর্তে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তান সফরেই আছেন। এ সময়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তান সফরের প্রধান এজেন্ডা বোঝাই যাচ্ছে যে আফগানিস্তান প্রসঙ্গ।

শুধু পাকিস্তান সেনাপ্রধানই নন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফাইজ হামিদও এ মুহূর্তে আফগানিস্তানেই রয়েছেন। আফগানিস্তান প্রশ্নে পাকিস্তান সরকার তথা সামরিক বাহিনীর কর্তাব্যক্তিদের দৌড়ঝাঁপ থেকে এটি পরিষ্কার যে আফগানিস্তানকে তারা (পাকিস্তান) ভারতের হাতে ছেড়ে দেবে না। আফগানিস্তানে একটি পাকিস্তানসমর্থিত সরকার গঠন করতে পাকিস্তান সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে সদ্যবিদায়ী আফগান সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের যে সম্পর্ক ছিল, তা বর্তমান তালেবানের সঙ্গে নেই। কারণ, ভারত যুক্তরাষ্ট্রসমর্থিত বিদায়ী আফগান সরকারেরই সমর্থক ছিল। ভারত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থক হিসেবে সেখানকার উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু পাশাপাশি তারা বর্তমান তালেবানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক গড়তে পারেনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছাড়াই শুধু যে ভারতীয়দের সেখান থেকে চলে যেতে হয়েছে বা হচ্ছে তাই নয়, আগামীতে তালেবান ভারতকে তাদের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে রাখবে কি না সেটিও অনিশ্চিত।

কারণ, আফগানিস্তানে ভারত ও পাকিস্তান দুই উপ-পরাশক্তিই তাদের আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে। ভারত শুধু উন্নয়ন অংশীদার থেকে রাজনৈতিক অংশীদার হতে পারবে কি না, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। পাকিস্তান ও চীন সেটি হতে দেবে কি না, সে প্রশ্ন তো রয়েছেই। তবে ভারত-আফগানিস্তান মৈত্রীর একটা ঐতিহাসিক দিক রয়েছে। ভারত ভাগের পর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হলে ভারত আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। যদিও সেটি যতটা না আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্য, তার চেয়ে বেশি পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতার জন্য। বৈরিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব বা অভিন্ন শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব কখনও স্থায়ী রূপ পায় না।

আগের তালেবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো ছিল না। কিন্তু পরে কারজাই সরকার ভারতের সঙ্গে মৈত্রী প্রতিষ্ঠার নীতিতে ফিরে যান। কাজেই আফগানিস্তানের নতুন তালেবান সরকার ভারতকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তার ওপরই নির্ভর করে আগামী দিনের আফগান-ভারত সম্পর্ক। বর্তমান তালেবানরা কি ভারতের সঙ্গে পুরানো শত্রুতা জিইয়ে রাখবে, না নতুন বন্ধুত্ব সৃষ্টি করবে, তা নির্ভর করে পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে বর্তমান তালেবানের সম্পর্কের ওপর।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ভারতের জন্য আফগানিস্তানের ওপর ভারতীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভারতে বিশেষ করে কাশ্মীরে তালেবান হস্তক্ষপে ঠেকানো। তালেবানদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত হলে অন্যান্য ভূখণ্ডে তারা যে নজর রাখবে না, সে কথা বলা যায় না। ধর্মীয় ভাবাদর্শ কাজে লাগিয়ে এ কাজটি তালেবানের জন্য কঠিন কিছু নয়।

বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়, যখন দেখি তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর বলেছিল, অন্য কোনো দেশে তাদের কোনো এজেন্ডা নেই। কিন্তু মাত্র কুড়ি দিনের মাথায় এসে তারা বলেছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরে বসবাসরত মুসলিমদের ব্যাপারে তালেবানরা আওয়াজ তুলবে। গত ৪ সেপ্টেম্বর তালেবানেরই মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বিবিসিকে এ কথা বলেছেন। তবে তিনি জানান, কোনো দেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র তৎপরতা চালানোর নীতি তালেবানের নেই। তবে, সরকার গঠনের আগেই তালেবান এ কথা বলছে, ক্ষমতা পাকাপোক্ত হলে তালেবানের এই নরম সুর না-ও থাকতে পারে। সশস্ত্র সংগ্রামরত কাশ্মীরেই তার প্রভাব পড়তে পারে সবার আগে।

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো না হলে ভারতেরই ক্ষতি হবে। যুক্তরাষ্ট্র যেমন তার বিপুল পরিমাণ সামরিক বিনিয়োগ আফগানিস্তানে ফেলে রেখে চলে গেছে, ভারতকেও তার বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রেখেই আফগানিস্তান ত্যাগ করতে হবে।

আফগানিস্তানের ওপর ভারতের আধিপত্য যাতে না থাকে, সেজন্যে তালেবানের ওপর রয়েছে দ্বিমুখী চাপ। পাকিস্তানের প্রসঙ্গ তো আগেই বলা হয়েছে। এদিকে চীন থেকেও রয়েছে চাপ। তালেবান সরকারের মদদে ভারতকে হটিয়ে দেশটিতে চীন তার অর্থনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে একচেটিয়াই এ অঞ্চলে চীনের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়ে যায়। পাকিস্তান আর চীনের পুরানো বন্ধুত্ব তো আছেই।

যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছাড়াই এ অঞ্চলে আমেরিকান খবরদারির দিন শেষ হবে বলেই চীন মনে করে। এরই মধ্যে আমেরিকার খবরদারির দিন যে এশিয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে শেষ হয়েছে, তা তো পরিষ্কারই। আমেরিকার স্থানীয় বন্ধু হিসেবে ভারতকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এখানে একটা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার। কিন্তু মোদি তার অভ্যন্তরীণ চাপ সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। তার ওপর আমেরিকার আফগানিস্তান ত্যাগ ও আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তান ও চীনের বন্ধুত্বে ভারত এখানে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতের দ্বিতীয় বন্ধু ইসরাইল। বিশ্ব কূটনীতি ও রাজনীতিতে ‘ইসরাইল’ একটা ফ্যাক্টর হলেও রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল এশিয়ায় এখনও কূটনৈতিক সমরে সরাসরি অবতীর্ণ হয়নি, যেমনটা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। আমেরিকার স্থলাভিষিক্ত শক্তি হিসেবে ইসরাইল ভারতের পক্ষে কতটা লড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এমনকি দক্ষিণ এশিয়া বা এ অঞ্চলে ইসরাইল এখনই কারো জন্য (ভারতের জন্য) প্রকাশ্য বিরোধিতায় জড়াবে বলে মনে হয় না।

কারণ, রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল এখনই কাউকে হারিয়ে কাউকে পেতে চাইবে না। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য তার সবাইকেই তার দরকার। কাজেই আফগানিস্তান তথা এ অঞ্চল থেকে আমেরিকার চলে যাওয়াতে চীনের ক্ষমতা বেড়েছে। আর তালেবানরা তো বলেই দিয়েছে যে পাকিস্তান তাদের দ্বিতীয় হোম। কাজেই চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান নামে নতুন কোনো মিত্রশক্তির আবির্ভাব হলে ভারত হয়তো কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তবে, তা নির্ভর করে তালেবান কতটা শক্তিশালী হবে ও দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কতটা শক্তভাবে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র কাবুল ত্যাগ করলেও আফগানিস্তান থেকে বাণিজ্য গুটিয়ে নেয়নি। ভারত-চীন তথা এখানকার বিভিন্ন উপদলগুলোর মধ্যে যদি ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়, তবে তাতে আমেরিকার লাভ বৈ ক্ষতি কিছু নেই। আফগানিস্তানে যদি কোনো সিভিল ওয়্যার হয়, তবে তাতে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লাভ।

বিষয়টি স্পষ্ট হয় মার্কিন সেনাদের সর্বোচ্চ পদধারী জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলির মন্তব্য থেকে। গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি এমন ইঙ্গিতই দেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। আমেরিকার আফগানিস্তান ত্যাগ মানে এই নয় যে, এখানকার বিভিন্ন দল-উপদল-গোষ্ঠীর সঙ্গে আমেরিকা যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বরং তারা এক দলকে আরেক দলের বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছে।

আগের ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধের হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছেন, কিন্তু বিশ্বের কোথাও যুদ্ধ বাধাতে পারেনি। মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা এজন্য নাখোশ।

বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করেছে, কারণ খরচ টানা সম্ভব হচ্ছে না। যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করলেও যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। সৈন্য প্রত্যাহার করে খরচ কমানো হয়েছে মাত্র। গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে যদি একজনকে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেয়া যায়, তবে আর পয়সা খরচ করে সম্মুখসমর কেন? উল্টো সেখানে অস্ত্রের দোকান খুলে ব্যবসাও করা যায়। বাইডেন সে পথেই হাঁটছেন।

মনে রাখতে হবে, ট্রাম্পকে অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতে দেননি। মধ্যপ্রাচ্যের পর মার্কিন সমরাস্ত্রের সম্ভাব্য বড় বাজার এশিয়া। আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে শত্রুদের কাছে যে অস্ত্র বিক্রি করেছেন, নিজেদের খরচের সঙ্গে তার তুলনা করলে লাভ-লোকসান সমান সমান। হাতে আর কিছু নেই। বরং বলা যায়, খরচের পাল্লাই ভারী-সময় ও এতগুলো জীবন! বাইডেন এ বাজার ছাড়বেন কেন?

লেখক: আইনজীবী ও কলাম লেখক।

এ বিভাগের আরো খবর