বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নৌকার প্রচারে অর্ধশতাধিক মাইক্রোবাস ও ৫০০ বাইক

  •    
  • ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২৩:০৫

বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মাইকিং করা যাবে বলে উল্লেখ আছে। শুধু তাই নয়, রাত আটটার পর কোনো প্রার্থী গণসংযোগও চালাতে পারবেন না। কিন্তু পৌর এলাকার অনেক স্থানেই দেখা যাচ্ছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ করছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া প্রচারে মোটরসাইকেল ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও তাও মানছেন না অনেকে।

নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার প্রচার চালাতে শনিবার বিজয়নগর উপজেলা থেকে অর্ধশতাধিক মাইক্রোবাস ও ৫০০ মোটারসাইকেল নিয়ে নেতা-কর্মীরা ঢোকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায়।

কেউ কেউ ছোট পিকআপ ভ্যানে করে নৌকা প্রতীকের মিছিল নিয়ে শহরে আসেন। জোরে জোরে মোটরসাইকেলে হর্ন বাজিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দাবড়ে বেড়ান পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। আচরণবিধির ২০-এ অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো প্রকার প্রচার চালাতে পারবেন না। এ বিধিও মানছেন না প্রার্থীরা।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রায় প্রত্যেক প্রার্থীই মসজিদেরর ভেতরে প্রচার চালান। ভোটারদের সঙ্গে কোলাকুলিসহ তাদের কাছে ভোট চান।

তা ছাড়া বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মাইকিং করা যাবে বলে উল্লেখ আছে। শুধু তাই নয়, রাত আটটার পর কোনো প্রার্থী গণসংযোগও চালাতে পারবেন না। কিন্তু পৌর এলাকার অনেক স্থানেই দেখা যাচ্ছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ করছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া প্রচারে মোটরসাইকেল ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও তাও মানছেন না অনেকে।

এ পৌরসভায় মেয়র পদে মোট ছয় জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের নায়ার করিব, বিএনপির জহিরুল হক খোকন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুল কারীম, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মাহমুদুল হক ভূঁইয়া ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নজরুল ইসলাম।

প্রথম ধাপ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও চতুর্থ ধাপে আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে দুটিতেই মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

তবে ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর নির্বাচনে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র নায়ার কবির।

উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শেখ এমরান শনিবার বলেন, ‘বিজয়নগর থেকে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করতে এসেছি। উপজেলা অধিকাংশ নেতা-কর্মী আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সকলেই পৌর এলাকার ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চেয়েছেন নৌকা প্রার্থীর পক্ষে। তা ছাড়া উপজেলা থেকে প্রায় ৩০০ মোটরসাইকেল মিছিল করতে করতে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।’

তাদের এই কার্যকলাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্মিলিত সংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিজয়নগর থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যেভাবে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল নিয়ে নেতা-কর্মীরা এসেছেন, তাতে শহরের ভেতর ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া মোটরসাইকেলে বিকট শব্দে হর্ন বাজিয়ে মিছিল করা হয়। এতে এলাকাবাসীর কান ঝালাপালা হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা কার্যক্রম দেখেও প্রশাসন নীরব।’ অন্যদিকে দলের চেয়ে এখানে ব্যক্তি, আঞ্চলিকতা ও গোষ্ঠীভিত্তিক বিভাজন জয়-পরাজয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন। মাহমুদুল হক ভূঁইয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকমিটির সদস্য ছিলেন। তবে কিছু দিন আগে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তবে তিনি একাধিকবার মেয়র পদে দাঁড়ানোয় এবং করোনাকালে মানবসেবামূলক নানা কার্যক্রমের সুবাদে অনেকের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি ভোটারের সঙ্গে তার বেশ সম্পৃক্ততা রয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়ার কবির বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আমার কোনো সমস্যা হবে না। নৌকার বিরোধিতা করায় জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে (মাহমুদুল হক ভূঁইয়া) অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের কেউই তার সঙ্গে নেই। আমি নিজের বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

এ বিষয়ে মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু সুকৌশলে আমাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে দলমত-নির্বিশেষে পৌরবাসী আমাকে এখন ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’

ভোটারদের অনেকে বলছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে অনেকটা চাপে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়ার কবির। আর আওয়ামী লীগের এই ভোট-ভাগবাঁটোয়ারার কল্যাণে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।

ধানের শীষের প্রার্থী মো. জহিরুল হক খোকন বলেন, ‘যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতেই পৌরবাসী মেয়র নির্বাচন করবেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আমার অনেকটা সুবিধা হয়েছে, বিষয়টা তেমন নয়। পৌরবাসীর কল্যাণে যোগ্যতা ও দক্ষতার দিক বিবেচনা করে পৌরবাসী আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি মনে করি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটরা জরিমানা করছেন। তা ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে আমরা তা গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিব।’

তিনি আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৫০৪ জন।

এখানে মেয়র পদে ছয় জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিভাগের আরো খবর