বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৫৫ পৌরসভায় ভোট, সিইসির আশা পূরণ হবে কি?

  •    
  • ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২৩:৩৪

চতুর্থ দফার পৌর ভোটের আগে দুটি এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের ‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে’ না যাওয়ার হুমকি নিয়ে আছে উত্তাপ, উৎকণ্ঠা। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা আশা করছেন ভোট হবে শান্তিপূর্ণ।

বসন্তের প্রথম দিন ৫৫ পৌরসভায় আবার ভোটের দামামা।

এর আগেও তিন দফায় ভোট হয়েছে প্রায় দেড়শ এলাকায়।

প্রথম দুই দফায় পরিবেশ ছিল বেশ শান্তিপূর্ণ। বিতর্কও ছিল কম। তবে তৃতীয় দফায় যেমন ভালো ভোট দেখা গেছে, তেমনি অস্বাভাবিক ব্যবধান, ভোটারদের বাধা দেয়া, সহিংসতাও দেখা গেছে।

তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে তৃণমূলের এই ভোটে কেন্দ্রে ভোটার ফেরা নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে।

তিন ধাপে বিএনপির ৩০ জনের মতো প্রার্থী যেমন কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন, তেমনি ভোটের পরিবেশে সন্তোষের কথাও বলেছেন অন্তত পাঁচ জন। যদিও তাদের কেউ জিততে পারেননি।

তৃতীয় দফা ভোটের আগে দুটি এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের ‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে’ না যাওয়ার হুমকি নিয়ে আছে উত্তাপ, উৎকণ্ঠা। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা আশা করছেন ভোট হবে শান্তিপূর্ণ।

যে দুটি এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পক্ষ থেকে এই ধরনের বক্তব্য এসেছে, সেখানে নির্বাচনি কর্মকর্তারা দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। হুমকিদাতাকে আটক বা তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে বরাবরের মতোই বিএনপি বলছে, ভোট সুষ্ঠু হবে না। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আগের মতোই বলেছেন, তারা ভোটে প্রভাব বিস্তার করবেন না।

বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘এরপর থেকে যেসব নির্বাচন হবে সেগুলো ভালো হবে, সুষ্ঠু হবে, রক্তপাত হবে না। আমরা তো ভালোবাসার দিনেই ভোটের আয়োজন করেছি!’

দুই পৌরসভায় ভোটারদের হুমকি নিয়ে আলোচনা

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভায় শ্রমিক লীগের এক কর্মিসভায় আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের ভোটের আগের রাতে ভোটারদের বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কর্মীদের বলেছেন, যারা নৌকায় ভোট দেবে না তাদেরকে কেন্দ্রে না যেতে বলতে।

এই পরামর্শের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। এরপর ওই নেতা বলেছেন, ভিডিও বানোয়াট।

পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান কাদিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব কি না, এই প্রশ্নে রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন বলেন, ‘কোথাও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন অবনতি বা তার আশঙ্কা নেই।’

হুমকিদাতা আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এই নির্বাচনি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তো পথের মানুষ ধরে এনে ব্যবস্থা নিতে পারবো না। ওই ব্যক্তি যে প্রার্থীর পক্ষ্যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমি সেই প্রার্থীকে ডেকে এনে থ্রেট দিয়েছি। যদি কোনো অঘটন ঘটে, তবে তার দায় নিতে হবে বলেও তাকে বলেছি।’

কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিকের আরও একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তিনিও দেলোয়ারের মতোই কথা বলেছেন।

ক্রিক বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগের হয়ে।

ইভিএমে ভোট দেয়া শেখাতে বেশ কিছু পৌরসভায় মক ভোটিং করেছে নির্বাচন কমিশন। ছবি: নিউজবাংলা

ভিডিওতে দেখা যায়, মাহমুদা বলেন, যারা নৌকায় ভোট দেবেন না, তারা যেন শনিবার ঠাকুরগাঁও ছেড়ে চলে যান। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন শুধু নৌকার সমর্থকরা। অন্যদের তিনি কেন্দ্রে দেখতে চান না।

এই ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী শরিফুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জিলহাজ উদ্দীনের কাছে। কিন্তু তিনি হুমকিদাতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি।

এর কারণ জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে এই নির্বাচনি কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা হুমকি ধামকি দিয়েছিলেন তারা এখন পৌরসভার বাইরে আছেন। তারা পৌর এলাকায় ঢুকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর‌্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা নেই।’

এবার ভোট ৫৫ পৌরসভায়

গত ৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন চতুর্থ ধাপে দেশের ৫৬ পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল। পরে সোনাইমুড়ী ও ত্রিশাল পৌরসভা এতে অন্তর্ভুক্ত হয়।

আর নাটোর ও মাদারিপুরের কালকিনি পৌরসভার নির্বাচন উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হওয়ায় এবং জয়পুরহাটের কালাইয়ের ওপর থেকে আদালতের স্থগীতাদেশ উঠে যাওয়ায় এ দফায় সব মিলে ভোট হতে যাচ্ছে ৫৭ পৌরসভায়।

তবে ফেনীর পরশুরাম পৌরসভায় সব পদেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। আর মাদারীপুরের শিবচরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো প্রার্থী নেই।

ফলে মেয়র পদে ভোট হবে কেবল ৫৫টি পৌরসভায়। আর শিবচরে ভোট হবে কেবল কাউন্সিলর পদে।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব ও মুখপত্র এসএম আসাদুজ্জামান শুক্রবার নিউজবাংলাকে জানান, এসব পৌরসভায় মেয়র পদে ২২৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২০৯৯ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৬৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।

মোট ভোটার ১৭ লাখ ৬২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৬ জন ও নারী ৮ লাখ ৫১ হাজার ২২৭ জন।

এসব পৌরসভার মধ্যে ৩১টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হবে; বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে।

আগের দুই বারের মতো এবারও ব্যালটপেপার কেন্দ্রে যাবে ভোটের দিন ভোরে।

ভোটের মাঠের দায়িত্বে থাকছেন ৫০১ জন নির্বাহী ও ৫৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। পুলিশের ১৬৭টি মোবাইল ও ৫৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং র‌্যাবের ১৬৭টি টিম মোতায়েন রয়েছে।

প্রত্যেক পৌরসভায় গড়ে দুই প্লাটুন বিজিবি ও উপকূলীয় এলাকায় প্রতি পৌরসভায় এক প্লাটুন কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি পৌরসভায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে অতিরিক্ত র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় গত ২৮ ডিসেম্বর এবং গত ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি পৌরসভায় ভোট হয়। সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে ৬৩টি পৌরসভার ভোট হয়।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপের ৩১ পৌরসভায় ভোট হবে। বাকিগুলোর ভোট হতে পারে আগামী ৭ এপ্রিল।

যেসব পৌরসভায় ভোট

রংপুর বিভাগে ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও এবং রানীশংকৈল।

রাজশাহী বিভাগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, রাজশাহীর নওহাটা, গোদাগাড়ী, তানোর ও তাহেরপুর, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও নাটোর, লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও কালাই।

ঢাকা বিভাগে নরসিংদীর ও মাধবদী, রাজবাড়ীর ও গোয়ালন্দ, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, হোসেনপুর ও করিমগঞ্জ, টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও কালিহাতী, মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, ফরিদপুরের নগরকান্দা।

বরিশাল বিভাগে বরিশালের মুলাদী ও বানারীপাড়া, পটুয়াখালীর কলাপাড়া।

ময়মনসিংহ বিভাগে শেরপুর ও শ্রীবরদী, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহের ফুলপুর ও ত্রিশাল, জামালপুরের মেলান্দহ।

চট্টগ্রাম বিভাগে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, বান্দরবান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, পটিয়া ও চন্দনাইশ, কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি, চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ, ব্রাহ্মণাড়িয়ার আখাউড়া, লক্ষ্মীপুরের রামগতি,, নোয়াখালীর চাটখিল ও ফেনীর সোনাইমুড়ী।

খুলনা বিভাগে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও আলমডাঙ্গা, যশোরের চৌগাছা ও বাঘারপাড়া পৌরসভা।

সিলেট বিভাগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভা।

এ বিভাগের আরো খবর