জামায়াতের ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত শিবগঞ্জ। তবে দলটির কোনো প্রার্থী নেই ভোটের মাঠে। তারপরও সেখানে আলোচনায় রয়েছে দলটি। আলোচনার কারণ, দলটি যাকে সমর্থন দেবে, জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তাদেরই বেশি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন ১৪ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনে মেয়র পদে তিন প্রার্থী ভোটের মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, বিএনপির ওজিউল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির আফজাল হোসেন।
পৌরসভায় জামায়াতের অন্তত ৬-৭ হাজারের মতো ভোট রয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী হারলেও ভোট পেয়েছিলেন ৬ হাজার ১২৭। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে ১০ হাজার ৩১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান মেয়র কারিবুল হক রাজিন।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে হতে যাওয়া শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ভোটাররা কার পক্ষে রায় দেবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয় নির্ধারণে প্রধান প্রভাবক হবে জামায়াত। দুই দলই জামায়াতের ভোট নিজেদের পক্ষে আসবে বলে আশাবাদী।
বিএনপির প্রার্থী ওজিউল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াত আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ, জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপি ও জামায়াত একসঙ্গেই আছে। শিবগঞ্জেও আমরা একসঙ্গেই পথ চলি।’
বিএনপি প্রার্থী অনেকটা জোর দিয়েই বলেন, ‘জামায়াতের ভোটেই আমি পাস করব, আর আমার দলের নেতা-কর্মীদের ভোট তো আছেই।’
শিবগঞ্জে নির্বাচনি প্রচারে বিএনপির প্রার্থী
অন্য দিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলছেন, “‘আমরা এক শিবগঞ্জ’' স্লোগান নিয়ে ভোটের মাঠে আছি। সৈয়দ পরিবারের প্রতি মানুষের আস্থা আছে, নৌকার পক্ষেই সবাই ভোট দেবেন, ভালোবাসার দিবসে শিবগঞ্জবাসীর ভালোবাসায় জয় হবে নৌকার।'
শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের মাঠ ঘুরে জামায়াতের তৎপরতা দেখা যায়নি। উপজেলা জামায়াতের একাধিক নেতা ও কর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যেহেতু দলের প্রার্থী নেই, তাই তাদের তেমন কোনো তৎপরতা নেয়।
তবে নির্বাচনে থাকা কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য কিছু নেতা-কর্মী কাজ করছেন বলে জানান তারা।
ভোটের দিন জামায়াতের ভোটাররা ভোট দিতে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক নেতা বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, অনেকেই যাবেন, পৌরসভার ভোটে সাধারণত প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কগুলো সামনে আসে। যদি কাউন্সিলরের ভোট দিতে যান, তখন তারা মেয়র প্রার্থীর ভোট খালি তো আর রাখবেন না।
ভোটের মাঠে জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে জানতে কথা হয় উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ইউনুস আলীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভোট করারই দল, যেহেতু এখন ভোটের কোনো পরিবেশ নেই, তাই আমরা ভোটের মাঠেও নেই।
‘আমরা যেহেতু ২০ দলীয় জোটে আছি, সেহেতু জোটের প্রতি আমাদের একটা কমিটমেন্ট আছে। তবে ভোটের ময়দানে মূলত আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমাদের যারা দলীয় ভোটার তাদের কাছেও দলীয় কোনো নির্দেশিকা বা গাইডলাইন নেই।’
শিবগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার ৩২ হাজার ৯৭৯, এর মধ্যে নারী ভোটার ১৬ হাজার ৪৩২ ও পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৫৪৭।