চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে সিলেটের কানাইঘাটে মেয়র পদে লড়ছেন ছয় জন। এর মধ্যে তিন জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ভোটার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, দলের তিন জনের মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে দুই জনের মধ্যে। অন্য জনও কিছু ভোট পাবেন। সেটি হলে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা কমবে অনেকখানি।
সিলেটে এখন পর্যন্ত ভোট হয়েছে দুটি পৌরসভায়। দুটিতেই জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। গোলাপগঞ্জে আমিনুল ইসলাম রাবেল ও জকিগঞ্জে আব্দুল আহাদ মেয়র নির্বাচিত হন। ক্ষমতাসীন দলের এই দুই নেতাই দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
কানাইঘাটেও আওয়ামী লীগের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছেন দলের বিদ্রোহী নিজাম উদ্দিন। নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা নিজাম কানাইঘাটের বর্তমান মেয়রও।
এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের উপজেলা সভাপতি লুৎফুর রহমান।
ভোটাররা জানান, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে নৌকা প্রতীকের লুৎফুর রহমান ও নারিকেল গাছ প্রতীকের নিজাম উদ্দিনের মধ্যে।
তাদের ভাষ্যে, বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিনের নিজস্ব ভোটব্যাংক রয়েছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে লুৎফুর এগিয়ে যাবেন। না হলে নৌকাকে জেতানো কষ্ট হবে।
গত নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মেয়র হয়েছিলেন নিজাম। তিনি বলেন, ‘দল আমাকে আগেরবারও মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করেছে। মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি এলাকার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আশা করছি এবারও তারা আমাকে ভোট দেবেন।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী লুৎফুর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একই দলের মেয়র নির্বাচিত হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরও বেগবান হবে। জনগণ এটি গত পাঁচ বছরে উপলব্ধি করতে পেরেছে।
উন্নয়নের কারণে মানুষ আওয়ামী লীগের ওপর সন্তুষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি, ভোটের মাধ্যমে তারা এর প্রমাণ দেবেন।’
মেয়র পদের আরেক প্রার্থী সুহেল আহমদ। দলীয় কোনো পদে না থাকলেও তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র এ প্রার্থীও দলের কিছু ভোট পাবেন।
সব মিলিয়ে এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়ের হিসাব-নিকাশ বেশ জটিল।
এ পৌরসভার বিএনপির প্রার্থী দলের পৌর সভাপতি শরিফুল হক। মেয়র পদে এবারই প্রথম প্রার্থী হয়েছেন তিনি। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শরিফুলও।
তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে ধানের শীষ প্রতীককেই ভোট দেবে। কারণ তারা আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়।’
এ ছাড়া হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা নজির আহমদ ও মোবাইল ফোন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাওছার আহমদ মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে কাওছার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
সিলেটের সীমান্তবর্তী এ পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলের প্রার্থীরাই।