বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাইক ছাড়া ভোটের প্রচার

  •    
  • ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২২:২২

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন, ‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহার করছেন না। এ জন্য আমরা সব প্রার্থীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।’

নির্বাচন মানেই প্রচার আর মাইকিংয়ে সরগরম হাটবাজার। মাইকের উচ্চ শব্দে অনেক সময় সাধারণ মানুষ বিরক্ত হন। অসুবিধায় পড়েন শারীরিকভাবে অসুস্থরা।

বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারে মাইক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রার্থীরা। একে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

প্রচারে শব্দ দূষণের বিষয়টি বিবেচনা করে ২৮ জানুয়ারি চুনারুঘাট উপজেলায় প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনি আচরণবিধি সম্পর্কিত সভা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিৎ দাশের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান।

সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের কাছে দাবি রাখা হয়- শব্দ দূষণ রোধে নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহার না করার জন্য। এ সময় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সব প্রার্থীই প্রশাসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রচারে মাইক ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দেন।

ওই প্রতিশ্রুতির পর এখন পর্যন্ত চুনারুঘাটে নির্বাচনি প্রচারে কোনো মাইক বাজতে দেখা বা শোনা যায়নি।

চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচন হবে। নির্বাচনে তিন জন মেয়র প্রার্থীসহ ৫৫ প্রার্থী রয়েছেন।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম রুবেল, বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল বাছির।

নির্বাচনে মোট ভোটার ১৪ হাজার ৪০২। ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে ৪৬টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে।

৫৫ জন প্রার্থী মাইক ব্যবহার করলে নির্বাচনি এলাকায় প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৫৫টি মাইকে উচ্চ শব্দে প্রচার চালানো হতো। ৮.১ বর্গকিলোমিটার পৌর এলাকায় এতোগুলো মাইক বাজলে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠত। এ ক্ষেত্রে মাইকবিহীন প্রচার অন্য সব নির্বাচনের জন্য অনুকরণীয় বলে মনে করছেন ভোটাররা।

চুনারুঘাট মধ্য বাজার এলাকার ব্যবসায়ী তুরাব আলী বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক নির্বাচন দেখছি। নির্বাচন আইলে ভালা লাগে। তবে মাইকের জ্বালায় অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এই বছর মাইক না বাজার কারণে নির্বাচনের পরিবেশটা বালা লাগছে। আমরা চাই নির্বাচনে মাইক বাজানো যেন সরকার একেবারেই নিষিদ্ধ কইরালায়।’

বাল্লা সড়কের ব্যবসায়ী আহমেদ শফী বলেন, ‘নির্বাচনে মাইক একটা যন্ত্রণাদায়ক বিষয়। একটা মাইক যাওয়ার আগেই আরেকটা চলে আসে। অনেক সময় একসঙ্গে তিনটা-চাইট্টা মাইক বাজে। মাইকের শব্দে বালাভাবে ব্যবসা করা যায় না। তবে এই বছর প্রার্থীরা মাইক না বাজানোর কারণে আমার মনে হয় সবার জন্যই বালা হইছে।’

৩নং ওয়ার্ডের কলেজছাত্র রাজন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের মাইকিংয়ে বিভিন্ন সময় অশ্লীল কিছু শব্দের গান ব্যবহার করা হয়। যেগুলো শিশুরা শোনার পর শিখে ফেলে। এছাড়া শব্দ দূষণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা তো আছেই। সেই ক্ষেত্রে এ বছর চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে মাইক না বাজানোয় প্রার্থীরা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইফুল আলম রুবেল বলেন, ‘প্রশাসন মাইক না বাজানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে। আমরাও সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের কথায় একমত পোষণ করেছি যে নির্বাচনে মাইক বাজাব না।’

বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু বলেন, ‘নির্বাচনে মাইক বাজানোর কী প্রয়োজন? মাইক বাজালে সাধারণ মানুষের অনেক সমস্যা হয়। জেলা প্রশাসক এবং ইউএনও আমাদের বলেছেন মাইক না বাজানোর জন্য। আমরা ওনাদের কথায় মাইক বাজানো বন্ধ রেখেছি।’

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন, ‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহার করছেন না। এ জন্য আমরা সব প্রার্থীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।’

এ বিভাগের আরো খবর