আগামি ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজবাড়ী পৌরসভার নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেবে পৌরবাসী। এই পদ্ধতিতে ভোট দেয়া নিয়ে প্রার্থী-ভোটারদের উদ্বেগ যেমন, তেমন আছে কৌতুহলও।
প্রার্থীরা বলছেন, ভোটারদের ভোটদান পদ্ধতি হাতে কলমে শেখানো দরকার। তা নাহলে কিছু ভোটারের ভোট পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নাও যেতে পারে।
নির্বাচন কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করে বলছেন, উদ্বেগের কিছু নেই। এ বিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে শিগগিরই।
পৌরসভার সবাই এতদিন ব্যালটে ভোট দিয়েছে। ইভিএম পদ্ধতি তাদের কাছে নতুন। এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে তারা বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে বয়ষ্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা একটু বেশিই হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারুক উদ্দিন জানান, পৌরসভার ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কৌতুহল রয়েছে। ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারদের অসুবিধা হতে পারে। আর এমন হলে পোলিং এজেন্টরা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার ফয়েজুল হক বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আমার কোনো ধারণা নাই। ইভিএম নিয়ে আগে থেকেই প্রচার দরকার। মানুষকে বোঝানো দরকার।’
রাজবাড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর নির্মল চক্রবর্তী শেখর বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আমি ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে ইভিএমের বিষয়টিই বোঝে না। এই ভোটদান পদ্ধতি নিয়ে সরকার আগে থেকে প্রচার করলে ভালো হতো। তবে যতটুকু বুঝেছি নির্বাচন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই।
‘ভোটারদের সচেতন করার কাজে নিজেই নেমে পড়েছি। প্রচার ও গণসংযোগের পাশাপাশি মানুষকে ইভিএমে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছি। দুই একদিনের মধ্যে ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হয় তা কাগজে এঁকে শেখাবো। এ ছাড়া ভোটাররা যাতে সঠিক জায়গায় ভোট দিতে পারে এজন্য কলেজপড়ুয়া ছাত্রদের কয়েকটি ব্যাচ করে বাড়ি বাড়ি পাঠানোর কথাও ভাবছি।’
রাজবাড়ী পৌরসভার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন সাহা জানান, ইভিএম নিয়ে প্রচার খুব শিগগিরই শুরু হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতিটি কেন্দ্রে মক ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ভোটাররা গিয়ে হাতে-কলমে ভোট দেওয়া শিখে আসবে।
রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের জানানোর জন্য মাইকিং শুরু হবে দুই একদিনের মধ্যে। এ ছাড়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ভোটদান পদ্ধতি দেখানো হবে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে হাটবাজারসহ জনবহুল জায়গাগুলো বেছে নেওয়া হবে।
১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ী পৌরসভা নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ২০ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন চার জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৯ এবং সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন।