দলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী রুহেল আহমদ।
গত ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে এই পৌরসভায় ভোট হয়। ফল ঘোষণার চার দিনের মাথায় বুধবার সাংবাদিকদের কাছে পরাজয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেন নৌকার প্রার্থী।
রুহেল আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের অসহযোগিতায় নৌকার পরাজয় হয়েছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নৌকাকে গোলাপগঞ্জে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এর পেছনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতা ‘
রুহেল আহমদ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এবার পৌরসভা নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। তবে নির্বাচনে চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ হয়ে জামানত হারান রুহেল।গোলাপাগঞ্জের মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রাবেল। রাবেলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকারিয়া আহমদ পাপলুও ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।এই দুই বিদ্রোহী প্রার্থী সম্পর্কে রুহেল আহমদ বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন। শুধু মনোনয়ন না পাওয়ায় নৌকার বিপক্ষে, নেত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন।‘নির্বাচনী কাজে জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই-চারজন নেতাকে পেয়েছি। আর কিছু নেতা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা বিশাল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন নৌকাকে আটকানোর জন্য; যা সবাই এখন জানে।’রুহেল আহমদ অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচনের আগে রাতে হঠাৎ করে আমার (ফুলবাড়ি) এলাকায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করেছে পুলিশ। এতে অনেকেই ভোট দিতে আসেনি। নৌকার ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় হয়রানির শিকার হয়েছেন কর্মীরা। তারপরও আমি প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করিনি। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি আমার এলাকায় নির্বাচনের আগের রাতে কাদের ইশারায় প্রশাসন এমন করল।রুহেল বলেন, ‘নির্বাচন ভুল ছিল বলে এখন অনেকে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। আমি প্রার্থী নতুন হতে পারি, কর্মী নতুন নয়। দুই যুগের বেশি ক্যারিয়ার আছে আমার রাজনীতিতে। নৌকার পরাজয়ের পর অনেকেই মায়াকান্না করছেন। কিন্তু নির্বাচনের সময় তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা যদি সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর কর্মী হতেন তাহলে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করতেন।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের অসহযোগিতা যেমন ছিল, তেমনি নানা গুজব, অপপ্রচার অপরাজনীতি ও ব্যাপক টাকা ছড়াছড়িই নির্বাচনে নৌকার পরাজয়ের কারণ। এসব বিষয় কেন্দ্র জানতে চেয়েছে। শিগগিরিই নির্বাচন ও দলীয় কার্যক্রমের ব্যাপারে লিখিত জানানো হবে।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিান খান বলেন, হেরে যাওয়ার পর অনেকেই অনেক অভিযোগ করেন। তবে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়া পরাজয়ের পেছনে নিজেদের সীমাবদ্ধতাও খতিয়ে দেখতে হবে প্রার্থীদের।