বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিশোরগঞ্জ এগিয়ে থাকা নৌকার নাকি ধানের শীষের বাজিমাত

  •    
  • ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:০২

গত ১৬ জানুয়ারি পৌরসভায় গোলযোগের কারণে একটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়। বাকি ২৭ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৪৮৪ ভোটে এগিয়ে। শনিবার সেই স্থগিত কেন্দ্রে ভোট হবে। নৌকা নিয়ে লড়া পারভেজ মিয়া আশা করছেন, এই কেন্দ্রে জিতে যাবেন তিনিই। তবে ধানের শীষের ইসরাইল মিঞা বলছেন, এটি তার কেন্দ্র। ব্যবধান ঘুঁচিয়ে ফেলবেন তিনি।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র নির্বাচন নিয়ে দুই সপ্তাহের টান টান উত্তেজনার অবসান হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় দফা পৌর নির্বাচনে স্থগিত কেন্দ্রের ভোট শেষেই জানা যাবে, এগিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নাকি নিজের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বিএনপি বাজিমাত করবে।

শনিবার তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভার সঙ্গে গত ১৬ জানুয়ারি কিশোরঞ্জের সেই স্থগিত কেন্দ্রে ভোটে হবে।

দুই সপ্তাহ আগে কিশোরগঞ্জে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হলেও শহরের নিউটাউন এলাকায় ওয়ালীনেওয়াজ খান কলেজের ২০ নম্বর কেন্দ্রে দুই দল ভোটারের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতিতে স্থগিত হয় ভোট।

শহরের মোট ২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে এই কেন্দ্রটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পারভেজ মিয়া ৪৮৪ ভোটে এগিয়ে।

তার পরেও বিএনপি স্বপ্ন দেখছে এ কারণে যে, স্থগিত কেন্দ্রটিতে অতীতে নানা নির্বাচনে বিএনপি বেশি ভোটে জিতেছে।

ওই কলেজে কেন্দ্র ছিল মোট দুটি। সেখানে এর মধ্যে যেটিতে ভোট হয়েছে, সেটিতে বিএনপি বেশি পেয়েছে ২১৪ ভোট। তারা স্বপ্ন দেখছে, স্থগিত কেন্দ্রে আরও বেশি ভোটার আসবে এবং তারাই জিতবে।

তবে আওয়ামী লীগ বলছে, যে ব্যবধান রয়েছে, সেটা ঘুঁচাতে পারবে না বিএনপি। জিতবে তারাই।

এই কেন্দ্রটিতে নতুন করে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর পর আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সমর্থকরা আগের চেয়ে বেশি একনিষ্ঠ হয়ে প্রচার চালিয়েছেন। তারা প্রত্যেক ভোটারের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী পারভেজ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ১৬ জানুয়ারি নৌকা মার্কার বিজয় সুনিশ্চিত বুঝতে পেরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মারামারি শুরু করে দেয়। এ কারণে আমার প্রতি জনগণের সহানুভূতি আরও বেড়েছে। এখন যে ব্যবধান, তার চেয়ে বেশি ভোটে জিতব।’

বিএনপির প্রার্থী ইসরাইল মিয়া ১৬ জানুয়ারির ভোট নিয়ে কোনো অভিযোগ না করলেও এবার নানা অভিযোগ তুলছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। আমার নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশ গিয়ে বার বার তল্লাশি চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার নেতাকর্মীদেরকে হুমকি, ধমকি। পাশাপাশি চাকরির প্রলোভন ও টাকায় ভোট কেনার চেষ্টা করছে।’

রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ নাই। আমি আল্লাহর কাছে অভিযোগ দিয়েছি।’

জয় যে কারও হতে পারে

২৭টি কেন্দ্রে নৌকা নিয়ে পারভেজ মিয়া পেয়েছেন ২০ হাজার ৯২২ ভোট। আর ধানের শীষ নিয়ে ইসরাইল মিঞা পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৩৮ ভোট।

দুই পক্ষে ভোটের যে ব্যবধান, তা যে এক কেন্দ্রে ঘোঁচানো সম্ভব, সেটি এই নির্বাচনেও দেখা গেছে। শহরে একাধিক কেন্দ্র আছে, যেখানে ধানের শীষের তুলনায় নৌকা বা নৌকার তুলনায় ধানের শীষে এর চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে।

২৭ নং জেলা স্মরণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ৩৩৬। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৯৯০ ভোট, বিএনপি পেয়েছে ৩৩২ ভোট। ব্যবধান ৬৫৮।

২৫ নং কিশোরগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে এক হাজার ২৫৩ ভোট। ধানের শীষ পেয়েছে ৬১৭ ভোট। ব্যবধান ৬৩৬।

৩ নং আদর্শ সরকারি শিশু বিদ্যালয়ে শোলাকিয়া-১ (পুরুষ) কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে এক হাজার ৪৪ ভোট। ধানের শীষ পেয়েছে ৪৫৪ ভোট। ভোটের ব্যবধান ৫৯০।

৪ নং এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শোলাকিয়া-১ (মহিলা) কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে ৯৮৯। ধানের শীষ পেয়েছে ৪১০ ভোট। ব্যবধান ৫৭৯ ভোট।

এমন আরও বেশ কিছু কেন্দ্র আছে, যেখানে নৌকার তুলনায় ধানের শীষ ৪৮৫ ভোট বেশি পেয়েছে।

১৬ নং সতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট দুই হাজার ৫৩২ ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৫০৭ ভোট, ধানের শীষে পড়েছে ১১৭৩। ব্যবধান ৬৬৬।

১৭ নং পৌর কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে মোট দুই হাজার ৭৪৭ ভোটারের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৫০৯ ভোট, আর ধানের শীষ পেয়েছে ১১৩৮। ভোটের ব্যবধান ৬২৯।

১৮ নং তারাপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৭৬০ ভোটারের মধ্যে নৌকা পেয়েছে ২৯৬ ভোট, আর ধানের শীষ ৯২৮ ভোট। ব্যবধান ৬৩২।

১২ নং সরকারি গুরুদয়াল কলেজে নৌকা পেয়েছে ৪৭২ ভোট। আর ধানের শীষে পড়েছে ৯৭০ ভোট। ব্যবধান ৪৯৮।

যে কেন্দ্রটিতে ভোট স্থগিত, সেটি বিএনপি অধ্যুষিত হিসেবেই পরিচিত। তার পরেও তিনটি কারণে বিএনপির জন্য এই ব্যবধান ঘোঁচানো কঠিন।

প্রথমত, ৪৮৪ ভোটের বেশি ব্যবধান ছিল যেসব কেন্দ্রে সেগুলোতে ভোটারের সংখ্যা স্থগিত কেন্দ্রের চেয়ে বেশি।

দ্বিতীয়ত, সামগ্রিকভাবে যে পরিমাণ ভোট পড়েছে, স্থগিত কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি হতে হবে আরও বেশি।

তৃতীয়ত, স্থগিত কেন্দ্রের পাশের কেন্দ্রে যে ব্যবধানে ধানের শীষ জিতেছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ ব্যবধান হতে হবে।

শহরের নিউটাউন এলাকায় ওয়ালীনেওয়াজ খান কলেজে এবার কেন্দ্র ছিল দুটি। একটি ২০ নম্বর এবং একটি ১৯ নম্বর।

২০ নম্বর কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হলেও ১৯ নম্বর কেন্দ্রে ভোট হয়েছে।

এই কেন্দ্রে এক হাজার ৮৬২ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৯৬৯ জন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ৩৭৮ ভোট, আর ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছে ৫৯১ ভোট। বিএনপি বেশি পেয়েছে ২১৪ ভোট।

এই কেন্দ্রে ভোট দানের হার ৫২ শতাংশ। আর সামগ্রিকভাবে ভোটের হার ৬২ শতাংশ।

স্থগিত কেন্দ্রে যদি ৫২ শতাংশ ভোট পড়ে তাহলে তাহলে ভোট পড়বে ৯৬৪টি। এর মধ্যে ধানের শীষে পড়তে হবে ৭২৫টি। আর নৌকায় পড়তে হবে ২৩৯ ভোট। নৌকায় তখন ২৪০টি ভোট পড়লে ফলাফল হবে সমান সমান। আর নৌকায় ২৪১টি পড়লে এক ভোটে জিতবে আওয়ামী লীগ।

আবার যদি ৬২ শতাংশ ভোট পড়ে, তাহলে সেখানে মোট ভোট হবে এক হাজার ১৮৪টি। তখন যদি নৌকায় ৩৩৪ ভোট পায়, তাহলেই আওয়ামী লীগের জয় হবে। এই পরিমাণ ভোট হলে বিএনপিকে পেতে হবে ৮১৭ ভোট। আর নৌকায় পড়তে হবে ৩৩১ ভোট।

এ বিভাগের আরো খবর