সহিংসতা, হামলা ও পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে বরগুনার দুটি পৌরসভার প্রচার শেষে যখন ভোটের অপেক্ষা, তখনও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থামছে না।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ এনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের অভিযোগ, টাকা দিয়ে ভোট কিনে জয়ের চেষ্টা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
বরগুনা পৌরসভার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে লড়া শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেলে তার কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে পাঁচ কর্মীকে আহত ও মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে।
সদর পৌর এলাকায় পুরো প্রচারের সময় ধরেই ঘটেছে বিছিন্ন সব সংঘর্ষ।
২৪ জানুয়ারি প্রচারের সময় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর স্ত্রীর উপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ২৬ জানুয়ারি চরকলোনী আশ্রয়ন এলাকায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকের সঙ্গে সংঘর্ষে সাত জন আহত হন।
পাথরঘাটায় গত মঙ্গলবার প্রচারের সময় হামলার শিকার হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল। পাল্টা হামলার আট জন পুলিশসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হন।
সেদিন ছাড়াও প্রচারের সময়ে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষে নৌকা ও স্বতন্ত্র সমর্থকদের অন্তত ১০ জন আহত হন।
বরগুনা পৌরসভার আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাদাত হোসেন গত ১০ বছরে পৌরসভাকে ঘিরে সীমাহীন দুর্নীতি আশ্রয় নিয়ে প্রচুর কালো টাকার মালিক হয়েছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত বুঝে তিনি এখন দিশেহারা হয়ে লোকজনকে দিয়ে রাতের আঁধারে ভোট কিনছেন।’
শাহাদাত হোসেন বলছেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নৌকার প্রার্থী মহারাজের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আমিসহ আমার পরিবারকে প্রাণহানীর হুমকি দিয়ে আসছেন।’
পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী। বিএফডিসি কুক্ষিগত করে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে কোটিপতি হয়েছেন। এসব কালো টাকার গরমে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে নিবার্চনে অংশ নিয়েছেন।’
পাল্টা অভিযোগ মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের। তিনি বলেন, ‘পুলিশের সামনেই হত্যা করতে নৌকার সমর্থকরা আমার উপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে যখম করেছে। ভোটের দিনও এরা প্রভাব বিস্তার করে ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে ভোট ডাকাতি করবে।’
বিএনপির প্রার্থীরা অবশ্য এসব অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন না।
বরগুনা পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবদুল হালিম বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমরা চাই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে।’
পাথরঘাটায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাহাবুদ্দিন সাকু বলেন, ‘এ পৌরসভায় আমাদের অনেক সমর্থক রয়েছে। আমি মনে করি একটি অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নিবার্চনের মধ্য দিয়ে জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিলে এই পৌরসভায় ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।’