বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্রোহীতে বিপাকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি

  •    
  • ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০১:০৯

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর বাইরে ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন তিন প্রার্থী। প্রতীকের চাইতে প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজই এখানে বেশি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আট জন। এরমধ্যে তিন জনই আওয়ামী লীগের নেতা। আর দুইজন বিএনপির। ফলে বিদ্রোহীদের নিয়ে বিপাকে রয়েছে প্রধান দুই দলই। আওয়ামী লীগ-বিএনপির এই অনৈক্যের সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া অন্য তিন প্রার্থী।

শনিবার সীমান্তবর্তী এই পৌরসভায় ভোট হবে। বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে প্রচার। এবার ভোট গ্রহণের অপেক্ষা। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল উদ্দিন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আর ধানের শীষে লড়ছেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তাপাদার। ইকবাল আগে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। জকিগঞ্জে আলাদা প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টিও। লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন পৌর জাপার সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমদ ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ। আর বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন হীরা। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইসলামী সংগঠন আল ইসলাহর পৌর সভাপতি হিফজুর রহমান ও সামাজিক সংগঠন সোনার বাংলা সমিতির সভাপতি জাফরুল ইসলাম।

বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ফারুক আহমদ, আব্দুল আহাদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন হীরাকে বহিষ্কার করেছে তাদের দল। তবে বহিষ্কৃত হয়েও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি এই তিনজন। প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে সরব ছিলেন তারা। ফলে বিপাকে পড়তে হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের। দুই বিদ্রোহীর কারণে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। দলীয় প্রার্থীকে টপকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরাই মূল লড়াইয়ে চলে আসতে পারেন বলে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এই দুই প্রার্থীরই রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক।

জকিগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অন্তত ১৫ জন ভোটারের সঙ্গে আলাপ করে এমন আভাস মিলেছে। তাদের মতে, নির্বাচনি লড়াইয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেন আল ইসলাহ সমর্থিত প্রার্থী হিফজুর রহমানও। এছাড়া ইসলামী বিভিন্ন দলের ভোটারদের ভোটও হিফজুর বাক্সে পড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর বাইরে ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন এই তিন প্রার্থী। প্রতীকের চাইতে প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজই এখানে বেশি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ধর্মীয় আবেগও প্রভাব ফেলবে নির্বাচনে।

জকিগঞ্জ পৌরসভার ভোটার রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশপাশি ব্যক্তি ইমেজ, পারাস্পারিক সম্পর্ক, ধর্মীয় অনুভূতি, অতীতের জনপ্রতিনিধি থাকা ব্যক্তিদের কার্যক্রম নানা কিছু বিবেচনা করে ভোটাররা ভোট প্রদান করেন। ফলে কেউই এখন পর্যন্ত স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে নেই। শেষ পর্যন্ত যে কেউ জয়ী হতে পারেন।’

তবে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েও সন্তুষ্ট তারা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী খলিল উদ্দিন বলেন, ‘এই এলাকার ভোটাররা আগেও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমি তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে চেষ্টা করেছি। এবারও তারা শেখ হাসিনা ও নৌকার প্রতি আস্থাশীল।’

বিদ্রোহীরা তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতীক একটি বড় বিষয়।’

অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী ইকবাল আহমদ তাপাদার বলেন, ‘সরকারের বৈষম্যমূলক নানা আচরণ সত্ত্বেও উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে আমি সবসময় জনগণের পাশে থাকতে চেয়েছি। এবারের ভোটেও তারা এর মূল্যায়ন করবেন।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে এখন পর্যন্ত অভিযোগ নেই। তবে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। কারণ ভোটের দিনে প্রশাসন কি আচরণ করে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।’

তবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শাদমান সাকীব। তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন পৌরসভার নয়টি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তার নেতৃত্বে নয়টি মোবাইল টিম, পুলিশের দুটি স্টাইকিং ফোর্স, বিজিবির দুটি স্টাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের একটি স্টাইকিং ফোর্স ও দুটি ভ্রাম্যমাণ স্টাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া দুজন বিচারিক হাকিম মাঠে থাকবেন। কোনভাবেই নির্বাচন নিয়ে বির্তক তৈরির সুযোগ থাকবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি।’

জকিগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ১২ হাজার ৩৩৮ জন। এখানে পুরুষ কাউন্সিলর পদে নয় ওয়ার্ডে ৩৩ জন ও সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডে নয় জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিভাগের আরো খবর