তৃতীয় ধাপে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে নেই মেয়র প্রার্থীদের কোনো প্রচার। সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও নেই কোন উল্লাস। নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় থেমে গেছে নির্বাচনি প্রচার।
রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন আফিসার ফয়জুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ৩১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল। আর কোনো প্রার্থী মেয়র পদে মনোনয়ন দাখিল না করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
তিনি আরও জানান, ৩০ জানুয়ারি মেয়র পদ ছাড়া কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে যথাযথ নিয়মে ভোটগ্রহণ হবে।
কাউন্সিলর পদে ২৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দল আমাকে নমিনেশন দিয়েছে এ জন্য আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্ত করতে ও টুঙ্গিপাড়াবাসীর উন্নয়নে আমি কাজ করে যাব।’
অন্য কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা উন্মুক্ত নির্বাচন। যে কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সেই অধিকার সব পৌরবাসীর রয়েছে। কিন্তু কেন আর কেউ নমিনেশন জমা দেননি সেটা আমার অজানা।’
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ ৩৬ জন প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাউন্সিলর প্রার্থীদের নেই তেমন কোন ব্যস্ততা। পাড়া মহল্লায় নেই নির্বাচনি আমেজ। চায়ের দোকানে নেই নির্বাচনের আড্ডা। এলাকায় এলাকায় নেই রঙ-বেরঙের পোস্টার ব্যানার। তবে কিছু মাইক ভ্যানে করে বিভিন্ন প্রার্থীর নাম ও মার্কা নিয়ে তৈরি গানের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট আহ্বান করছেন।
টুঙ্গিপাড়ার তরুণ ভোটার সজল সরকার বলেন, ‘এবার আমরা নতুন ভোটার। কিন্তু পৌর মেয়র নির্বাচনে আমাদের ভোট কোন কাজেই আসবে না। আমরা আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছি না এটা ভেবেই কষ্ট পাচ্ছি।’
আরেক ভোটার ইমরান শেখ বলেন, ‘মেয়র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে তাই তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কাউন্সিলরদের কাছে আমাদের চাওয়া নিজ নিজ ওয়ার্ডের উন্নয়নে যেন সবাই সচেষ্ট ভূমিকা রাখেন।’
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী দীপ্ত দাস বলেন, ‘আগামীতে যদি সিলেকশন পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় সেটাও আমরা সাদরে মেনে নেব। কারণ প্রধানমন্ত্রীর থেকে ভালো হয়তো আর কেউ চিন্তা করবেন না টুঙ্গিপাড়াকে নিয়ে।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাসির শেখ বলেন, ‘আমি ও আমার সর্মথকরা আপাতত মেয়র পদ নিয়ে ভাবছি না। আমি কীভাবে জয়ী হয়ে এলাকাবাসীর সেবা করতে পারি সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
৭, ৮ ও ৯নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী নাবিলা আক্তার জানান, এবার ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আছে। এবার মেয়র নির্বাচন না হলেও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভায় মোট ভোটার নয় হাজার ৩৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার চার হাজার ৯০৯ জন ও নারী ভোটার চার হাজার ৪৮৪ জন।