বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাথরঘাটায় ব্যাপক সহিংসতা, প্রার্থীকে কোপাল দুর্বৃত্তরা

  •    
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:৫৮

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বিকালে তার সমর্থকদের নিয়ে পাথরঘাটা শহরের পুরান বাজার এলাকায় গেলে কয়েকজন আচমকা তার ওপর হামলা করে। তারা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায় তাকে। পরে শুরু হয় সংঘর্ষ। মারামারি থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ।

পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় বরগুনার পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রতিবাদে পাল্টা হামলার চেষ্টা করলে পৌর এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিউজবাংলাকে জানান, বিকেল চারটার দিকে বিদ্রোহী প্রার্থী তিন শতাধিক সমর্থক নিয়ে শহরের তালতলা এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে মোস্তাফিজুর প্রচারপত্র বিতরণ করতে থাকেন। এ সময় কয়েক জন পুলিশ সদস্যও তার সঙ্গে ছিলেন।

পুরান বাজার এলাকায় মোস্তাফিজুর ও তার সমর্থকদের ওপর আচমকা হামলা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে বিএফডিসির বাসার দিকে নিয়ে যান সমর্থকরা।এ ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল বের করেন বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা। পাথরঘাটা থানার সামনে পৌঁছাতেই মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় মোস্তাফিজুরের সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকল ছোড়ে। জবাবে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ।

এ অবস্থায় নৌকার প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা ফের লাঠিসোঁটা নিয়ে বিদ্রোহী শিবিরের কর্মীদের ওপর হামলা চালান। ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঘটনাস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দিনসহ পুলিশের আট সদস্য আহত হন। এ ছাড়া আহত হন নারীসহ অর্ধশতাধিক সমর্থক।

পরে নৌকার সমর্থকরা বিএফডিসি এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচার ক্যাম্প ও বাসায় ভাঙচুর চালান। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেয়া হয়।

সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পাঁচ সাংবাদিক, ভাঙচুর করা হয়েছে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ল্যাপটপসহ দোকানের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।

আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহত মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ভাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, ‌‌‌‘দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে গণসংযোগে নামলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। ‘পরে তাকে হাসপতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ফের নৌকা সমর্থকরা হামলা চালায়। এতে আমার ভাই গুরুতর জখম হয়। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের সমর্থকরা আমাদের ঘরবাড়ি, সিসিটিভি ক্যামেরা, মাইক ভাঙচুর করে। কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় ও ভাঙচুর করে।’

পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আকনের সঙ্গে যোগাযোগর চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবির হোসেন বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল এক জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদককারবারি ও চাঁদাবাজ। বিএফডিসি ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের নামে মাছ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। ‘এ ছাড়া এই অঞ্চলের ইয়াবার ও মাদকের মূল ডিলার এই মোস্তাফিজুর। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে লোকজন নিয়ে সে পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ নিজেদের সুরক্ষায় তা প্রতিহত করেছে। এতে সোহেলসহ কয়েক জন আহত হয়েছে।’

পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পাথরঘাটার ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। তিনি আরওবলেন, পাথরঘাটা পৌর এলাকা এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই মুহূর্তে পাথরঘাটার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আর যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, এ জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর