বরগুনা পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক মন্তব্য করেছেন, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিকেল থেকে চেষ্টা করেছিলাম, বুঝিয়েছিলাম। বলেছিলাম এই জনসভায় এসে শাহাদাত তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নৌকার পক্ষে কাজ করুক। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনি।’
সোমবার বরগুনা পৌরসভার নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আসহান মহারাজের সমর্থনে পথসভায় বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নানক বলেন, ‘কামরুল আহসান মহারাজকে ২০১৫ সালে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। আবারও তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার মনোনয়ন কেন দিয়েছেন আপনাদের বুঝতে হবে, কারণ প্রধানমন্ত্রী মহারাজকে মেয়র হিসেবে আপনাদের এখানে দেখতে চান। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মহারাজকে নির্বাচিত করলে রেমন্ড নয়, বরগুনা হবে ডায়মন্ড বরগুনা।’
তিনি বলেন, ‘আমি সকালে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে বরগুনা যাওয়ার কথা বলি, তখন তিনি আমাকে বলেন, তোমরা যাও, ওটা আমার বরগুনা, তোমরা গিয়ে মহারাজকে ভোট দেয়ার জন্য অনুরোধ করো।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমি শাহাদাত হোসেনের বেয়াইকে ডেকে বলেছি, শাহাদাতকে বুঝিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করান, এখনও সময় আছে, শাহাদাতের বোধোদয় হোক। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করুন।’ পরে তিনি সমবেত জনতাকে নিয়ে নৌকার স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
সোমবার বিকেলে বরগুনা শহরের সিদ্দীক স্মৃতি মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীরের সভাপতিত্বে এ পথসভা হয়।
এতে এছাড়া বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম ও বরিশাল বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন।
বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের সমালোচনা করে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, একই ব্যক্তি যিনি সেবক হওয়ার ওয়াদা করেন, রক্ষক হওয়ার ওয়াদা করেন রক্ষক না হয়ে ভক্ষক হন। বরগুনার মানুষ অন্তত তাকে ভোট দিতে পারেন না। দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে আজ বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই বিশাল জনসমাবেশ এটাই প্রমাণ করে ৩০ জানুয়ারি বরগুনায় নৌকা মার্কা বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে। আপনারা প্রমাণ করে দেবেন, বরগুনায় কোনো অখ্যাত দুর্নীতিবাজের স্থান নেই।
শাহাদাত হোসেনের সমালোচনা করে আফজাল হোসেনও বক্তব্য দেন। তিনি নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বলেন, ‘আপনারা উন্নয়নের স্বার্থে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করুন, উন্নয়নের দ্বায়িত্ব আমাদের।’
এর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ বক্তব্য দেন। তিনি ৩০ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
পথসভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ হাওলাদারসহ যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৫ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।