আসন্ন তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভোট ৩০ জানুয়ারি। ভোটের পাঁচ দিন আগে প্রার্থীদের প্রচার এখন তুঙ্গে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তারা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
পৌরবাসীর আশা, নির্বাচিতরা পানি, ভাঙাচোরা রাস্তা, যানজটসহ দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধান করবেন।
উলিপুর পৌরসভার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, যে প্রার্থীই নির্বাচিত হোক, তিনি যেন দীর্ঘদিনের সমস্যা যানজট ও ড্রেনেজ সমস্যার সমাধান করেন।
শিল্পী রাণী বলেন, দেশে যেভাবে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে, এর বাইরে নয় উলিপুর পৌরসভা। তাই তাদের আশা, যিনি মেয়র হবেন তিনি যেন সন্ত্রাস, মাদক ও বাল্যবিয়ে মুক্ত একটি পৌরসভা গঠন করেন।
শিমুল রায় জানান, দেশে বর্তমানে শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেকারত্বও বাড়ছে। উলিপুরেও রয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব। আগামীতে যিনি মেয়র হবেন, তিনি কারিগরি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবেন বলে তার প্রত্যাশা।
এ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুন সরকার মিঠু, বিএনপির হায়দার আলী মিঞা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আতাউর রহমান।
নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে পোস্টার, লিফলেটে ছেঁয়ে গেছে পুরো পৌরসভা। সকাল-বিকাল চলছে মাইকিং। নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্র্রার্থীদের পাশাপাশি ভোটারের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন নিজ নিজ দলের জেলা ও স্থানীয় নেতারা।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে জানানো হলেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা।
বিএনপির প্রার্থী হায়দার আলী মিঞা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলাসহ নানা ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। এতে তার সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফলে নির্বাচনি মাঠে কাজ করতে পারছে না তারা।
একবার মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের অভিজ্ঞতার কারণে আমি বুঝতে পারি, নাগরিকদের সমস্যা চিহ্নিত করে কীভাবে সমাধান করতে হয়। আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, রাস্তা সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থা করব।’
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে নিরঙ্কুশ ভোটে মেয়র নির্বাচিত হবেন বলেও আশা তার।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলী জানান, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে কুড়িগ্রামে আগের ধাপে দুই পৌরসভায় নির্বাচনের উদাহরণ দেন তিনি।
উলিপুরে সব দলের প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মামুন সরকার মিঠু জানান, তিনি নির্বাচিত হলে পৌরবাসী যেন সরকারের উন্নয়নের সব সুযোগ-সুবিধা পায় তার ব্যবস্থা করবেন। উলিপুরকে একটি আধুনিক মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করবেন।
অভিযোগ থাকলেও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম রাকিব জানান, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভোটারদের নির্বিঘ্ন ভোট দেয়া নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উলিপুর পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯১৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ৫৩৯ জন ও নারী ভোটার ১৯ হাজার ৩৭৬ জন। ভোটকেন্দ্র ১৮টি।
এ বছর এ পৌরসভায় মেয়র পদে তিন প্রার্থী ছাড়াও কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।