ছাত্রদলের মনোনয়নে বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদে নাট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন অভিনেতা মীর সাব্বির। সেই সাব্বির এবার বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারের মাঠে নামায় সমালোচনা করেছে বিএনপি।
রোববার থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজের পক্ষে প্রচারে নামেন মীর সাব্বির। ভোটের মাঠে নৌকার পক্ষে নামার পর থেকেই এলাকায় চলছে সমালোচনা। অনেকেই তার অতীত রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিএনপি নেতাদের দাবি, মীর সাব্বির ছাত্রদলের মনোনীত প্রার্থী হয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদে নাট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।
সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন হাসান শাহীন লেখেন, তুমিও নিজেকে ধরে রাখতে পারলে না সাব্বির? কৈশোর আর যৌবনের শুরুতে তুমি ছিলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আলোকিত মুখ। আমাদের হাত ধরেই ছাত্র রাজনীতির দুর্গমপথে তোমার অভিযাত্রা ছিল অপ্রতিরোধ্য! ছাত্রদল মনোনীত বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের ‘নাট্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক’ পদে তুমি নির্বাচিত হয়েছিলে বিপুল ভোটে।
তিনি লেখেন, এই তো সেদিনও আমার সাথে তুমি ছিলে মিছিল মিটিংয়ের অগ্রভাগে! শিল্পী হিসেবে জীবন শুরু হওয়ায় রাজনীতি থেকে বিদায় নিলে এবং এটাই স্বাভাবিক ছিল। কারণ একজন শিল্পীর কোনো দল নেই, জাত নেই। আমরা এমন সাব্বিরকেই দেখতে চেয়েছিলাম! কিন্ত দুর্ভাগ্য সেই জায়গা থেকে আমরা তোমায় হারিয়ে ফেললাম আজ! তবুও স্নেহ ভালোবাসা সবসময়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য রাজিবুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘মীর সাব্বির সাবেক ছাত্রদল নেতা। বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল থেকে ‘নাট্য ও সাংস্কৃতিক’ বিষয়ক সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল। ঐতিহ্যবাহী মীর পরিবারের ৯০ শতাংশ লোক জাতীয়তাবাদী আদর্শ ধারণ করে। তিনি যেভাবে গতকাল থেকে বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন ও জনসভা করছেন, তাতে শুধু অবাক না বিস্মিত হয়েছি। অভিনেতা সে শুধু অভিনেতাই।’
জেলা যুবদলের দফতর সম্পাদক হুমায়ূন কবীর সাব্বিরের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমি হতবাক ও বিস্মিত। একজন মীর সাব্বির। সাবেক ছাত্রদল নেতা। তিনি এখন নৌকার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন, জনসভা করছেন। আজ আবার প্রমাণ করলেন, এসব চাটুকারদের সকলকে চিনে রাখা উচিত। সময়ের পরিবর্তনে যেন আবার চলে আসে।’
এ বিষয়ে মীর সাব্বির বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে প্রচার চালিয়েছি। তখন কেউ কোনো সমালোচনা করেনি। এখন স্থানীয়ভাবে যখন নৌকার প্রার্থীর জন্য ভোট চাইছি তখন কেন সবাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা সহজেই বোধগম্য। তারা আসলে নিজেদের পরাজয় দেখতে পেয়েছেন, যা মেনে নিতে পারছেন না। এজন্যই পুরনো ছেলেমানুষি ঘটনাকে টেনে আলোচনায় আনতে চাইছেন।’
এসব নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন এই অভিনেতা।