বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসার দরকার নেই’

  •    
  • ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ ২২:১৭

‘আমরা মেয়রে দাঁড়াছি, মেয়র নিব। কথা একটাই। এখন কোনো তারেক জিয়া এখানে দাঁড়াল, নাকি খালেদা জিয়া এখানে দাঁড়াল সেটা দেখার বিষয় না।…যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে না, সে ঘরেই থাক; কেন্দ্রে আসার দরকার নেই। ধানের শীষ মার্কা নিয়ে যে কথা বলবে তার উপর গজব হবে।’

বগুড়ার গাবতলী পৌরসভায় নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসতে মানা করেছেন স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। বলেছেন, যেভাবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে, সেভাবেই পৌরসভার মেয়রও নির্বাচিত করা হবে।

এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার হওয়ার পর এই নেতা অবশ্য কথা ঘুরিয়েছেন। বলেছেন, নেতা-কর্মীদের উজ্জ্বীবিত হওয়ার জন্য এসব কথা বলেছেন।

আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে গাবতলীতে এখন চলছে জমজমাট প্রচার। এই এলাকাটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসন। সেখানে আওয়ামী লীগের অবস্থান অনেকটাই দুর্বল। যদিও গত উপজেলা নির্বাচনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির অভিযোগ, রাতে ব্যালটে ভোট দিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে জেতানো হয়েছে।

গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনের দুই ধাপে ভোট হয়েছে মোট ৮৪টি এলাকায়। কয়েক বছর পর কেন্দ্রে দেখা গেছে ভোটারের দীর্ঘ সারি। দুই ধাপের নির্বাচন নিয়ে অভিযোগও কম। মেয়র প্রার্থীরা তেমন অভিযোগ না করলেও বিএনপির কেন্দ্র থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে কারচুপি হচ্ছে আগের মতোই।

শনিবার সন্ধ্যায় গাবতলীর দাঁড়াইল বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোমিনুল হক শিলুর নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজেদুর রহমান সাহীন। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

নির্বাচনী সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমরা মেয়রে দাঁড়াছি, মেয়র নিব। কথা একটাই। এখন কোনো তারেক জিয়া এখানে দাঁড়াল, নাকি খালেদা জিয়া এখানে দাঁড়াল সেটা দেখার বিষয় না।’

আওয়ামী লীগকে ভোট না দিলে ভোটের দিন কেন্দ্রে আসার দরকার নেই বলে জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। বলেন, ‘যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে না, সে ঘরেই থাক; কেন্দ্রে আসার দরকার নেই। ধানের শীষ মার্কা নিয়ে যে কথা বলবে তার উপর গজব হবে।’

নেতা-কর্মীদেরকে ভোটের দিন কী করতে হবে, তার নির্দেশনাও দেন সাহীন। বলেন, ‘আপনারা প্রত্যেকটা ইউনিটের নেতা-কর্মীদের এ্যানে (এনে) সেন্টার ভাগ করে দিবেন। সেখানে একজনকে কমান্ডার ব্যানা (বানিয়ে) দিবেন। সেই কমান্ডারের নেতৃত্ব চলবে, সেখানে। শিলুক (নৌকা প্রতীক) ভোট দিলে সেই লোক আসবে, শিলুক ভোট না দিলে তার আসার দরকার নাই। ঘরের লোক ঘরেতি থ্যাক। কথাটা যেহেতু ঘরের ভিতর, কর্মী, কর্মীদেরকে এই ম্যাসেজ দিলাম।’

তিনি বলেন, ‘এটা করবেন আপনারা? এখন কী মার খাওয়ার সময় আছে? মার খাওয়ার সময় আছে? মার দেয়ার সময় আছে। মার কাক দিবেন? ভ্যানওয়ালাক থাপ্পর মারবেন? মাঠের কি একজন শ্রমিককে থাপ্পর মারবেন? কাউকে থাপ্পর মারার দরকার নাই।’

‘আমরা মারব, ধানের শীষ মার্কা নিয়ে যে কথা বলবে তারই ওপর গজব হবে। কথাটা বুঝাতে পারছি?’-নেতা-কর্মীদের বুঝিয়ে দেন সাজেদুর রহমান সাহীন।

এটা না করতে পারলে গাবতলীতে জেতা যাবে না বলেও মনে করেন সাহীন। তিনি বলেন, ‘এটা যদি করতে পারেন তাহলে মেয়র হবে। না হলে নসীব, এই গাবতলীতে কোনো প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ বা স্বপ্ন নাই।

‘যেমনভাবে আমরা গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করেছি। আমাদেরকে সেই ভূমিকা নিয়েই মেয়রও করতে হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।’

বক্তব্যের বিষয়ে সাজেদুর রহমান সাহীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক মাঠে কর্মীদের উজ্জীবিত করতে আমরা এমন বক্তব্য দিয়ে থাকি। এটা রাজনীতির মাঠে সাধারণ বিষয়।’

এমন বক্তব্যের পর বিএনপির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। অথচ আওয়ামী লীগের নেতারা বলছে, ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে যাওয়া যাবে। তাহলে আগামী ৩০ জানুয়ারি ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠবে।’

গাবতলী পৌর রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রওনক জাহান বলেন, ‘ভিডিও ফুজেট দেখেছি। এই বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তাকে শোকজ করা হবে। ’

এ বিভাগের আরো খবর