নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পরদিনই প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের বাসায় মিষ্টি নিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা।
রোববার বিকেলে কাদের মির্জা নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা মোশাররফ হাসানের বাসায় যান।
এ সময় মির্জা বলেন, ‘আপনারা সহযোগিতা করার কারণেই আমি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। এ জয় শুধু আমার না, আপনাদেরও।’
অপরাজনীতি, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক রুখতে এবং পৌরসভা পরিচালনায় দুই প্রার্থীর কাছে সহযোগিতাও চান তিনি। পরে এ নিয়ে শিগগির বসার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা মোশাররফ হাসানের বাসায় কাদের মির্জা। ছবি: নিউজবাংলা
দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল বসুরহাট নিয়ে। প্রচার চলাকালে মির্জা সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে আন্দোলনে নেমে দেশজুড়ে মনোযোগের কেন্দ্রে আসেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনগুলোতে সাধারণত বিরোধীদলের প্রার্থীরা ভোট নিয়ে সংশয়ের কথা বলে থাকেন, হুঁশিয়ারি দিয়ে থাকেন। তবে এই এলাকায় এই সতর্কতা দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী কাদের মির্জা। তার অনুসারীরা সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে সড়ক অবরোধ পর্যন্ত করেন।
ওই সময় কাদের মির্জা বলেছিলেন, একটি ভোটও যদি কারচুপি করে নেয়া হয়, তাহলে তিনি মানবেন না। প্রশাসন কারচুপি করলে পা ভেঙে মোড়ে ঝুলিয়ে রাখার কথাও বলেন।
অবশ্য ভোটের দিন তিনি আর কোনো অভিযোগ করেননি। বলেন, তার আর কোনো অভিযোগ নেই।
এই পৌরসভায় নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর প্রতিক্রিয়াও ছিল আগ্রহোদ্দীপক। দুই জনই নির্বাচনের পরিবেশ ও ভোটের প্রশংসা করেন। জানান, তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
নির্বাচনে হারার পরও গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও কোনো প্রার্থী প্রশ্ন তোলেননি।
ভোট গণনায় দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর সম্মিলিত ভোটের চেয়ে নৌকায় ভোট পড়েছে প্রায় সাড়ে তিন গুণ।
নয়টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট পড়েছে ১০ হাজার ৭৩৮টি। বিএনপির ধানের শীষে ভোট পড়েছে এক হাজার ৭৭৮। জামায়াত নেতার মোবাইল ফোনে পড়েছে এক হাজার ৪৫১টি।
বসুরহাটের পৌরসভার ভোটকে নির্বাচনের ‘মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ওবায়দুল কাদের। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন ধরনের নির্বাচনই দেখতে চান।
আর কাদের মির্জা বলছেন, এই নির্বাচন বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে; এমন নজির আর কেউ করতে পারবে না।
বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে যাওয়ার সময় কাদের মির্জার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খান, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি জামাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না, উপজেলা জামায়াত আমির বেলায়েত হোসেন সঙ্গে ছিলেন।