নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় জয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী খুনের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসআই) হাসিবুল আলমকে প্রধান করে এই কমিটি করা হয়েছে বলা জানিয়েছেন রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি টিএম মোজাহিদুল ইসলাম।
রোববার দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল শহিদগঞ্জ পরিদর্শন করে ভাঙ্গাবাড়িতে নিহত তরিকুল ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।
ডিআইজি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবার থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। নির্বাচনি এলাকায় কেন এমন ঘটনা ঘটল তাও তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে আটক করেনি।
শনিবার পৌরসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তরিকুল। তিনি বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ফলাফল ঘোষণার পর পরাজিত উট প্রতীকের প্রার্থী শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।
এক পর্যায় দুই সঙ্গীকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিসের দিকে রওনা দেন তরিকুল। যাওয়ার সময় রাত আটটার দিকে বাহিরগোলা গুড়ের বাজার এলাকায় দুই সঙ্গীর চেয়ে বেশ পিছিয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তার ওপর হামলা হয়।
ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশগুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে দুটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেয়া হয়। পরে সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার মৃত্যুর খবরে স্বজন ও সমর্থকরা ব্যাপরীপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে আগুন দিয়ে দুটি ট্রাক, একটি প্রাইভেট কার ও পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে তিনটি বাড়ি ভাঙচুর করেন।
পরিবার ও সমর্থকদের দাবি, তরিকুলকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ শাহাদাত হোসেন বুদ্দিনের লোকজন।
তরিকুলের ছোট ভাই সোহাগ ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহীদগঞ্জ কেন্দ্রে রেজাল্ট হচ্ছিল না। আমার ভাই রেজাল্ট আনতে সেখানে যায়। কিন্তু তখন আমার ভাইকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। আমার ভাইয়ের অবস্থানের কারণে প্রিসাইডিং অফিসার রেজাল্ট দিতে বাধ্য হন। তাকে এর আগে রেজাল্ট প্রকাশ করতে দিচ্ছিল না বুদ্দিনের লোকজন।’
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আক্তার বলেছেন, ‘আমরা এক জন আহত ও অগ্নিসংযোগের খবরে ঘটনাস্থলে আসি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়া হয়েছে।’
রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে কাটাখালি খালের পূর্বপাশে থাকা তরিকুলের এলাকায় রাতভর বিক্ষোভ চলে। একাধিকবার চেষ্টা করেও সেখানে পুলিশ প্রবেশ করতে পারেনি।
রাতেই পুলিশের তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকা কর্ডন করে রাখে।
পরাজিত প্রার্থী শাহাদৎ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। হামলার বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শাহাদতের ফাঁসি দাবি করে নগরীর ছয় নম্বর ওয়ার্ডে রোববার সকাল থেকে দফায় দফায় মিছিল হচ্ছে। মিছিলে তরিকুল হত্যার বিচার দাবি করে শাহাদাৎসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।