বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আ. লীগ ৪৫, বিএনপি চার, স্বতন্ত্র আট

  •    
  • ১৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০২:৩৮

প্রথম ধাপের মতোই দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনে বড় জয় পেল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চারটি পৌরসভাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ৩৭টিতে তারা জয় পেয়েছে শনিবারের ভোটে। বিএনপি ছয়টি এলাকায় কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছে। আরও তিনটি পৌরসভায় বড় ধরনের অনিয়মের তথ্য মিলেছে।

তৃণমূলে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের মতোই বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ৬০টি পৌরসভার মধ্যে ৪৫টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী।

বিএনপি জিতেছে চারটি পৌরসভায়।

দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করে জিতেছেন আট জন প্রার্থী। এদের ছয় জন আওয়ামী লীগ নেতা। দুই জন বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত।

একটি পৌরসভাতে করে জিতেছে জাতীয় পার্টি ও জাসদ। আর একটিতে ফলাফল স্থগিত হয়ে আছে।

শনিবার সকাল আটকা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট চলে ৬০টি পৌরসভায়। এর মধ্যে ৫৬টিতে ভোট হয় মেয়র পদে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, পাবনার ভাঙ্গুরা, নারায়ণগঞ্জের তারাব ও পিরোজপুর পৌরসভায় একজন করে প্রার্থী থাকায় সেখানে আওয়ামী লীগের চার নেতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

শনিবারের ভোটে ৩৭ টি এলাকায় জিতেছেন নৌকার প্রার্থীরা।

৬০টি পৌরসভার মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএমে ২৮টি আর ব্যালটে ভোট হয়েছে ৩২টিতে। বিতর্ক এড়াতে ৩২টির প্রতিটিতে ব্যালট পাঠানো হয়েছে ভোটের সকালে।

বিএনপির প্রার্থীরা ছয়টি পৌরসভায় কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন। পৌরসভাগুলো হলো রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ, বাগেরহাটের মোংলা, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, পাবনার ঈশ্বরদী, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও মেহেরপুরের গাংনী।

এই ছয়টির বাইরে সিরাজগঞ্জের তিনটি পৌরসভায় ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই নয়টির বাইরে তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

দুটি পৌরসভাতে আবার ভোটের ফলাফলে প্রশংসা করেছেন বিএনপির প্রার্থীরা। সেই দুটিতে অবশ্য তারা গো হারা হেরেছেন।

আবার বিএনপি যে চারটি পৌরসভায় জিতেছে, তার দুটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

ভোট শুরুর আগে থেকেই শীত উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে আসতে থাকেন ভোটাররা। কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকাল চারটায় ভোট শেষ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রগুলোর চিত্র ছিল মোটামুটি একই রকম।

কিশোরগঞ্জ সদরের ওয়ালী নেওয়াজ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে এই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তা।

কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে কুমিল্লার চান্দিনা, ফেনীর দাগনভূঞা, পাবনার ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া সদর ও ঝিনাইদহের শৈলকুপায়।

নির্বাচন কমিশন বলেছে উৎসাহের ভোট হয়েছে। তাদের ধারণা, প্রথম ধাপের মতোই এবারও ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়বে।

নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আতিয়ার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের একটি কেন্দ্র ছাড়া আর কোথাও ভোট বন্ধের খবর আসেনি। ভোটার উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক। মোটামোটি তৃণমূলের এ ভোটকে উৎসবই বলা যায়।’

অবশ্য বিএনপির কেন্দ্র থেকে ভোটকে কারচুপি বলা হয়েছে আগের মতোই। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি, ক্ষমতাসীনরা আমাদের এজেন্টদের সেন্টারে যেতে দেয়নি, অনেক জায়গায় বের করে দিয়েছে। এমনকি বিএনপি সমর্থকদের কেন্দ্রের কাছেও যেতে দিচ্ছে না।

অবশ্য স্থানীয় পর্যায় থেকে বিএনপির ভিন্ন মূল্যায়নও পাওয়া গেছে।

তুমুল আলোচিত বসুরহাটের নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন বিএনপির প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি যেই দুই চারটা কেন্দ্রে গেসি সেখানে সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। কোনো সমস্যা নাই। জয়-বিজয় আল্লাহর হাতে।… ‘অবশ্যই আমি ফলাফল মেনে নেব। এই সুন্দর নির্বাচনের ফলাফল না মানলে আমি কেন রাজনীতি করি?’

একই রকম মূল্যায়ন করেছেন কুষ্টিয়া পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী বশিরুল আলম চাঁদ। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন পর সুষ্ঠু পরিবেশে নিজের ভোট দিতে পারলাম।… ব্যালট সকালে কেন্দ্রে আসায় ভোটারদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে।’

আওয়ামী লীগ জিতেছে যেসব পৌরসভায়

ঢাকা বিভাগে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, ঢাকার সাভার, গাজীপুরের শ্রীপুর, নরসিংদীর মনোহরদী, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, শরীয়তপুরে জয় পেয়েছেন নৌকা মার্কার প্রার্থীরা। নারায়ণগঞ্জের তারাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছিল আগেই।

চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লার চান্দিনা, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের লামা, ফেনীর দাগনভুঞা ও নোয়াখালীর বসুরহাটে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।

সিলেট বিভাগে সুনামগঞ্জ সদর, একই জেলার ছাত, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও কুলাউড়াতেও জয় পেয়েছে নৌকা।

রাজশাহী বিভাগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, নওগাঁর নজিপুর, রাজশাহীর কাঁকনহাট ও ভবানীগঞ্জ নাটোরের নলডাঙ্গা, গোপালপডুর ও গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ, পাবনার ঈশ্বরদী, ফরিদপুর ও সাঁথিয়ায় জয় পেয়েছে নৌকা।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ও পাবনার ভাঙ্গুরায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ।

রংপুর বিভাগে কেবল দিনাজপুরের বিরামপুরে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ।

ময়মনসিংহ বিভাগে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা ও ফুলবাড়িয়া, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ ও কেন্দ্রয়ায় জয় পেয়েছে নৌকা।

বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জয় পায় নৌকা।

খুলনা বিভাগে বাগেরহাটের গাংনী, কুষ্টিয়া, একই জেলার কুমারখালী ও মিরপুর, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, বাগেরহাটের মোংলা ও মাগুরায় জয় পেয়েছে নৌকা।

বিএনপির প্রার্থীরা জিতেছেন দিনাজপুর, বগুড়ার সান্তাহার এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নবীগঞ্জে।

দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়া ছয় জন আওয়ামী লীগ নেতা যেসব এলাকায় জিতেছেন, সেগুলো হলো: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, রাজশাহীর আড়ানী, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এবং টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী।

মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপির যে দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জিতেছেন বগুড়ার শেরপুর ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর।

জাতীয় পার্টি জিতেছে কেবল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে।

জাসদ জিতেছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়।

কিশোরগঞ্জ সদর পৌরসভায় ফলাফল স্থগিত আছে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যত ভোটে এগিয়ে, স্থগিত একটি কেন্দ্রে ভোট তার চেয়ে বেশি। এ কারণে আবার সেখানে ভোট নিতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর