পৌর নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখানো দুই বিএনপির প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে ভোটে। এরা হলেন নোয়াখালীর বসুরহাটের কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও কুষ্টিয়া পৌরসভার বশিরুল আলম চাঁদ ।
এদের মধ্যে বসুরহাটে বিজয়ী আওয়ামী লীগের ছয় ভাগের এক ভাগ ভোট পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। অল্পের জন্য তিনি জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। আর কুষ্টিয়া পৌরসভায় ৫১ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে হেরেছেন ধানের শীষের প্রার্থী।
শনিবার দ্বিতীয় দফা পৌর নির্বাচনে যে ৬০টি এলাকায় ভোট হয়, তার মধ্যে বসুরহাট ও কুষ্টিয়ায় বিএনপির প্রার্থী ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে সন্তোষের কথা জানান। বলেন, যে পরিবেশে ভোট হচ্ছে, তাতে ফলাফল মেনে না নেয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিরোধী দলের প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া বিরল। আর সাম্প্রতিক সময়ে এর আগে কেউ ভোট নিয়ে এভাবে সন্তোষের কথা জানিয়েছেন, এমন কথা শোনা যায় না।
এবারের নির্বাচনে আগে থেকেই তুমুল আলোচিত বসুরহাটে নয়টি কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় আওয়ামী লীগের আবদুল কাদের মির্জা ভোট পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৩৮টি। ধানের শীষ নিয়ে বিএনপির কামাল উদ্দিন ভোট পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৭৭৮টি। তিনি অল্পের জন্য জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন।
নির্বাচনি আইন অনুযায়ী কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ১২.৫ শতাংশ না পেলে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া জামানতের টাকা ফেরত পান না। এই এলাকায় এক হাজার ৪৫৮ ভোটের কম পেলে তিনি সে টাকা ফেরত পেতেন না।
সকালে ভোটের পরিবেশ নিয়ে বিএনপির প্রার্থী উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ভোটের ফলাফল যাই হয়, তিনি মেনে নেবেন।
বিএনপির পরাজিত প্রার্থী সকালে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যেই দুই চারটা কেন্দ্রে গেছি সেখানে সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। কোনো সমস্যা নাই। জয়-বিজয় আল্লাহর হাতে।… অবশ্যই আমি ফলাফল মেনে নেব। এই সুন্দর নির্বাচনের ফলাফল না মানলে আমি কেন রাজনীতি করি?’
কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান আরও বেশি। বসুরহাটে ইভিএমে নির্বাচন হলেও কুষ্টিয়ায় ভোট হয়েছে ব্যালটে।
এখানে নৌকা প্রতীকে গতবারের মেয়র আনোয়ার আলী ভোট পান ৬৬ হাজার ৫২ টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বশিরুল আলম চাঁদের ধানের শীষে ভোট পড়েছে ১৪ হাজার ৬১৩টি।
দুই জনের মধ্যে ব্যবধান ৪১ হাজার ৪৩৯ ভোট।
এখানেও সকালে ভোট দিয়ে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেন, ‘অনেক দিন পর সুষ্ঠু পরিবেশে নিজের ভোট দিতে পারলাম। ব্যালট সকালে কেন্দ্রে আসায় ভোটারদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে।’
এবার যেসব এলাকায় সনাতন পদ্ধতিতে ব্যালটে ভোট নেয়া হয়েছে, সেগুলোতে ব্যালট পাঠানো হয় ভোটের সকালে।