ঢাকার উপকণ্ঠ সাভার পৌরসভায় ভোটারের সংখ্যা কোনো কোনো সংসদীয় আসনের চেয়েও বেশি। স্বভাবতই নজরের কেন্দ্রে যেসব এলাকা থাকে, তার একটি এটি।
শনিবার যে ৬০টি পৌরসভায় ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট সাভারে। ভোটার ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮ জন, কেন্দ্র ৮৪ টি।
মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের আবদুল গণি, বিএনপির রেফাত উল্লাহ এবং ইসলামী আন্দোলনের মোশারফ হোসেন।
গণি ও রেফাত- দুই জনই মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এখানে। এর মধ্যে গত নির্বাচনে জিতেছিলেন গণি।
৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে লড়ছেন নয় জন।
ভোটের প্রচারে এখানে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ফলে বাড়তি কোনো উত্তেজনা নেই।
গত তিন সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক প্রচারে এখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন একনিষ্ঠ। পথসভা, মিছিল, দল বেঁধে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাওয়ার পাশাপাশি পোশাক শ্রমিকদেরকে ঘিরে আলাদা প্রচার চালানো হয়েছে।
এই এলাকায় ভোটারদের একটি বড় অংশই পোশাক শ্রমিক, যারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরির সূত্রে এখানে থাকেন।
সে তুলনায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন কম। শুরুর দিকে কয়েকদিন বিএনপির প্রার্থী ভোটারদের কাছে গেলেও পরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। যদিও কেউ বিএনপিকে বাধা দিয়েছে এমন অভিযোগও করেনি দল। তবে অনলাইনে প্রচারে জোর দিয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী। নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিও দিয়েই তিনি মূলত ভোট চেয়েছেন।
নির্বাচনের পরিস্থিতি আর প্রত্যাশা নিয়ে জানতে নৌকা মার্কার আব্দুল গণির নম্বরে যোগাযোগ করলে কল ধরেন তার ছেলে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ফারুখ হোসেন তুহিন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আব্বু একটু বিশ্রামে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা ভোটারের রায়ের অপেক্ষায় আছি।’
কথা হয়েছে ধানের শীষের প্রার্থী রেফাত উল্লাহর সঙ্গে। তবে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আজকে প্রচার প্রচারণা বন্ধ। তাই আজকে কোনো কমেন্টস করব না।’
ভোট নিয়ে কোনো অভিযোগ আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কোনো কথাই বলব না।’
হাতপাখা মার্কার অপর প্রার্থী মোশারফ হোসেনকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।
রিটার্নিং অফিসার মনির হোসাইন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা ভালো। এখনও আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে।’
কেন্দ্র বেশি বলে সেখানে নিরাপত্তা কর্মী থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা-সবই বেশি।
কোনো কেন্দ্র নিয়ে শঙ্কা আছে কি না, বা কোনো কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে সব কেন্দ্রকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা আজ সকালে নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনের সামগ্রী পৌঁছে গেছে।’
নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে তিন জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন আছে। কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদের ব্যবস্থা নেয়ার সক্ষমতা আছে।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ নিউজবাংলাকে জানান, তারা এক হাজার দুইশ পুলিশ প্রস্তুত রেখেছেন ভোটের দিনের নিরাপত্তায় জন্য।
এই এলাকায় প্রথমবারের মতো ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ স্পষ্ট।